নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মান ২৫ মিলিয়ন গ্যালন (দিন পিছু) পানীয় জল উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তখন দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ, গড়িয়া, ঢাকুরিয়া, যাদবপুর ইত্যাদি এলাকার গভীর নলকূপগুলি অনেকাংশেই বন্ধ করে দেওয়া যাবে। পাশাপাশি এই এলাকাগুলির বিভিন্ন অংশে ছোট সাইজের বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুরসভা। অনেক সময় দেখা যায়, পর্যাপ্ত জল থাকলেও কাছাকাছি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন না থাকায় সেই জল কল থেকে খুব আস্তে পড়ছে। সেই সমস্যার মোকাবিলায় এই উদ্যোগ। এই দুই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভরতা অনেকটাই কমে যাবে এবং বাড়ি বাড়ি পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া যাবে বলে আশ্বাস দিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে মেয়র হিসেবে প্রথমবার যোগ দিলেন তিনি। সেই অধিবেশনেই ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার চয়ন ভট্টাচার্য তাঁর প্রস্তাবে বলেন, পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে গিয়ে বাধ্য হয়ে বিগ ডায়া টিউবওয়েল বসানোর অনুমোদন দিতে হচ্ছে। বহুতল আবাসনগুলি থেকে ক্রমাগত এজন্য অনুরোধ, আবেদন আসছে। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জলস্তরকে রক্ষা করা পরিবেশের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন। তাই বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আবেদন করেন তিনি। মেয়র বলেন, কেউ যখন দায়িত্ব নেয়, তাঁর মনে কিছু একটা পরিকল্পনা থাকে। আমিও দায়িত্ব নেওয়ার পর ভেবেছি, যেভাবেই হোক নলকূপের জলের উপর নির্ভরতা আমাদের কমাতে হবে। রাজ্য সরকারের দেওয়া ৮৭ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকায় গার্ডেরিচে জল উৎপাদন প্রকল্প তৈরির কাজ হচ্ছে। সেই কাজ আর এক বছর থেকে দেড় বছরের মধ্যে শেষ হবে। এখন গার্ডেনরিচ প্রকল্পে প্রতিদিন ১৮৫ মিলিয়ন গ্যালন জল উৎপাদন হয়। এই পরিমাণ জলও সঠিকভাবে বণ্টনের জন্য আমরা এলাকায় এলাকায় বুস্টার পাম্পিং স্টেশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ঢাকুরিয়ার বাবুবাগানে পার্কে এরকমই একটি ছোট বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা এখনও শুরু হয়নি বলে অধিবেশনে প্রশ্ন তোলেন স্থানীয় কাউন্সিলার মধুছন্দা দেব। মেয়র জানান, ওখানে একটি দুর্গাপুজো হয়। ওরা কিছু আপত্তির কথা আমাদের জানিয়েছিল। বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তো হবেই। কিন্তু দুর্গাপুজোও যাতে বন্ধ না হয়ে যায়, সেটা দেখে করতে পারলে ভালো হয়। সেই জন্য আমি ওই পুজো কমিটিকে ডেকে পাঠিয়েছি। শীঘ্রই আলোচনা করে সমাধান সূত্র বার করা হবে। মধুছন্দাদেবীকে আশ্বস্ত করে তিনি বলেন, এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ওখানে পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে। ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শকুন্তলা পার্কে বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরির কাজও শীঘ্রই শেষ হবে বলে জানান মেয়র।