সম্পত্তিজনিত মামলা-মোকদ্দমায় জটিলতা বৃদ্ধি। শরীর-স্বাস্থ্য দুর্বল হতে পারে। বিদ্যাশিক্ষায় বাধা-বিঘ্ন। হঠকারী সিদ্ধান্তের জন্য আফশোস বাড়তে ... বিশদ
একইসঙ্গে চলতে থাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ। সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে ওই গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়ে সারি সারি বাস-ট্যাক্সি। যাদবপুর ও বিস্তীর্ণ এলাকায় তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। ভোগান্তির মধ্যে পড়েন অসংখ্য নিত্যযাত্রী। প্রায় ঘণ্টাখানেক রাস্তা অবরোধ থাকায় বাস-গাড়ি থেকে নেমে হাঁটতে বাধ্য হন যাত্রীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটগুলির সামনে চরম বিশৃঙ্খলা চলতে থাকায় তাঁরা অন্য পথ ধরেন। তাঁদের কথায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় আগে থেকে প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে এই অবস্থার মধ্যে পড়তে হতো না। শুধু মধ্যবয়সি ব্যক্তিরাই নন, পথচলতি বয়স্ক এবং শিশুরাও বিপাকে পড়ে এর ফলে। এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্টোদিকে একটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। আতঙ্কে সেখানকার দরজা-জানালাও বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই কোচিং সেন্টারের সামনে দাঁড়ানো বহু অভিভাবক ভয়ে সেন্টারের ভিতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা বলেন, কীভাবে সন্তানদের বাড়ি নিয়ে যাব, বুঝতে পারছি না। এদিকে, এই অব্যবস্থায় আটকে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সও। পুলিস সেই অ্যাম্বুলেন্সকে কোনওরকমে সুকান্ত সেতু পার করিয়ে দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, রাজ্যপাল যতক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন, ততক্ষণ বাইরে বাঁশ-লাঠি নিয়ে তাণ্ডব চালায় এভিবিপি’র কর্মী-সমর্থকরা। প্রায় প্রত্যেকের হাতেই বাঁশ-লাঠি-রড ছিল। আতঙ্কে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন দোকানগুলি ঝাঁপ বন্ধ করে দেয়। কিছু কিছু দোকানের ঝাঁপ আবার জোর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে, ঘটনাস্থলে প্রথমে কলকাতা পুলিস এবং পরে র্যাফের বিশাল বাহিনী আসে। তাদের দেখে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট সংলগ্ন ইউনিয়ন রুমের সামগ্রী বের করে তাতে আগুন লাগানোর খবর পেয়েই চলে আসে দমকল। সেই গাড়িতে উঠেও বিক্ষোভ দেখায় বিক্ষোভকারীরা। এদিকে, সময় যত এগিয়েছে, যাদবপুর, সেলিমপুর, ইএম বাইপাসের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে গেরুয়া শিবিরের লোকজন ভিড় করতে শুরু করে ক্যাম্পাসের গেটে। রাস্তার উপরেই বসে পড়ে তারা। সঙ্গে চলতে থাকে শাসানি। পুলিস তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর থেকে পড়ুয়ারা হুমকি দিলে এভিবিপি’র কর্মীরাও তাদের পাল্টা লাঠি-বাঁশ দেখায়। ঘটনাস্থলে এসে র্যাফ তাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু গেরুয়া শিবিরের লোকজন সংখ্যায় এতটাই বেশি ছিল যে, প্রথমদিকে র্যাফ তাদের সামলাতে ব্যর্থ হয়। স্লোগানে সরগরম হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। বেশ কয়েকটি বাসের চালককেও হুমকি দিয়ে স্টার্ট বন্ধ করে দেয় গেরুয়া শিবিরের লোকজন। রাত পর্যন্ত গোটা এলাকার পরিস্থিতি থমথমে।