কর্মে অগ্রগতি ও নতুন কাজের বরাত প্রাপ্তি। আইটি কর্মীদের শুভ। মানসিক চঞ্চলতার জন্য বিদ্যাচর্চায় বাধা। ... বিশদ
পুজোয় যে এবার বৃষ্টি হতে পারে, তার আভাস ক’দিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সেই কথাই জানিয়েছে। এমন পূর্বাভাস জানার পর উৎসবমুখর মানুষ আর কতক্ষণ ঘরে বসে থাকতে পারে! যদি বৃষ্টির জন্য পুজোর দিনগুলিতে বেরনো সম্ভব না হয় বা সীমাহীন ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়, এই আশঙ্কায় চতুর্থীর সন্ধ্যাতেই টালা থেকে টালিগঞ্জ—সব রাজপথের দখল নিয়ে নেয় আমজনতা। এদিন সন্ধ্যার দিকে জমাট ভিড় প্রত্যক্ষ করা গেলেও সকাল থেকেই ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েন বহু মানুষ। বেলা ১১টা নাগাদ গড়িয়াহাট চত্বরে মানুষের স্রোত ধেয়ে গিয়েছে একডালিয়া, সিংহী পার্কের মণ্ডপের দিকে। সন্ধ্যা নামার অনেক আগেই নিউ আলিপুর সুরুচি সঙ্ঘ, চেতলা অগ্রণীর মতো নামকরা মণ্ডপগুলির সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। উত্তরে শ্যামবাজার, হাতিবাগান চত্বরে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের একটা বড় অংশ ওই এলাকার বিখ্যাত পুজোমণ্ডপগুলি দেখে ঘরে ফেরে। আর সন্ধ্যার দিকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, বিধান সরণী বা বিডন স্ট্রিট—উত্তরের বেশিরভাগ রাস্তাই চলে যায় মানুষের দখলে। সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারে সোনার দুর্গা দর্শন করতে এদিন বিকেল থেকেই ভিড় উপচে পড়ে।
জেলার বহু মানুষ এদিন সারারাত কলকাতায় ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা নিয়ে বিকেলেই ঢুকে পড়েন মহানগরে। হাতিবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন মেদিনীপুরের কোলাঘাট থেকে আসা একদল তরুণ। এদিন সারারাত কলকাতায় ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা তাঁদের। তেমনই একজন সঞ্জয় প্রামাণিক বলেন, আমাদের ইচ্ছা ছিল অষ্টমী বা নবমীর দিন কলকাতায় ঘুরতে আসার। কিন্তু ওই সময় যদি বৃষ্টি হয়—এই আশঙ্কায় আগেই চলে এসেছি। আজকালের মধ্যে শহরের সব পুজোই উদ্বোধন হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এখনই মানুষ যেভাবে পথে নেমেছে, তাতে আজ, পঞ্চমীর দিনে তা আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন পুজো উদ্যোক্তারা। তবে স্লগ ওভাবে বৃষ্টির ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের কারণে মাঝারি বাজেটের পুজো কমিটিগুলি অনেকেই এখনও মণ্ডপের কাজ শেষ করতে পারেনি। তারা এদিন সকাল থেকে ভালো আবহাওয়া পেয়ে পুরোদমে কাজ শেষের চেষ্টা চালিয়েছে।
বাঙালি সারা বছর শারদোৎসবের এই ক’টা দিনের অপেক্ষায় থাকে। তাই বৃষ্টির ভ্রুকুটিই হোক বা দৈনন্দিন জীবনযাপনে নানা ধরনের প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই—সব কিছুকে পাশ কাটিয়ে এই ক’টা দিন উৎসবে মেতে উঠতে চায় আপামর বাঙালি। এই উৎসবমুখরতা যে সহজে দমানো যাবে না, তা চতুর্থীর দিনেই মণ্ডপে মণ্ডপে আনন্দমুখর জনতার ঢলে ফের প্রমাণিত হয়েছে।
সুরুচি সঙ্ঘের উদ্বোধনে মমতা। ছবি: ভাস্কর মুখোপাধ্যায়। শ্রীসঙ্ঘের প্রতিমা। ছবি: অতূণ বন্দ্যোপাধ্যায়