উপস্থিত বুদ্ধি ও সময়োচিত সিদ্ধান্তে শত্রুদমন ও কর্মে সাফল্য। ব্যবসায় গোলযোগ। প্রিয়জনের শরীর-স্বাস্থ্যে অবনতি। উচ্চশিক্ষায় ... বিশদ
সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় খুন হন সেরিনা বিবি নামে এক গৃহবধূ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশ কোপানো হয়। প্রথমে ঘটনার তদন্ত শুরু করে জেলা পুলিস। জানা যায়, এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে মৃতার স্বামী ও তার দুই আত্মীয়। তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন, হাফিজুলের সঙ্গে একাধিক মহিলার সম্পর্ক ছিল। যা নিয়ে প্রথম থেকেই প্রতিবাদ করছিলেন সেরিনা। পরে তিনি জানতে পারেন, হাফিজুল আরও একজনকে বিয়ে করেছে। এরপরই সম্পর্কের অবনতি হয়। পুলিস জানিয়েছে, তখনই অভিযুক্ত তার প্রথম স্ত্রীকে খুন করার পরিকল্পনা করে। সেই মতো কিছুদিন তাঁর সঙ্গে থাকতে শুরু করে। এরপর হঠাৎই একদিন খুন করে স্ত্রীকে।
ঘটনায় হাফিজুলের দুই আত্মীয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিস। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার না করায় তাঁর পরিবারে ক্ষোভ ছিল। জেলা পুলিসের তদানীন্তন শীর্ষকর্তাদের কাছে এই নিয়ে তাঁরা দরবারও করেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। এরপরই সুবিচার চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করে তার পরিবার। আদালত মামলার তদন্ত সিআইডিকে করতে নির্দেশ দেয়। ২০১৮ সালে তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় হাফিজুলকে। তাকে ট্রেনে করে কলকাতায় নিয়ে আসার সময় সিআইডির অফিসারদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় সে। এই ঘটনার পর ক্লোজ করা হয় এসকর্টের দায়িত্বে থাকা অফিসারকে। এলাহাবাদ জিআরপিতে সিআইডি একটি মামলা রুজু করে।
প্রাথমিকভাবে তদন্তকারী অফিসাররা সন্দেহ করছিলেন, অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশেই লুকিয়ে রয়েছে। সেইমতো সেখানে খোঁজখবর চালানো হচ্ছিল। সেখান থেকেই জানা যায়, হাফিজুল জুতো মার্কেটে ভ্যানচালকের কাজ করে। জুতো পৌঁছে দিয়ে আসাই তার কাজ। তবে পুলিসের হাতে ধরা পড়ার ভয়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় কাজও করছে। কোথাও বেশিদিন থাকছে না। আগ্রার হিংচিমান্ডিতে সে কাজ করছে খবর পেয়ে একটি টিম সেখানে যায়। জুতো ব্যবসায়ীর ভেক ধরেন তদন্তকারী অফিসাররা। মার্কেটে বেশ কিছু দোকানদারের সঙ্গেও কথা হয় তাঁদের। অফিসাররা দোকানদারদের জানান, সম্প্রতি নতুন জুতো ব্যবসা শুরু করেছেন তাঁরা। এখান থেকে জুতো নিয়ে যাবেন কলকাতায়। কথাবার্তার ফাঁকে কায়দা করে হাফিজুলের সম্বন্ধে জেনে নেন। কোন দোকান থেকে সে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ করছে, তার তথ্য জোগাড় করে ফেলেন তাঁরা। এরপর সেখানে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় হাফিজুলকে। তাকে স্থানীয় আদালতে তোলা হলে বিচারক চারদিনের ট্রানজিট রিমান্ডে ধৃতকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। এরপরই তাকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়।