বিদ্যার্থীরা শুভ ফল লাভ করবে। মাঝে মাঝে হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় ক্ষতি হতে পারে। নতুন ... বিশদ
সূত্রের খবর, শুক্রবার দুপুরে শুভাশিস সাউ নামে এই যুবক প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগপত্র নিয়ে আমতার সিরাজবাটি চক্রের সরপাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগ দিতে আসেন। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, নিয়োগপত্রটি ভুয়ো সেটা জানানোর পর যুবকটি চলে যান। পরে শনিবার সকালে শুভাশিস এ ব্যাপারে আমতা থানায় অভিযোগ জানালে পুলিস শুভাশিস চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের বাসিন্দা শুভাশিস সাউ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর এক বন্ধু মারফত আমতা বালিচকের বাসিন্দা পেশায় সিকিউরিটি গার্ডের কর্মী শুভাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গে পরিচয় হয়। শুভাশিস সাউয়ের অভিযোগ, বালিচকের বাসিন্দা শুভাশিস তাঁকে চারমাসের মধ্যে টেট পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নিয়োগপত্র হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলে। বিনিময়ে সে ৯ লাখ টাকা দাবি করে। শুভাশিসের অভিযোগ, ওই শর্তে সে রাজি হলে শুভাশিস চক্রবর্তী তাঁকে আমতার মহিষমারি এলাকার বাসিন্দা এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করায়। মাসখানেক আগে শুভাশিস চক্রবর্তী তাঁকে ফোনে জানায় তিনি পরীক্ষায় পাশ করেছেন এবং প্রমাণস্বরূপ শিক্ষা দপ্তরের ওয়েবসাইটে সফল প্রার্থীদের নামের তালিকায় তাঁর নাম আছে সেটাও দেখান।
শুভাশিস সাউয়ের দাবি, যদিও তখন আমি বুঝতে পারিনি সেটাও ভুয়ো। এরপরে ওই ব্যক্তি ও শুভাশিস আমাকে একাধিকবার বিকাশ ভবনে নিয়ে গিয়ে আরও দু’জনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে এদের মাধ্যমে আমার নিয়োগপত্র হাতে পাওয়া যাবে। ওই দু’জনকে আমি একাধিকবার লাল বাতি লাগানো গাড়ি থেকে নামতে দেখে বিশ্বাস করেছিলাম। যদিও তাঁর অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখছে পুলিস। শুভাশিস সাউ যাঁদের নাম করেছেন, তাঁদের ব্যাপারেও খোঁজ চালাচ্ছেন তাঁরা। তাঁর অভিযোগ, এরপরেই একজন আমার কাছে টাকার দাবি করে। যদিও আমি পুরো টাকা না দিয়ে ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিই এবং বাকি টাকা নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর দেওয়ার কথা বলি। তাঁর আরও অভিযোগ, বাকি টাকা না দেওয়া পর্যন্ত আমার সমস্ত সার্টিফিকেট শুভাশিস চক্রবর্তী আটকে রাখে। গত মঙ্গলবার ওদের একজন ডিআই অফিসে আমাকে ডেকে পাঠিয়ে আমার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার পর আমাকে চাকরিতে যোগ দিতে বলে এবং আমাকে বাকি টাকা দিয়ে দিতে বলে। যদিও আমি শুক্রবার স্কুলে গিয়ে জানতে পারি আমার নিয়োগপত্র ভুয়ো আর এরপরেই আমি পুলিসে অভিযোগ জানাই।
অন্যদিকে, এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের বাসিন্দা রাজু মাইতি অভিযোগ করেন, প্রতারকরা তাঁকেও মৎস্য দপ্তরের ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদিকে, এদিন পুলিস শুভাশিস চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার বাড়ি থেকে শুভাশিস সাউয়ের সার্টিফিকেটগুলি উদ্ধার করেছে।
ভুয়ো নিয়োগপত্রের অভিযোগ সম্পর্কে সিরাজবাটি অঞ্চলের অবর পরিদর্শক অরবিন্দ কোলে বলেন, প্রথমত নিয়োগপত্রে যে সমস্ত ব্যক্তির সই আছে সেগুলি সব ভুয়ো এছাড়াও কোনও শিক্ষক নিযোগ হলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়াও নিয়োগপত্রের একটি করে কপি আমাদের কাছে আসবে। এদিন জালিয়াত চক্রের এক পান্ডা গ্রেপ্তার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেন তিনি।