সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
স্বাস্থ্য দপ্তর এবং কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, রিজেন্ট পার্ক থানার অন্তর্গত রিজেন্ট কলোনির বাসিন্দা প্রজ্ঞাকে গত বৃহস্পতিবার আশঙ্কাজনক অবস্থায় দক্ষিণ কলকাতার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের দাবি, ভর্তির সময় থেকে তার অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় তাকে ইনটেনসিভ কেয়ারে এবং ভেন্টিলেশনেও রাখতে হয়েছিল। ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হয়েছিল তার। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিকুঠির জি ডি বিড়লা স্কুলের পড়ুয়া ছিল প্রজ্ঞা। গত সপ্তাহ থেকেই জ্বরে ভুগছিল।
৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, আমার ওয়ার্ডের চারপাশই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। কিন্তু এমন একটি ঘটনা সত্যিই মর্মান্তিক। হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে ‘ডেঙ্গু’ লেখা রয়েছে। কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের তরফেও ওই শিশুটির চিকিৎসা সংক্রান্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানালেন, এলাকায় অনেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি। এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচিতে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। যে কারণে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে গেল। এদিন, শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে গৃহবধূ পারমিতা সাহা এবং প্রজ্ঞার বাবা রাজেশ সাহা, কেউই কথা বলার অবস্থায় নেই। পারমিতাদেবীও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সদ্য হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন। হাতে স্যালাইনের চ্যানেল করে রাখা রয়েছে। মেয়েকে হারিয়ে ডুকরে কেঁদেই চলেছেন তিনি।
চলতি বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত কলকাতায় ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০২। যদিও স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষ বলেন, গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৯০৬। সচেতনতা বেড়েছে। যদিও আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সমস্যা যে বাড়ছে, তা নিয়ে দ্বিমত নেই। বরো এবং ওয়ার্ডভিত্তিক শহরের প্রতিটি কোণে কোণে নজরদারি রাখা হচ্ছে।
কামারহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণেশ্বরের মে দিবস কলোনি এলাকার বাসিন্দা অর্পিতা পাসোয়ান গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। তাঁর পারিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে বাড়ির সামনে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বাড়িতে আনার পর আবার তাঁর অবস্থার অবনতি হলে শনিবার গভীর রাতে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, দক্ষিণেশ্বরের রেল কোয়ার্টার্স ও সংলগ্ন এলাকায় জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ জনের বেশি। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পুরসভার অভিযোগ, রেল কোয়ার্টার্স এলাকায় জমা জলে মশার লার্ভা দেখা গিয়েছে। পুরসভা চিঠি দেওয়ার পরেও রেল কর্তৃপক্ষ সাফাইয়ের ব্যবস্থা করছে না। পুরসভাকেও তা করতে অনুমতি দিচ্ছে না।
এদিন সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাঃ অজয় চক্রবর্তী বলেন, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও কিছু খবর আমরা পেয়েছি। সেইসব মৃত্যু আদৌ ডেঙ্গুতে কি না, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কমিটির কাছে পাঠানো হচ্ছে।