বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
শনিবার রাতে নিমতার পূর্ব আলিপুরে বাড়ির কাছেই ঝোপে কাঠমিস্ত্রি সঞ্জীব মণ্ডলের(৪০) নলিকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিস। ওই রাতেই মৃতের স্ত্রী অনিতা মণ্ডলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে পুলিস অসঙ্গতি পায়। প্রথমে তাকে আটক করে পুলিস। গভীর রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। রবিবার তাকে বারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিনের পুলিস হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
১৬ বছর আগে পেশায় কাঠমিস্ত্রি সঞ্জীবের সঙ্গে বিয়ে হয় অনিতার। তাদের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। সে নবম শ্রেণীর ছাত্র। অনিতা পেশায় আয়া। সে বর্তমানে বেলঘরিয়ার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে এক ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে আয়ার কাজ করে। সঞ্জীবও বেলঘরিয়ার একটি কাঠের গোলার মিস্ত্রি। প্রতিদিন তিনি সকালে বেরিয়ে যেতেন। দুপুরে খাবার খেতে বাড়িতে ফিরতেন। আবার বিকেলে বেরিয়ে সন্ধ্যায় ৬টা নাগাদ বাড়িতে ফিরতেন।
টালির ছাউনি টিনের বেড়া দেওয়া ঘর সঞ্জীবের। পাশেই তাঁর মা যোগমায়া মণ্ডল ও ছোট ভাই বিশ্বজিৎ মণ্ডল থাকেন। তবে চোখ অপারেশনের পর গত একমাস হল রবীন্দ্রনগরে ছোট মেয়ের কাছে থাকতেন যোগমায়াদেবী। ছোট ভাই সকালে কাজে বেরিয়ে রাতে বাড়ি ফেরেন। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার বাড়িতেই ছিল অনিতা। সকালে সেই স্বামীকে বাজারে মাংস আনতে পাঠায়। মাংস এনে দিয়ে কাজে চলে যান সঞ্জীব। দুপুরে ফিরে এসে খাবার খেয়ে আবার কাজে গিয়েছিলেন। ছেলে আবীর বিকেলে খেলতে গিয়েছিল। খেলা শেষে সে বাড়িতে আসে। কিছু পরে তাকে মা ১০টাকা দিয়ে চপ আনতে পাঠায়। পাড়ার দোকানে চপ হতে দেরি দেখে আবীর এক বন্ধুর বাড়িতে মোবাইলে গেম খেলতে যায়। সন্ধে সাড়ে ৬টার পর দুই বন্ধু এসে আবীরকে খবর দেয়, তার বাবা ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে। বাড়িতে এসে সে দেখে বাবা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নলিকাটা দেহ।
পুলিস সূত্রের খবর, বাড়ির মধ্যে সঞ্জীবকে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ছুরি দিয়ে নলি কাটা হয়েছে। তারপর মৃতদেহ ঝোপের মধ্যে ফেলা হয়েছে। বাড়ি থেকে ঝোপের দূরত্ব ১০ মিটার। পুলিসকে ভাবাচ্ছে, মৃতদেহ ওই দূরত্ব মহিলার পক্ষে একা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাহলে খুনের সময় তৃতীয় কোনও ব্যক্তি নিষ্টয় ছিল? এসব জানতে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিস।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দম্পতির মধ্যে প্রায়শই ঝামেলা হতো। সেটা অনিতার পরকীয়া সম্পর্কের কারণে। যে বাড়িতে আয়ার কাজ করত অনিতা, সে বাড়িরই একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। তা নিয়েই অশান্তি বাধত। মৃতের বোন দিপালী রায় বলেন, দাদা ও বউদির ঝামেলা হতো মাঝেমধ্যে। বউদি হয়তো অন্য কারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল। ওই দোষী। ওই খুন করেছে আমার দাদাকে।
নিমতা থানার পুলিস জানিয়েছে, জেরায় স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে স্ত্রী। বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের ডিসি(জোন ২) আনন্দ রায় বলেন, কাঠমিস্ত্রি খুনে গ্রেপ্তার করা হয়েছে স্ত্রীকে। পুলিস হেফাজতে নিয়ে জেরা চলছে। এই ঘটনায় তৃতীয় ব্যক্তি জড়িত আছে কি না, তা স্ত্রীকে জেরা করেই উঠে আসতে পারে।