নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া ও বিএনএ, চুঁচুড়া: আজ, রবিবার ধর্মতলায় তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার জন্য উলুবেড়িয়া থেকে ৫০টি নৌকা ভাড়া করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী ওই নৌকায় করে গঙ্গা ধরে বাবুঘাটে যাবেন। সেখান থেকে হেঁটে তাঁরা ধর্মতলায় সভাস্থলে যাবেন। বাকি কর্মীরা ট্রেন ও ম্যাটাডোর করে ধর্মতলায় যাবেন বলে দলীয় সূত্রের খবর। অন্যদিকে, শনিবার দুপুর থেকেই বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া থেকে কয়েক হাজার কর্মী হাওড়ার বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের খাওয়া ও থাকার জন্য উত্তর হাওড়ার সমস্ত অনুষ্ঠান বাড়ি ও ধর্মশালা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দ্বিতীয় হুগলি সেতু টোল প্লাজা ও নিবেদিতা সেতু টোল প্লাজায় দলীয় কর্মীদের সাহায্যের জন্য শনিবার থেকেই ক্যাম্প চালু করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে মেডিকেল টিম, অ্যাম্বুল্যান্স রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে যে সমস্ত স্বেচ্ছাসেবক এই ক্যাম্পগুলিতে থাকছেন, তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
অন্যান্য বছরের চেয়ে কিছুটা অপরিচিত দৃশ্য এবার দেখা গিয়েছে হাওড়া বাসস্ট্যান্ডে। প্রতি বছর ২১ জুলাইয়ের আগের দিন বাসের হাহাকার পড়ে যায়। কিন্তু, এবার তুলনায় পর্যাপ্ত বাস স্ট্যান্ডে ছিল। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি কম হয়েছে। হাওড়া জেলা তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জেলা থেকে প্রায় ৮০০ গাড়ি ধর্মতলায় যাবে। তার অধিকাংশ ছোট হাতি ও ম্যাটাডোর। মানুষের ভোগান্তি যাতে না হয়, তার জন্য বাস তুলনামূলক অনেক কম নেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি। জেলা তৃণমূলের সম্পাদক শ্যামল মিত্র বলেছেন, রুট থেকে বাস তুলে নিলে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। তাই আমরা ছোটা হাতি ও ম্যাটাডোর করে কর্মীদের নিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কর্মীদের কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আছে। তাই কোনও অসুবিধা হবে না।
অন্যদিকে, হুগলি জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে প্রায় ৭০০ বাস ধর্মতলায় নিয়ে যাওয়া হবে। তবে, হাওড়া-বর্ধমান ও হাওড়া-আরামবাগ ট্রেন রুটে যে সমস্ত ব্লকগুলি পড়েছে, সেখান থেকে কর্মীদের বেশিরভাগই ট্রেনে হাওড়া যাবেন বলে দলীয় নেতৃত্ব জানিয়েছে। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব জানিয়েছে, প্রতিটি রুট থেকে অল্প সংখ্যক বাস নেওয়া হয়েছে। তাতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে না। আর বেশিরভাগ কর্মী ট্রেনে হাওড়া যাবেন। সেখান থেকে নদী পেরিয়ে হেঁটে ধর্মতলায় যাবেন।
২১ জুলাইয়ের শহিদ স্মরণের প্রস্তুতি শনিবারই প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। শনিবার হাওড়া স্টেশনের ক্যাম্পে দলীয় কর্মীদের নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার কাজে তদারকি করেছেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি (সদর) অরূপ রায়। অরূপবাবু বলেন, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার প্রায় ১০ হাজার কর্মী হাওড়ায় থাকবেন। তাঁদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা চূড়ান্ত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে যে কর্মীরা এসেছেন, তাঁদের কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থাও হয়েছে। অন্যদিকে, নিবেদিতা সেতু টোল প্লাজার কাছে ২ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে আসা কর্মীদের সহযোগিতায় ক্যাম্প করে তদারকি করেছেন রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২ নম্বর ও ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একাধিক ক্যাম্প করা হয়েছে। দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল প্লাজার কাছেও ক্যাম্প করা হয়েছে। একই সঙ্গে নতুনত্ব আনতে উলুবেড়িয়া থেকে একই সঙ্গে ৫০টি নৌকা বাবুঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে। প্রতিটি নৌকা দলীয় পতাকায় সাজিয়ে তোলা হবে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি (গ্রামীণ) পুলক রায় বলেন, বাস ও ট্রেনের পাশাপাশি নৌকায় এবার দলীয় কর্মীদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। বেলা ১১টার মধ্যে তাঁরা বাবুঘাটে পৌঁছে হেঁটে ধর্মতলায় যাবেন। আবার নদীপথেই তাঁরা নিজেদের এলাকায় ফিরে আসবেন।