যারা বিদ্যার্থী তাদের মানসিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে। নানা বিষয়ে খুঁতখুঁতে ভাব জাগবে। গোপন প্রেম থাকলে ... বিশদ
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার শেষ দফার লোকসভা নির্বাচনের জন্য কলকাতার বাড়ি থেকে গোসাবা যান ভোলানাথবাবু। তাঁর ডিউটি পড়েছিল সুন্দরবন কোস্টাল থানার কুমিরমারির পুঁইজালি হাইস্কুলের ১০৮ নম্বর বুথে। সেখানে তিনি তৃতীয় পোলিং অফিসার হিসেবে কাজ করছিলেন। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ভোট শেষ হলে তিনি নিয়মমাফিক সব কাজ সেরে অন্য ভোটকর্মীদের সঙ্গে আটটা নাগাদ কুমিরমারি ছেড়ে গোসাবার উদ্দেশ্যে বের হন। তাঁরা সকলেই এম ভি বৈদ্যনাথ নামে ভুটভুটি করে যখন গোসাবায় ফিরছিলেন, সেই সময় রাঙাবেলিয়ার কাছে গোমর নদীতে কোনওভাবে পড়ে যান তিনি। ভোলানাথবাবুর সহকর্মীরা পুলিসকে জানিয়েছেন, ওই সরকারি কর্মী ভুটভুটির যে জায়গায় বসেছিলেন সেখানটা ঢালু ছিল। আচমকা কোনওভাবে তিনি গোমর নদীতে পড়ে যান।
পুলিস জানিয়েছে, বাকি ভোটকর্মীরা আচমকা নদীতে ভারী কিছু পড়ার আওয়াজ শুনে দেখেন, ভোলানাথ ভুটভুটিতে নেই। তাঁরা বুঝতে পারেন তিনি কোনওভাবে ঝাঁকুনিতে নদীতে পড়ে গিয়েছেন। তাঁরা পাড়ে পৌঁছে গোসাবা থানায় খবর দেন। পুলিস এসে ভুটভুটির কর্মীদের সাহায্য নিয়ে রাত ১টার পরে ভোলানাথবাবুর দেহ নদী থেকে উদ্ধার করে। খবর দেওয়া হয় গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্রকে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে রাঙাবেলিয়া ঘাটে অ্যাম্বুলেন্স পাঠালে তাতে করেই ভোলানাথবাবুর দেহ গোসাবা ব্লক হাসপাতলে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁকে মৃত বলে চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন।
এ দিকে ভোলানাথবাবুর পরিজনদের কথায়, রাত দেড়টা নাগাদ ভোলানাথবাবুকে উদ্ধার করা হলেও সোমবার সকালে তাঁর কলকাতার বাড়িতে খবর আসে। প্রথমে তাঁদের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি। শুধু জানানো হয়, দুর্ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ভোলানাথবাবুর বড়মেয়ে-জামাই গোসাবার উদ্দেশে বেরিয়ে যান। বিকেলে ভোলানাথবাবুর তালতলার ১ ব্লকম্যান স্ট্রিটের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক চিলতে ছোট্ট ঘরে পড়শি এবং আত্মীয়দের মাঝে বসে রয়েছেন তাঁর বৃদ্ধা মা। পাশে স্ত্রী এবং বোন। পড়শিরাই জানান, রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ভোলানাথবাবু বাড়িতে ফোন করে জানান তিনি অন্য ভোটকর্মীদের সঙ্গে বুথ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। ভুটভুটিতে ফিরছেন। সোমবার সকালে বাড়ি আসবেন। ভোলানাথবাবুর ছোট মেয়ে টুম্পার কথায়, ভুটভুটির আওয়াজে কিছু শোনা যাচ্ছিল না বলে বাবা পরে ফোন করবে বলে জানান। আর ফোনে পাইনি বাবাকে। তারপর যতবার ফোন করেছি বন্ধ পেয়েছি।
তিনি এও বলেন, আগে দিদি ফিরুক। তারপরই জানতে পারব, বাবার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিসের অনুমান, লঞ্চে করে আসার সময়ে হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ভোলানাথবাবু। কোনওভাবে লঞ্চের ঝাঁকুনিতে পড়ে যান তিনি। পুলিস দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। এদিকে, শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করে জানিয়েছে, আমরা এই বিষয়টি মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের নজরে আনতে চলেছি এবং তাঁর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। তদন্তের স্বচ্ছতার জন্য গোটা ময়নাতদন্তের ভিডিও রেকর্ডিং করার আবেদন জানাচ্ছি। পাশাপাশি মৃত ভোটকর্মীর পরিবারবর্গকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।