শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানিংয়ের বিভিন্ন এলাকায় মাদার এবং যুব সংগঠনের মধ্যে এলাকা দখল ঘিরে লড়াইয়ে মাঝেমধ্যেই উত্তপ্ত হয়েছে। শাসকদলের নেতাদের একাংশের মতে, একজন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে নিজেদের দ্বন্দ্বে যে খুন হতে হবে, তা কোনওদিনই আঁচ করা যায়নি। তবে এও ঠিক, শবনম নস্করকে প্রধান করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। যা তুমুল আকার নিয়েছিল সাম্প্রতিককালে। যদিও ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের দাবি, বিজেপির আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই খুন করেছে তাঁদের দলের পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে। এলাকায় অশান্তি পরিস্থিতি নতুন করে তৈরির জন্য বিজেপি সন্ত্রাসের আবহ তৈরি করছে। জেলা তৃণমূলের সভাপতি শুভাশিস চক্রবর্তীও দাবি করেছেন, বিজেপি সব জায়গায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে। রাতের অন্ধকারে তাঁদের কর্মীদের উপরে হামলা করছে। পুলিসকে বলা হয়েছে তদন্ত করে অভিযুক্তদের ধরতে।
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি সুনীপ দাস যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই খুন হতে হয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামীকে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শবনম নস্করের স্বামী কার্তিক ওরফে রাজু নস্কর সাতমুখো বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ঝাঁকরির মোড়ের কাছে সেই সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁর রাস্তা আটকে গুলি চালায়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। এলাকা ফাঁকা থাকায় কাজ সেরে তড়িঘড়ি পালায় দুষ্কৃতীরা। রাতেই অপরাধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পুলিস আসার পর মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখায় সাধারণ মানুষ। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিস পিকেট বসানো হয়েছে।
পুলিস জানিয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, রাতে ওই এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা কেন ছিল না? কেন পুলিসি টহলদারি থাকে না? স্থানীয়দের কথায়, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকে তৃণমূল ও তার যুব সংগঠনের যে লড়াই শুরু হয়েছে, তা শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ। যে কারণেই এই ঘটনাগুলির বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই মারপিট-খুনের ঘটনা বাড়বে।
অন্যদিকে, রবিবার রাতেই কুলতলির জালাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের কাওরাখালির পয়দা গ্রামে সুরথ মণ্ডল নামে যুব তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় পুলিস পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের খোঁজে জোর তল্লাশি শুরু করেছে। ধৃতদের জেরা করে পুলিস জানার চেষ্টা করছে এই খুনের পিছনে কি রাজনৈতিক কারণ রয়েছে? না কি অন্য কোনও কারণেই ওই তৃণমূল কর্মীকে খুন করা হয়েছে? তাঁর স্ত্রী মণিহার মণ্ডল সোমবার কুলতলি থানায় স্বামীর খুনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মণিহারের অভিযোগ, এই খুনের পিছনে ২২ জন রয়েছে। তবে পুলিস জানতে পেরেছে ১০ জন দুষ্কৃতী এই অপারেশন চালিয়েছে। তাদের মধ্যে সাদিক ও তার সাঙ্গপাঙ্গ রয়েছে। তারা সুরথের প্রতিপক্ষ বলেই জানতে পেরেছে পুলিস। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরথ জাল পুরাতত্ত্বের সামগ্রীর ব্যাবসা করত। যা নিয়ে তার বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর তুমুল বিবাদ ছিল। সুরথের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে কুলতলি ও জয়নগর থানা এলাকায়। প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে পুলিস গ্রেপ্তারও করেছিল। গত বছর জেল থেকে তিনি বেরিয়েছে। সম্প্রতি সুরথের সঙ্গে তার বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে কয়েকদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। তার জেরেই সুরথকে খুন করা হতে পারে বলে পুলিস প্রাথমিকভাবে মনে করছে।