বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
২০১৪ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় শিয়ালদহ স্টেশনের কার পার্কিংয়ের কাছে জিআরপি’র দুই কনস্টেবল রাজেশ প্রসাদ ও শীলা দাস লক্ষ্য করেন, একটি ট্রলি ব্যাগ ও দড়ি দিয়ে দিয়ে বাঁধা অবস্থায় একটি লেপ দীর্ঘক্ষণ ধরে পড়ে রয়েছে। পাশে একটি স্কুল ব্যাগও পড়ে ছিল। তাঁরা তা খুলে দেখেন, লেপের মধ্যে রয়েছে এক মহিলার ধর, আর ট্রলি ব্যাগের মধ্যে রয়েছে তিনটি প্যাকেট। একটি প্যাকেটে মুণ্ডু, অন্য দু’টি প্যাকেটে রয়েছে কাটা হাত ও পা। ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় একটি ক্যাশমেমো। রেল পুলিস একটি খুনের মামলা দায়ের করে ঘটনার তদন্তে নামে।
পুলিস যে ক্যাশমেমো উদ্ধার করেছিল, তাতে লেখা ছিল একটি মোবাইল নম্বর ও লেকটাউনের একটি ঠিকানা। সেই ঠিকানা ধরেই রেল পুলিস তদন্তে নেমে জানতে পারে, ওই ঠিকানাটি হল সুরজিৎ দেব নামে এক ব্যক্তির। এরপর তাকে আটক করে লাগাতার জেরা শুরু করলে সে স্বীকার করে, লিপিকা পোদ্দার নামে এক মহিলার সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক আছে। তাকে নিয়ে পাকাপাকিভাবে ঘর বাঁধার স্বপ্নেই স্ত্রী জয়ন্তীকে দুনিয়া থেকে চিরদিনের জন্য সরিয়ে দেওয়ার ‘ছক’ কষা হয়। জেরায় সুরজিৎ আরও জানায়, ২০১৪ সালের ১৯ মে রাতে সে ও তার প্রেমিকা স্ত্রীকে ভারী বস্তু দিয়ে মাথায় আঘাতের পর শ্বাসরোধ করে খুন করে সেই মৃতদেহ ঘরের এককোণে রেখে দেয়। ২০ মে সকালে রানাঘাটের গাংনাপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় বিশ্বাস নামে এক যুবককে ফোন করে ডেকে পাঠায় চার হাজার টাকার বিনিময়ে ওই মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কাটার জন্য। সে আসার পর জয়ন্তীদেবীর মৃতদেহ ঘর থেকে বাথরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই ওই সুপারি কিলারের মাধ্যমে মৃতদেহটি টুকরো টুকরো করে তাতে অ্যাসিড ঢালা হয়। পরে বিকেলে একটি ট্যাক্সি করে ওই তিনজন মৃতদেহের খণ্ডাংশ লেপে বেঁধে ও ট্রলি ব্যাগে করে শিয়ালদহ স্টেশনে নিয়ে আসে এবং সেগুলি কার পার্কিং এলাকায় ফেলে চম্পট দেয়। জেরায় ওই তিনজন জানায়, মৃতদেহের খণ্ডাংশগুলি গঙ্গায় ফেলে দেওয়ার মতলব ছিল। কিন্তু ধরার পড়ার ভয়ে তা কার পার্কিংয়ের এলাকায় রেখে দিয়ে তারা চলে যায়। এই মামলায় তদন্তকারী অফিসার তুলসী দাস লাহা ২০১৪ সালের ১২ আগস্ট চার্জশিট পেশ করে। মামলায় সাক্ষ্য দেন ২৫ জন। সরকারি আইনজীবী জানান, খুনের ঘটনা নৃশংস হওয়ায় জেল হেফাজতে রেখেই তিনজনের বিচার চলে।