রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে বিস্তর পদযাত্রা করেছেন মমতা। হেঁটেছেন সব মিলিয়ে ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। ভোটের ফলাফল ইস্তক এদিনই ছিল মুখ্যমন্ত্রীর প্রথম সরকারি পদযাত্রা। সামনে বর্ণাঢ্য ট্যাবলো, জল সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বানে নানা প্ল্যাকার্ড আর ফেস্টুন হাতে পদযাত্রীরা। জলের অপচয় বন্ধে এবং সংরক্ষণের বার্তা নিয়ে বিকেল তিনটের সময় জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির সামনে থেকে হাঁটা শুরু করেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। আমলা-কর্তাদের মতোই তাঁর সঙ্গে পা মিলিয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্য মেয়র ফিরহাদ হাকিম, শশী পাঁজা, লক্ষ্মীনারায়ণ শুক্লা, জাভেদ খান আর শিল্প-সাহিত্য মহলের এক ঝাঁক তারকা। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ ধরে মুখ্যমন্ত্রী যত এগিয়েছেন, ততই বেড়েছে মানুষের ঢল। দু’পাশে সেই একই উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা আর দিদি, দিদি ডাক। পথের মাঝে মুরলীধর সেন লেনের সংযোগস্থল। গেরুয়া শিবিরের এ রাজ্যের সদর দপ্তর। পুলিসে পুলিসে ছয়লাপ, ততোধিক ভিড় উৎসাহী জনতার। হাত নাড়লেন মমতা, ফিরে এল পাল্টা অভিবাদন। মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ জ্বলে উঠল বিজেপি অফিসের প্রায় দোরগোড়া থেকে। পদযাত্রা নির্বিঘ্নে পার হতে যেন হাঁফ ছাড়লেন শান্তিরক্ষকরা। এরপর মেডিক্যাল কলেজ, যোগাযোগ ভবন, চাঁদনি, চৌরঙ্গি, ওয়াই চ্যানেল, নিউমার্কেট আর পার্ক স্ট্রিটের সংযোগস্থল— পদযাত্রা মেয়ো রোড ঢোকার আগে দু’পাশে শুধু কাতারে কাতারে মানুষ। চারটে বাজার ১০ মিনিট আগে পদযাত্রা পৌঁছয় মেয়ো রোডের সভাস্থলে।
মমতা বলেন, ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটের নির্বাচনী ইস্তাহারে লিখেছিলাম, ক্ষমতায় এলে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্পের আওতায় ৫০ হাজার পুকুর কাটব। তাতে জল সংরক্ষণ করা যাবে। বন্যার সময় বাড়তি জলও ধরা যাবে, সঙ্গে মাছ চাষ তো আছেই। ভাবছিলাম পারব কি না! এরপর কিছুটা কটাক্ষের সুর মমতার গলায়— অনেকে প্রতিশ্রুতি বিলি করে, কিন্তু বাস্তবায়িত হয় না। আমি মনে করি, যেটা বলব, সেটা করে দেখাব। ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ বছরের হিসেব মেলাতে গিয়ে দেখি, ৫০ হাজার কোথায়! দেড় লক্ষ পুকুর খোঁড়া হয়ে গিয়েছে। এখন সংখ্যাটা তিন লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। জল ধরো জল ভরো প্রকল্পের সুবিধা কীভাবে মিলেছে ডিভিসি’র ছাড়া জলে বন্যার সময়, এদিন তারও উদাহরণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, দু’বছর আগে উদয়নারায়ণপুরে দেখেছি, ওখানকার এমএলএ’রাও বলেছেন, পুকুর খননের কারণেই বন্যার প্রকোপ অনেকটা কম ছিল। বাড়তি জল ধরা গিয়েছিল নতুন কাটা পুকুরগুলিতে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চেন্নাইয়ের জল সঙ্কট আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, কী ভয়ানক বিপদ আসছে। আমাদের জল বাঁচাতেই হবে। সংরক্ষণ করতে হবে। নতুন যে সমস্ত বাড়িঘর হচ্ছে, সেখানে যদি ছাদে বৃষ্টির জল ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারি, তাহলে সে তো আমাদের কাজেই লাগবে। এটা নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে, একযোগে কাজ করতে হবে। এদিনের অনুষ্ঠানে বাংলার টেলি ও টলিপাড়ার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ছিল ভালোই। তাঁদের উপস্থিতির কথা মাথায় রেখে মমতার আহ্বান, সিরিয়াল আর সিনেমায় জলের অপচয় বন্ধ ও সংরক্ষণের মতো সামাজিক বার্তা রাখুন। আর বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের কাছে অনুরোধ, খবরের মাঝে এহেন বার্তা দিয়ে আপনারাও সামাজিক দায়িত্ব পালন করুন।