বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
এদিন সকাল থেকেই শ্যামবাজার, যাদবপুর-সহ একাধিক জায়গায় অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছিল বামফ্রন্ট। এমনই এক কর্মসূচিতে শামিল ছিলেন প্রাক্তন ছাত্রনেতা তথা সিপিএমের যুব নেতা শতরূপ ঘোষ। কসবায় ধর্মঘটের সমর্থনে কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম, সেখানেই ছিলেন তিনি। সেখানে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বাম নেতা কর্মীদের। শতরূপ ঘোষের অভিযোগ, কসবায় মহিলা কর্মীদের গায়ে ধাক্কা দিয়েছে একজন পুলিস অফিসার। তার প্রতিবাদ করতে গিয়েই শতরূপ বলে বসেন, ক্ষমতায় এলে ওই পুলিস অফিসারকে কসবায় নিয়ে এসে কান ধরে ওঠবস করাবেন তিনি।
এদিন সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে যাদবপুরে মিছিল করেন ধর্মঘটীরা। সেই মিছিলের প্রথম সারিতে থাকা সুজন চক্রবর্তীকে আটক করা হয়। আটক করা হয় আরও বেশ কয়েক জন বাম কর্মী-সমর্থককে। এই নিয়ে পুলিসের সঙ্গে ধর্মঘটীদের তুমুল ধস্তাধস্তি হয়। পরে আটক হওয়া ওই ধর্মঘটীদের গ্রেপ্তার করা হয়। তবে রাতে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক আপ থেকে এসইউসির ধর্মঘটীরা ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নিলেও বামেরা নেননি। এরপর তাঁদের নিঃশর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশ্য এদিন সব থেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে বড়তলা থানার শোভাবাজারে। সেখানে একটি বেসরকারি রুটের বাসের তলায় আগুন ছুঁড়ে দেন ধর্মঘটীরা। সেই সময় বাসযাত্রীরা আতঙ্কে নেমে আসেন। চলন্ত বাসের নীচে আগুনের জেরে এলাকাতেও চাঞ্চল্য ছড়ায়। এদিকে, এই ঘটনায় পুলিস তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
এদিন রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। সরকারি বাসের সংখ্যা যথেষ্ট ছিল। যদিও ক্যাব বুক করতে গিয়ে অনেকেই নাজেহাল হয়েছেন। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ক্যাব বুক করতে গিয়ে ভাড়া দেখে অনেকেরই চোখ কপালে ওঠে। একই অবস্থা হয় শহরের মধ্যেও। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস থেকে অনেকে ধর্মতলা বা খিদিরপুরের দিকে যাওয়ার জন্য ক্যাব বুক করতে গিয়ে দেখেন, ভাড়া ৫০০ থেকে ৬০০ হাঁকিয়েছে সংস্থাগুলি। ডায়মন্ডহারবার রোডের উপরে অনেক ধর্মঘটী যান চলাচল আটকানোর চেষ্টা করেন। মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার বেশ কয়েকটি রাস্তাতে গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উত্তর কলকাতাল সি আর অ্যাভিনিউ, গিরিশ পার্ক, শ্যামপুকুর, আর জি কর রোড, বি টি রোডের উপরে পুলিসের সঙ্গে বিক্ষিপ্ত ঝামেলা হয় ধর্মঘটীদের।
এদিকে, স্কুল-কলেজে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাজিরা মোটের উপরে স্বাভাবিক থাকলেও পড়ুয়াদের হাজিরা ছিল কম। বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল ঝুঁকি না নিয়ে আগেই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল। এদিন জানা যায়, বেশ কয়েকটি স্কুল আইসিএসই (দশম শ্রেণীর) টেস্ট পরীক্ষাও পিছিয়ে দিয়েছে। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকাল থেকেই গেটের বাইরে বিক্ষোভ অবস্থান করে এসএফআই। প্রধানমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে তারা। অধ্যাপকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে গেলে তাঁদেরকে ধর্মঘটীরা আবেদন করেন, ‘স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকবেন না। বন্ধকে সমর্থন করুন।’ যদিও সেই আর্জি উপেক্ষা করেই তাঁরা সেখানে ঢোকেন। এদিন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস চত্বরও খাঁ খাঁ করছিল। একাধিক বিভাগের গেটে তালা দেওয়া ছিল।