সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘেরাওমুক্ত করার জন্য কেন ক্যাম্পাসে পুলিস ডাকছেন না উপাচার্য— মূলত এই প্রশ্নে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোনে তুমুল তর্কাতর্কি হয় ধনকার ও সুরঞ্জনবাবুর মধ্যে। উপাচার্য সেদিন রাজ্যপালকে সাফ জানিয়ে দেন, তিনি কিছুতেই ক্যাম্পাসে পুলিস ডাকবেন না। এব্যাপারে তাঁকে বাধ্য করা হলে তিনি ইস্তফা দেবেন। সূত্রের খবর, ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল তখন ফোনেই সুরঞ্জনবাবুকে বলেন, যদি পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিস না ডাকেন, তাহলে ইস্তফা দেওয়াই ভালো আপনার। এই অবস্থায় সুরঞ্জনবাবু এবং প্রদীপবাবু অসুস্থতার কারণে ক্যাম্পাস ছেড়ে হাসপাতালে চলে যান। এভাবে বাবুলকে কয়েক হাজার উত্তেজিত ছাত্রছাত্রীদের সামনে ফেলে রেখে তাঁরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ায় আরও ক্ষুব্ধ হন ধনকার। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী সহ প্রশাসনের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরও পরিস্থিতির বদল না ঘটা সেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দেয়। মুখ্যমন্ত্রী না যাওয়ার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তিনি ক্যাম্পাসে গিয়ে বিক্ষোভের মধ্যে পড়েও শেষমেশ বাবুলকে উদ্ধার করে আনেন। শুক্রবার লম্বা বিবৃতি দিয়ে প্রশাসনের ভূমিকার পাশাপাশি উপাচার্য-সহ উপাচার্যের বিরুদ্ধে কর্তব্য পালনে গাফিলতির অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বিস্তারিত রিপোর্টও দেন। সব মিলিয়ে মনে করা হচ্ছিল, যাদবপুরের বিষয়টি নিয়ে তিনি সংঘাতের আবহকে আরও অনেক দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাবেন।
কিন্তু শনিবার সকালেই রাজভবন সূত্রে রাজ্যপালের মনোভাবের পরিবর্তন হওয়ার ইঙ্গিত মেলে। সূত্রটি জানায়, ঘনিষ্ঠ মহলে ধনকার এটাই বোঝাতে চান যে, আচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, অধ্যাপক বা অশিক্ষক কর্মীর প্রধান অভিভাবক তিনি। সেই সুবাদে তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে অন্যায়ে ভর্ৎসনা এবং বিপদে বন্ধুর হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে তিনি সকলের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করতে চান। এই মনোভাব সামনে রেখেই তিনি এদিন সকালে অসুস্থ সুরঞ্জনবাবুদের দেখতে ঢাকুরিয়ার বেসরকারি হাসপাতালে যান। চিকিৎসকদের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, আপাতত উপাচার্য-সহ উপাচার্য দু’জনেই ভালো আছেন। সেদিনের গোলমালে তাঁদের কারও গায়ে আঘাত লাগেনি জেনে আশ্বস্ত হন তিনি। উপাচার্যের সঙ্গে কয়েক মিনিট একান্তে কথা বলার ফাঁকেই ধনকার সেদিন কেন এবং কোন পরিস্থিতিতে তিনি ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন, তা ব্যাখ্যা করেন। পাল্টা সুরঞ্জনবাবু যাবতীয় তিক্ততার অবসানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে ধনকারের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে শীঘ্রই অধ্যাপকদের সঙ্গে তাঁর মুখোমুখি বৈঠকের ব্যাপারে উপাচার্যের দেওয়া প্রস্তাবেও সহমত হন তিনি।