রাজনীতিক ও পেশাদারদের ব্যস্ততা বাড়বে। বয়স্করা শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিন। ধনযোগ আছে। ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় রেলকর্মী বিশ্বজিত রায় তাঁর স্ত্রী তাপসী ও তাঁদের একমাত্র সন্তান ইন্দ্রনীলকে নিয়ে ব্যান্ডেলের কেওটা শিবতলার বাড়িতে থাকতেন। তাঁদের সঙ্গেই বিশ্বজিতবাবুর অশীতিপর বৃদ্ধা মা আরতি রায়ও থাকতেন। পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ইন্দ্রনীল একটি চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে রাতে বাঁশেবেড়িয়া খামারপাড়া এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে একটি পিকনিকে সময় কাটিয়ে সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়িতে ঢুকে নিজের ঘরে শুয়ে পড়ে। আচমকাই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ প্রতিবেশীরা বাড়ির ভিতর থেকে কান্নাকাটি ও আর্তনাদ শুনতে পায়। কান্নার শব্দশুনে এলাকার লোকজন ইন্দ্রনীলদের বাড়ির সামনে যেতেই ঘরের দরজা খুলে জখম অবস্থায় ঘর থেকে বেরিয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশ্বজিতবাবু ও তাঁর স্ত্রী তাপসীদেবী। প্রতিবেশীদের তাঁরা বলেন, ইন্দ্রনীল উন্মাদের মতো আচরণ করছে। আমাদের বৃদ্ধা মাকে পিটিয়ে খুন করেছে। আমাদেরও মারধর করেছে। তবে আমরা পালিয়ে বাঁচলেও, বৃদ্ধা মাকে ও ঘরের মধ্যেই মেরে ফেলেছে। ইন্দ্রনীলের বাবা-মায়ের মুখে ছেলের কীর্তির কথা শোনার পরেই স্থানীয়রা চুঁচুড়া থানায় ফোন করে। রাতে পুলিস এসে কোনওরকমে আরতিদেবীর দেহ উদ্ধার করে ইন্দ্রনীলকে একটি ঘরে বন্ধ করে রেখে যায়। কিন্তু তালা ভেঙে তিনি বেরিয়ে পড়েন। শুধু তাই নয়, ভোর হওয়ার পরে সে কখনও ছাদের কার্নিস আবার কখনও বাড়ির চিলেকোঠা থেকে ঝাঁপ দেবে বলে হুমকিও দিতে থাকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিস। কিন্তু কোনওমতোই তাঁকে বাগে আনতে না পেরে দমকলকে খবর দেয় পুলিস। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়। উপায় না দেখে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কথা বলে পুলিস। এরপর প্রায় চার ঘণ্টা পর পুলিস ইন্দ্রনীলকে ধরে চুঁচুড়া থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে পুলিসের অনুমান, মাদকাশক্ত ছিল ইন্দ্রনীল। নেশার ঘোরেই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন। কারণ কথা বলার সময় ধৃতের আচরণে নেশার লক্ষণ ফুটে উঠেছে।
পুলিস ও পাড়া প্রতিবেশীরা জানিয়েছে, ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনায় খুব মেধাবী ছিল ইন্দ্রনীল। ব্যান্ডেলের একটি নামী ইংরেজি স্কুলের ছাত্র ছিল। পরে শ্রীরামপুর কলেজে পড়াশুনা করে। সেই সময়ে ছাত্র সংগঠনের সভাপতি ছিল ইন্দ্রনীল। ঝরঝরে ইংরেজি বলতে পারা মেধাবী ছাত্রের আচমকা এই আচরণে স্থানীয় বাসিন্দারাও হতবাক। পুলিসের অনুমান, চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছিল ইন্দ্রনীল। তারপরে নেশা করার পর কোনও কারণে উত্তেজিত হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিস সবদিক খতিয়ে দেখছে।