নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সল্টলেকের বৈশাখীতে শপিং মলের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখনও ফরেন্সিক পরীক্ষা হল না। এমনকী দমকলের পক্ষ থেকে পুলিসের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ করা হয়নি। এই অবস্থায় শুক্রবার ঘটনাস্থলে কোনও দমকলকর্মী বা পুলিসকর্মীদের দেখা যায়নি। সেই সুযোগে একের পর এক গাড়ি শপিং মলের বেসমেন্টে প্রবেশ করেছে। যার যা সামগ্রী ওই শপিং মলের বেসমেন্টে ছিল, তা তারা বিনা বাধায় সরিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু, কেন এমনটা হল? ইতিমধ্যে দমকল এবং বিধাননগর কমিশনারেট আধিকারিকরা এবিষয়ে একে অপরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে।
দমকলের ডিজি জগমোহন জানিয়েছেন, তাঁরা শপিং মল কর্তৃপক্ষকে নোটিস পাঠাচ্ছে। সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কী ছিল এবং সঠিক অনুমতি ছিল কি না, সেবিষয়ে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য তলব করা হচ্ছে। সেই বক্তব্য আসলে, তারপরেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু, ঘটনাস্থলের কোনও নিরাপত্তা না থাকায়, সবাই সেখানে ঢুকে পড়ছে। এবিষয়ে প্রশ্ন করা হলে, ডিজি (ফায়ার) বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই বিষয়টি পুলিসকে দেখার জন্য বলা হয়েছিল। নিরাপত্তার বিষয়টি তাঁদের দেখার কথা নয়। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা কী ছিল, তা তাঁরা খতিয়ে দেখবে। ফরেন্সিকও করা হবে। তবে যেহেতু ঘটনাস্থল থেকে প্রায় সমস্ত সামগ্রীই ইতিমধ্যে সরিয়ে ফেলা হয়েছে, তাই সেখানকার ফরেন্সিক পরীক্ষা করে আদৌ কোনও লাভ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। এবিষয়ে বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি (সদর) কুনাল আগরওয়াল বলেন, ঘটনাস্থলের কী হবে এবং ফরেন্সিক করার বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই দমকলকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তারা জানিয়েছিল খতিয়ে দেখে জানাবে। কিন্তু, দমকলের পক্ষ থেকে থানাকে এখনও কোনও কিছু জানানো হয়নি বা অভিযোগও করা হয়নি। এমনকী ঘটনাস্থলের নিরাপত্তা প্রসঙ্গেও দমকলের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে, শপিং মলের এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থা না থাকাও, শুক্রবারও তা চালু হয়নি। শপিং মল ম্যানেজার সানি সিং বলেন, দমকল বা পুলিসের থেকে তাঁকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। কবে বিল্ডিংয়ের ফরেন্সিক হবে, সেবিষয়েও কিছু জানানো হয়নি। তাই এখনও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা যায়নি। যদিও সবাই ঘটনাস্থল থেকে নিজেদের সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি কিছু বলতে চাননি। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই মল কর্তৃপক্ষ সমস্ত বাইক এবং গাড়ি মালিকদের বলা হয়েছিল, পুলিস না বলা পর্যন্ত কোনও কিছু নিয়ে যাওয়া যাবে না। সেবিষয়ে প্রবল বিক্ষোভ দেখান গাড়ি ও বাইকের মালিকরা। তাই রাতেই পিছু হটে মল কর্তৃপক্ষ। তাই রাত থেকেই একের পর এক বাইক নিয়ে চলে যান মালিকরা। এদিন সকালে বেশ কয়েকটি পোড়া বাইকও তাঁদের মালিকরা সরিয়ে নিয়ে যান। দমকল সূত্রের খবর, বেসমেন্ট ২’তেই আগুন লেগেছিল। যদিও ঠিক কী থেকে আগুন লেগেছিল, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তা খতিয়ে দেখা হবে। সেখানে তিন-চারটি গাড়ি এবং ২০টির মতো বাইক আগুনে পুড়ে যায় বা তাপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেসমেন্ট ১’এ থাকা বাইক বা গাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি।