নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কালী প্রতিমার বরাত ভালো পেয়ে খুশি কুমোরটলির মৃৎশিল্পীরা। সোমবার দুপুরে পটুয়াপাড়ার রবীন্দ্র সরণী, বনমালী সরকার স্ট্রিট, কুমোরটুলি স্ট্রিট সহ ওই এলাকার বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে কথা হচ্ছিল। অধিকাংশ শিল্পী বলেন, স্থায়ী কিছু বরাত তো আছেই। কিন্তু এবার তার সঙ্গে দু’একটা বরাত বেশি পেয়ে ভালো লাগছে। আর সেই কারণেই এবার কালীপুজোকে কেন্দ্র করে ব্যস্ততা আগের থেকে একটু বেড়েছে। বনমালী সরকার স্ট্রিটে শিল্পী সুধীরকুমার পালের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তিনি বলেন, মহলয়ার পর থেকে দূর্গা প্রতিমা মণ্ডপে মণ্ডপে যাওয়ার পরই কয়েকটা দিন কুমোরটুলি ঝিম মেরে পড়েছিল। কিন্তু তারপরই কালী প্রতিমার বরাত এসে যাওয়ায় আমরা ফের কাজে নেমে পড়েছি। এখন জোর কদমে চলছে কালীপ্রতিমা তৈরির কাজ। খুব ভোর ভোর শুরু করে দিচ্ছি কাজ। পার্থ পাল, খোকন পাল, মাধব পাল প্রমুখ মৃৎশিল্পীদের ঘরে গিয়ে দেখা গেল, সব জায়গাতেই ব্যস্ততা তুঙ্গে। সেখানে ইতিমধ্যে বেশ কিছু কালী প্রতিমার কাজ অনেকটাই শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রতিমার হাতে ঝুলছে বিভিন্ন পুজো কমিটির বায়না করা স্লিপ। ওইসব শিল্পীদের ঘরে এসে এদিন বেশ কয়েকটি পুজো কমিটির কর্তারা এসে দেখেও যান, প্রতিমার কাজ কতটা এগিয়েছে। একটি কালী প্রতিমার সামনে থাকা মাটির শিয়ালটির সাইজ একটু ছোট হওয়ায় তা নিয়ে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করলেন এক পুজো কমিটির সদস্য। শেষে শিল্পী বলেন, ঠিক আছে, শিয়াল পাল্টে দেওয়া হবে।
এদিন ওই চত্বরে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে সর্বত্র ব্যস্ততা। কোথাও শিল্পীর ঘরে খড় দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে। কোথাও বা সেখানে সেই খড়ের কাঠামোয় পড়ছে মাটির আস্তরণ। কোনও শিল্পীর ঘরে দেদার তৈরি হচ্ছে নরমুণ্ড। কোথাও তৈরি হচ্ছে মা কালী ও শিবের মুখ, শিয়াল, গাঁজার কল্কে, ডাকিনী যোগিনী প্রভৃতি। কয়েকজন শিল্পী বলেন, আমাদের ভয় হচ্ছে, এখন যে গতিতে প্রতিমার কাজ চলছে, তার মধ্যে যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে আমাদের সমস্যায় পড়তে হবে। এদিকে, কুমোরটুলির বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে দেখা যায়, সেখানে কালীপুজো উপলক্ষে শোলার মালা, কাগজের জবার মামলা, খাঁড়া, চাঁদমালা বিক্রির দোকানগুলি ধীরে ধীরে সেজে উঠছে। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এসেছে পটুয়াপাড়া।