ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
১৪/১ এ, দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা রাজদীপ বড়াল, জয়দীপ বড়াল বলেন, আমাদের বাড়িতে তো ঢোকাই যাচ্ছে না। দরজা, জানলা খোলা যাচ্ছে না। ফলে প্রশাসন ঘরে ঢোকার সুযোগ দিলেও এখনও পর্যন্ত ঢুকতে পারিনি। ম্যান-লিফটার না হলে ঢোকা যাবে না। এর মধ্যে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে পুরো বাড়িটা ধসে পড়লে আর কিছু ফিরে পাব না। একইরকম আশঙ্কার কথা বলেন স্যাকরাপাড়া লেনের বাসিন্দা শ্যামল ঘোষ। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে তো মাটি আলগা হবে। তাহলে কি আমাদের যে বাড়িগুলি মোটামুটি ভালো আছে, সেগুলিও এবার বসে যাবে? মেট্রো রেলের নির্মাণকারী সংস্থা কেএমআরসিএল-এর কাছ থেকে কোনও কিছু জানা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। দুর্গা পিতুরি লেনেরই আর এক বাসিন্দা দেবদীপ সেন বলেন, যত বৃষ্টি হচ্ছে, ততই মনে হচ্ছে এবার বাড়ি বোধ হয় আরও বসে যাবে। তাঁর বাড়িটির ভিতরে কিছু ফাটল দেখা গেলেও মেরামতির পর বসবাস করা যাবে বলে আশাবাদী তিনি। তবে বৃষ্টির দাপট দেখে তিনিও আশঙ্কিত।
এদিন সকালে বউবাজারের অকুস্থল সংলগ্ন হিদারাম ব্যানার্জি লেন, মদন দত্ত লেন, রামকানাই অধিকারী লেনের বাসিন্দারা একজোট হয়ে কেএমআরসিএল-এর মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজির কাছে যান। তাঁদের আতঙ্কের কথা তুলে ধরেন। ওই বাসিন্দারা বলেন, আমরা দেখছি, নানা সময় কেউ এসে আমাদের বাড়ির ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সামনের গলিতে নানা মাপজোক চলছে। তাহলে কি আমাদের লেনগুলির নীচ দিয়েও সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছে? এই বৃষ্টিতে তাহলে তো আমরাও বিপদগ্রস্ত। তাঁদের অবশ্য আশ্বস্ত করে মেট্রোকর্তা বলেন, মোটেও এতে আতঙ্কের কিছু নেই। যে তিনটি লেন ক্ষতিগ্রস্ত, তার বাইরে এই অংশ দিয়ে কোনও সুড়ঙ্গ যায়নি। মাত্র ৩০ মিটার অংশ বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। কাজ করে সেই বিপদও কমিয়ে আনা হচ্ছে।
তবে মেট্রো রেল নির্মাণকারী সংস্থার এসব আশ্বাসে এখন ভরসা কম এখানকার বাসিন্দাদের। সুমিতা বসাক নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আমাদের তো এঁরাই বলেছিলেন, দু’দিনের জন্য হোটেলে উঠে যান। তারপর যেমন আছেন, তেমন থাকবেন। সেদিন থেকে সর্বস্বান্ত হয়ে গিয়েছি। তারপর কীভাবে প্রশাসনের কথায় ভরসা করব বলুন। এদিকে, রবিবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলির বাসিন্দাদের এক ঘণ্টারও বেশি সময় দেওয়া হয়েছিল, ভিতর থেকে মালপত্র সরানোর জন্য। অনেকেই এদিন ফ্রিজ, টিভি, আলমারি, শোকেস বের করে নিয়ে গিয়েছেন। আবার এক-একটি বাড়ির অবস্থা এমন যে সেখানে ঢুকতে পারেননি বাড়ির কোনও সদস্য। তাঁদের জিনিসপত্র কীভাবে উদ্ধার করা যায়, সেই বিষয়টিও তাঁরা দেখছেন বলে দাবি করেন এক কেএমআরসিএল এক কর্তা।