বাধা ও অসফলতার জন্য চিন্তা। মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কোনও ভালো যোগাযোগ পেতে পারেন। ... বিশদ
প্রতি বছরই পুজোর সময় কলকাতা পুলিসের গোটা বাহিনীই রাস্তায় নেমে পড়ে। যাতে কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। সেই সঙ্গে অপরাধকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুলিস কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার উপর বাড়তি জোর দিয়েছেন। যাতে শহরবাসীকে রাস্তায় বেরিয়ে নাকাল না হতে হয়। তবে এবারের পুজোয় ট্রাফিক সচল রাখাটা ছিল লালবাজারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। পুজোর মুখেই বন্ধ হয়েছে টালা ব্রিজ। অন্যদিকে এখনও খোলেনি মাঝেরহাট ব্রিজ। জেলা ও উত্তর শহরতলি থেকে আছড়ে পড়া জনস্রোত সামলে নিয়ে রাস্তা কতটা সচল রাখা যাবে, তা নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত ছিলেন কর্তারা। বিশেষত উত্তর কলকাতা নিয়ে চিন্তা ছিল সবচেয়ে বেশি। এখানে একাধিক পুজো রয়েছে। টালা ব্রিজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কলকাতা থেকে উত্তর শহরতলিতে যাওয়ার গাড়ির রুট ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে সংশ্লিষ্ট রাস্তা গুলিতে চাপ বেশি থাকছে। পুজোর জন্য বাড়তি গাড়ি আসবে। তাই ট্রাফিক সচল রাখাই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে প্রতি পুজোতেই দক্ষিণে রাসবিহারী, চেতলা, নিউ আলিপুরের মতো একাধিক রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে রীতিমতো ভোগান্তি পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
সেই কারণে সতর্ক ছিলেন পুলিস কমিশনার অনুজ শর্মা। বাহিনীর কর্তা থেকে শুরু করে রাস্তায় নেমে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছেন। কোথায় খামতি রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেখানে সিপি জোর দেন, আইনশৃঙ্খলা বিভাগ ও ট্রাফিক- দুটোর মধ্যে সমন্বয় রেখে চলতে হবে। তাহলেই তরতরিয়ে চলবে ট্রাফিক। রীতিমতো হোমওয়ার্ক করেই মাঠে নেমেছিল সিপির বাহিনী। তার সুফলও মিলেছে। দক্ষিণ কলকাতার রাসবিহারী বা চেতলায় গাড়ির চাকা গড়িয়েছে বেশ ভালোভাবেই। মাঝেমধ্যে সামান্য যানজট হলেও কিছুক্ষণের মধ্যে তা সামলে নিয়েছেন রাস্তায় কর্তব্যরত পুলিসকর্মীরা। উত্তর কলকাতাতেও গাড়ি চলেছে মসৃণ গতিতে। সেই সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে সামান্যতমও কোনও সমস্যা হয়নি। বাহিনীর সদস্যরা সফলভাবে পুজোর শহর সামলে দেওয়ায় বেজায় খুশি কমিশনার। তিনি সকলের কাজের প্রশংশা করেছেন। সিপির বক্তব্য, রাস্তায় পুলিস সক্রিয় ছিল বলেই বেপরোয়া বাইকচালকদের জব্দ করা গিয়েছে। প্রতিদিন রাতে এক হাজারের বেশি বেপরোয়া বাইকের বিরুদ্ধে কেস করা হয়েছে। যে কারণে বাইক-রাজ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেই সঙ্গে মহিলা সদস্যদের নিয়ে তৈরি মোটরবাইক টিম উইনার্সও প্রশংসা কুড়িয়েছে সিপির। তাঁদের দাপটের জন্য মহিলাদের উপর অপরাধের ঘটনা ঘটেনি। পাশাপাশি গোয়েন্দা বিভাগের কাজের প্রশংসা করেছেন তিনি। তবে বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে সিপির বার্তা, বিসর্জন না মেটা পর্যন্ত গোটা বাহিনীকে এভাবে কাজ চালিয়ে যেতে হবে।