কর্মে শুভ। নতুন কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মসূত্রে দূররাজ্য বা বিদেশ গমন হতে পারে। আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান ও ... বিশদ
গঙ্গাসাগর-বকখালি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (জিবিডিএ) সূত্রে জানা গিয়েছে, ভেটিভার ঘাসের বীজ ভারতে পাওয়া যায় না। এটি বিদেশের ঘাস। পাতাগুলি বাঁশ গাছের পাতার মতো। ডাল গুলি সরু হয়। কয়েক বছরের মধ্যে কাশ গাছের মতো লম্বা ও ঘন হয়ে যায়। মাটির ভাঙন আটকাতে এই গাছ খুব কাজে লাগে। এর শিকড় মাটির গভীরে তিন ফুট নীচে চলে গিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে গাছের গোড়া ধরে টান মারলেও তা সহজে উঠে আসে না। বরং এর শিকড় গভীরে গিয়ে চারপাশে ছড়িয়ে মাটিকে শক্ত বাঁধনের মধ্যে বেঁধে রাখে। জিডিবিএর এগজিকিউটিভ অফিসার জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, উপকূলবর্তী এলাকায় মাটির নদী বাঁধ রক্ষার জন্য এর আগে কোথাও বিশেষ প্রযুক্তিতে শোধিত পাটের তন্তু দিয়ে তৈরি জাল ও ভেটিভার ঘাস একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়নি। কারণ, লোনা জলের হাওয়াতে ভেটিভার ঘাস বাঁচে না। এজন্য অনেকবার চেষ্টা হলেও সফল হওয়া যায়নি। গতবছর প্রথম বর্ষার আগে পরীক্ষামূলকভাবে সাগরের মনসাদ্বীপের রামকৃষ্ণ মিশনের একটি জায়গাতে নদী বাঁধের উপর ভেটিভার ঘাস লাগানো হয়। সেখানে পাটের তন্তুর জাল বিছিয়ে দেওয়া হয়। একবছর পর দেখা গেল, জালের আশ্রয়ে গাছগুলি সব বেঁচে গিয়েছে। লোনা আবহাওয়া গাছের কোনও ক্ষতি করতে পারেনি। তন্তুর জাল দেওয়াতে বাইরের জল মাটি পর্যন্ত পৌঁছয়নি। ফলে মাটি ধুয়ে যায়নি। বাঁধ পুরো অক্ষত রয়েছে। এই পরীক্ষা সফল হওয়ায় এবার বড় আকারে কাজ শুরু হয়েছে। চেমাগুড়ির বেণুবনে নদী ঘেষা চার কিলোমিটার মাটির বাঁধে পাটের তন্তুর জাল দিয়ে ভেটিভার ঘাস লাগানো হয়েছিল। এবার বর্ষার পর সেই বাঁধের কোনও ক্ষতি হয়নি। ভেটিভার ঘাস বাঁধ আঁকড়ে ধরে নিয়েছে। এই ঘাস বড় হওয়াতে তা কেটে গবাদি পশুর খাওয়ার কাজে লাগানো হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল, তন্তুর ওই জালটি ধীরে ধীরে মাটির সঙ্গে মিশে সারের কাজ করবে। এখন বেণুবন জেটিঘাট ছাড়াও সেখানকার এক কিলোমিটার রাস্তার ধার ধরে এই ঘাস লাগানো হয়েছে। গাছগুলিও বড় হয়েছে। এর পাশাপাশি তিনটে পুকুরের পারের ভাঙন আটকানোর কাজে একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে। সাগরের বেগুয়াখালিতে বনদেবী টেম্পলের নতুন এক কিলোমিটার মাটির রাস্তার উভয়দিকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। এ নিয়ে সম্প্রতি জিডিবিএ- এর সঙ্গে জেলা প্রশাসনের কথা হয়েছে। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকার মাটির নদী বাঁধে এই প্রক্রিয়া কাজে লাগানোর ব্যাপারে আলোচনা চলছে। ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে এই কাজ হলে টাকার অভাব হবে না।