বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
আগামী ১৬ অক্টোবর নৈহাটি পুরসভার অনাস্থার সভা হবে বারাসত জেলাশাসক দপ্তরে। ঘর ওয়াপসির কারণে এই মুহূর্তে ৩১ আসন বিশিষ্ট নৈহাটি পুরসভায় তৃণমূলের পক্ষে ২৬ জন কাউন্সিলার। পাঁচ জন রয়েছেন বিজেপির। ফলে সংখ্যাগরিষ্ঠ শাসক দল। সূত্রের খবর, অনাস্থার সভায় বিজেপি অংশ না নিতে পারে। সভায় গরহাজির থাকলে শাসক দলেই ফের পুরসভার ক্ষমতায় আসবে।
গাড়ুলিয়া পুরসভার ক্ষেত্রেও একই চিত্র। পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বিধায়ক সুনীল সিং। ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিজেপি ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। সুনীলের দাদা চন্দ্রভান সিংও বিজেপি ছেড়ে পুরনো দলে ফিরেছেন। এই মুহূর্তে তৃণমূলের পক্ষে ১৩ জন, একজন ফরওয়ার্ড ব্লকের ও সাতজন বিজেপি কাউন্সিলার রয়েছেন। অর্থাৎ বিজেপি সংখ্যালঘু। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে তৃণমূল অনাস্থা এনেছে। দ্রুত অনাস্থার সভা হতে পারে। এখানেও অনাস্থার সভাতে বিজেপি অংশ না নিতে পারে। অর্থাৎ এই পুরসভাও বিজেপির হাতছাড়া হতে চলেছে।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর জার্সি বদলের হিড়িক পড়েছিল। বিধায়ক, কাউন্সিলারা দলে দলে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছিলেন। দলবদলের জেরে কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, ভাটপাড়া, নৈহাটি, গাড়ুলিয়া, বনগাঁ পুরসভায় বিজেপি সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়। তবে দলছুটদের ‘মোহভঙ্গ’ হয়েছে। দলছুট কাউন্সিলারদের সিংহভাগ ‘ঘর ওয়াপসি’ করছেন। ইতিমধ্যেই কাঁচরাপাড়া, হালিশহর, বনগাঁয় তৃণমূল পুনরুদ্ধার করেছে। নৈহাটি ও গাড়ুলিয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। বিজেপির হাতে রইল ভাটপাড়া।
তবে ভাটপাড়া পুরসভা চালাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে বিজেপি। সূত্রে জানা গিয়েছে, একাধিক প্রকল্পে রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে না। নিজস্ব তহবিল থেকে পুরসভা চালাতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ছেন বিজেপি নেতারা। লোকসভার পর দলে দলে তৃণমূল কাউন্সিলারদের বিজেপিতে যোগদান, আবার কিছুদিন পরে ফের ঘর ওয়াপসি। কেন? বিজেপির এক জেলা নেতা বলেন, বিজেপি একটি সাংগঠনিক সর্বভারতীয় দল। সংগঠনের পদে থাকা নেতারাই প্রধান। সেই অর্থে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সাংগঠনিক স্তরে তেমন গুরুত্ব থাকে না। দল একটি আদর্শ নিয়ে চলে। আর উল্টোটা তৃণমূলে। ওই দলে কাউন্সিলাররই ওয়ার্ডের হর্তাকর্তা। বিজেপিতে এসে তৃণমূলের কাউন্সিলাররা কোনও পদ পাননি। সাংগঠনিকস্তরেও তেমন গুরুত্ব পাচ্ছিলেন না। যাঁরা ভেবেছিলেন বিজেপিতে এসে ‘লুটেপুটে খাব’, তাঁরা খেতে না পেরে পুরনো দলে ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের জন্য তৃণমূলই উপযুক্ত দল।
বিজেপির বারাকপুরের এমপি অর্জুন সিং বলেন, নৈহাটি পুরসভায় তৃণমূল ফের ক্ষমতায় এসে লুটেপুটে খাবে। ওরা যত লুটেপুটে খাবে, তত আমাদের ভালো। গাড়ুলিয়া পুরসভার ক্ষেত্রে অনাস্থার সভার দিন ঘোষিত হোক, তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে কাউন্সিলাররা স্বেচ্ছায় এসেছিলেন, তাঁরা আবার স্বেচ্ছায় ফিরে গিয়েছেন। কাউকে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয়নি। তৃণমূলের নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক বলেন, সব পুরসভাই আমরা পুনরুদ্ধার করব। ভাটপাড়াতেও আমরা ক্ষমতায় আসব।