গৃহে শুভকর্মের প্রস্তুতি ও ব্যস্ততা। হস্তশিল্পীদের নৈপুণ্য ও প্রতিভার বিকাশে আয় বৃদ্ধি। বিদ্যায় উন্নতি। ... বিশদ
দক্ষিণদাড়ির কাছে বুধবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ একটি নির্মীয়মাণ সাইটের ধারে এক ব্যক্তিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। ১০০ ডায়ালে ফোন করে তাঁরা বিষয়টি কলকাতা পুলিসকে জানান। মিনিট পনেরোর মধ্যেই উল্টোডাঙা থানার অফিসাররা হাজির হয়ে যান সেখানে। কিন্তু দেখা যায়, এই এলাকা তাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করে বিধাননগর কমিশনারেটের কন্ট্রোল রুমে তাঁরা বিষয়টি জানান। বিধাননগর উত্তর থানার অফিসাররাও এসে জানিয়ে দেন, এটি তাঁদের এলাকার মধ্যেও পড়ে না। এই জায়গা লেকটাউন থানার অন্তর্ভুক্ত। তাদের জানানো হয় বিষয়টি। কিছুক্ষণ পরে ওই থানার অফিসাররা এসে হাজির হন। তাঁদের দাবি ছিল, যেখানে দেহটি ঝুলছে, সেই জায়গা লেকটাউন থানার মধ্যে পড়ে না। এটি মানিকতলা থানার আওতায়। এবার হাজির হন মানিকতলা থানার অফিসাররাও। কিন্তু তাঁরা জানিয়ে দেন, এই এলাকা কোনওভাবেই তাঁদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এর মাঝে এলাকা ছেড়ে কার্যত দায় এড়িয়ে চলে যায় লেকটাউন থানার পুলিস। জানিয়ে যায়, এই দেহ উদ্ধার কলকাতা পুলিসকেই করতে হবে।
এলাকা নিয়ে টানাপোড়েনের চেয়ে মৃত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা যে বেশি জরুরি, তা বুঝতে পারেন কলকাতা পুলিসের আধিকারিকরা। তাই এলাকা বিচার না করেই ঝুলে পড়া ব্যক্তিকে নামানো হয়। কিন্তু তা করতে গিয়েও সমস্যা হয় কর্দমাক্ত জায়গার জন্য। যে পোস্টে ওই ব্যক্তি ঝুলেছেন, সেখানে কোনওভাবেই যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না অফিসারের পক্ষে। পাশেই রয়েছে খাল। অত্যন্ত পিচ্ছিল ওই জায়গায় কোনওভাবে দেহের ভারসাম্য হারালে সোজা খালে পড়তে হবে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে ক্রেন ডাকতে হয়। লালবাজারের এক পদস্থ কর্তার দাবি, তা আনতে কিছুটা সময় লেগে যায়। যে কারণে দেহ নামাতে নামাতে আটটা চল্লিশ মিনিট হয়ে যায়। তাঁর যুক্তি, টানাপোড়েন চলার কারণেই দেহ নামাতে দেরি হয়েছে, এমনটা নয়। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এলাকায় গিয়েছেন থানার অফিসাররা। লেকটাউন থানা তাদের এলাকা নয় বলার সঙ্গে সঙ্গেই চটজলদি ক্রেন ডেকে পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিস।
দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানোর পর এলাকা আসলে কার, তা নিয়ে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিস। এলাকার ম্যাপ বের করা হয়। দেখা যায়, তা রাজ্য পুলিসের এলাকায় পড়ে। এরপর তা দেখানো হয় লেকটাউন থানার কর্তব্যরত অফিসারদের। বিষয়টি কমিশনারেটের কর্তাদের কানে তোলেন লালবাজারের কর্তারা। এরপরই টনক নড়ে কমিশনারেটের আধিকারিকদের। তাঁরা বুঝতে পারেন, এলাকা তাঁদেরই। এই নিয়ে অহেতুক দড়ি টানাটানি করা হচ্ছে। তারপরই আত্মঘাতী হওয়ার রাজু হাওলাদারের স্ত্রীর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করে লেকটাউন থানা। এলাকা লেকটাউন থানার হওয়া সত্ত্বেও তারা কেন দেহ নিতে অস্বীকার করল, এই বিষয়ে কমিশনারেটের এক কর্তাকে প্রশ্ন করা হলে, বিষয়টি এড়িয়ে তাঁর যুক্তি, আগে যারা গিয়েছে, তারা দেহ নামিয়েছে। এলাকা কার, তা পরে ঠিক হয়েছে।