বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, নিহত অভিষেক রায়ের (২১) বাড়ি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডে। তাঁর সঙ্গে প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল মানিকতলা এলাকার মুরারিপুকুর রোডের বাসিন্দা মনীষার। দুজনেই একে অপরের বাড়িতে যেতেন। শনিবার আঠারো বছর পূর্ণ করেন মনীষা। তাঁর বাড়িতে বার্থ ডে পার্টির আয়োজন করা হয়। যেখানে আত্মীয়স্বজনরাও এসেছিলেন। মনীষার আমন্ত্রণে তাঁদের বাড়িতে যান অভিষেকও। পার্টি শেষ হওয়ার পর তাঁরা দু’জনে বাড়ি থেকে বেরোন। অভিষেকের বাইকের পিছনে বসেছিলেন মনীষা। অত রাতে বাড়ি থেকে বেরোনোর ক্ষেত্রে সায় ছিল না পরিবারের লোকজনের। কিন্তু জন্মদিন থাকায় বাড়ির লোকজন সেভাবে বাধা দেননি।
বাইপাস ধরে তাঁরা যাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাইকটি পরীক্ষা করে পুলিস জেনেছে, গাড়ির গতি অত্যন্ত বেশি ছিল। বাইপাসের উপর মানিকতলা থানা এলাকার একটি আবাসনের সামনে এসে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন অভিষেক। রাস্তার ধারে থাকা ডিভাইডারে গিয়ে ধাক্কা মারেন। বাইকটি আটকে যায় সেখানে। ডিভাইডারে ধাক্কা মারার পর সেখানে আটকে যান অভিষেক। মাথায় মারাত্মক আঘাত পান। বান্ধবী মনীষা রাস্তার একধারে ছিটকে পড়েন। রাস্তায় টহলরত নাইট শিফটের পুলিসকর্মীরা ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে আসেন। তাঁরাই দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই মারা যান ওই যুবক। অভিষেক ও মনীষার বাড়ির লোকজনকে ফোন করে করে খবর দেয় পুলিস। মণীষার বাবা অশোক রায়ের বক্তব্য, শনিবার তিনি বারাসতে ছিলেন। রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁর কাছে ফোন আসে। থানা থেকে ফোন করে বলা হয়, মেয়ে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন। এরপরই তিনি হাসপাতালে ছুটে আসেন। তাঁর বাবা জানিয়েছেন, শনিবার মেয়ে ১৮ বছর পূর্ণ করে। বাড়িতে বার্থ ডে পার্টির আয়োজন করা হয়। সেখানে অনেক বন্ধুরাই ছিলেন। অনেকে পার্টি শেষে বাড়ি চলে যান। অভিষেক ও আরও কয়েকজন রয়ে যান। অনেক রাত হওয়ায় মনীষার মাও ঘুমিয়ে পড়েন। এরপরই তাঁরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পুলিসের কাছ থেকে জেনেছেন, দুর্ঘটনার পর মেয়ে ছিটকে অন্য একটি গাড়ির উপরে পড়েন। তাতে তাঁর মাথায় গভীর আঘাত লাগে। মেয়ের অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। চিকিৎসকরা সমস্তরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে, মৃত অভিষেক রায়ের আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রোডের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, যুবকের পরিজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। অভিষেক দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া। যুবকের দিদা গায়ত্রী রায় বলেন, বন্ধুর জন্মদিন বলে রাতেই নাতি বাইক নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই ও বাইক নিয়ে বের হত। রাতে আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। হাসপাতালে গিয়ে বাড়ির লোকজন পারে, সব শেষ।
এদিকে তদন্তে উঠে এসেছে, দু’জনের কারো মাথাতেই হেলমেট ছিল না। যে কারণে তাঁদের মাথাতেই সবচেয়ে বেশি আঘাত লেগেছে। মস্তিষ্ক থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলেই মৃত্যু হয়েছে অভিষেকের। তাঁর গাড়ির রেজিস্ট্রেশন হয়নি এখনও। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল কি না, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। হেলমেটহীন বাইক ধরতে লাগাতার অভিযান চলছে কলকাতা পুলিসের। সচেতন করা হচ্ছে বাইকচালক ও আরোহীদের। তারপরেও সাধারণ মানুষের হুঁশ যে এখনও ফিরছে না, শনিবারের ঘটনা তা ফের প্রমাণ করে দিল।