প্রেম-প্রণয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে। কারও কথায় মর্মাহত হতে হবে। ব্যবসায় যুক্ত হওয়া যেতে পারে। কর্মে সুনাম ... বিশদ
দু’সপ্তাহে ৪০-এর বেশি, দেড় মাসে প্রায় ৫০-এর কাছাকাছি আবাসনের মিটার বক্সে একের পর এক বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্কিত কেষ্টপুরবাসী। কী কারণে মিটার বক্সে বিস্ফোরণ হচ্ছে বা আগুন ধরে যাচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট হচ্ছে না কারও কাছেই। ফলে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। সম্প্রতি একটি আবাসনের সিসি টিভি ফুটেজে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবককে মিটার বক্সের কাছে কিছু করতে দেখা যায়। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থার আধিকারিকদের দাবি, বিদ্যুতের লাইনে কোথাও কোনও বিভ্রাট এখনও পর্যন্ত ধরা পড়েনি। সিসিটিভি’র ফুটেজে যা দেখা গিয়েছে, তাতে বাইরে থেকে মিটার বক্সে কিছু করার ফলেই এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার আরও একাধিক আবাসনেই সিসি টিভি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু, সেখানে মিটার বক্সে বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার আগে কোনও যুবকের ছবি ক্যামেরাতে ধরা পড়েনি।
এখানেই বাসিন্দারা রীতিমতো আতঙ্কিত। মহিষবাথান কৃষ্ণপুর উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দা মানস দাশগুপ্ত বলেন, এবিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে তাঁরা ইতিমধ্যে বাসিন্দাদের স্বাক্ষর করা একটি স্মারকলিপি এই সপ্তাহে বিদ্যুৎ দপ্তরে জমা দিতে চলেছেন। সেখানে এলাকার বিদ্যুতের লাইনকে মাটির তলা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার আবেদন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রত্যেকটি ট্রান্সফর্মার, মিটার বক্স এবং আবাসনের আর্থিং ব্যবস্থাকে পরীক্ষা করারও আবেদন জানানো হচ্ছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি সত্যিই উদ্বেগজনক। তাঁদের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছিলেন। বিদ্যুৎ সরবরাহের জায়গায় এখনও কোনও বিভ্রাট ধরা পড়েনি। আশা করা যায়, ওই যুবক ধরা পড়লে এই ঘটনার পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। তবে তিনি বাসিন্দাদের আতঙ্কিত হতে নিষেধ করেছেন। শোভনদেববাবু আরও বলেন, বাসিন্দাদের ভয় কাটাতে তিনি কয়েকদিনের মধ্যেই এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলবেন।
মন্ত্রী যতই বলুন না কেন, বাসিন্দাদের আতঙ্ক কিছুতেই পিছন ছাড়ছে না। কেষ্টপুর রবীন্দ্রপল্লির গ্যাস গোডাউন গলির দুটি আবাসনের বাসিন্দা কাঞ্চন নন্দী এবং মৃণাল পালের কথায়, ঘটনার দিন যেখানে আগুন জ্বলার দৃশ্য দেখতে হয়েছে, তাতে এখনও মাঝেমধ্যেই আঁতকে উঠছি। সেদিন কিছুক্ষণ আগেই পাশের একটি আবাসনে আগুন লেগেছিল। কিন্তু তখনও বোঝেননি, তাঁদের আবাসনের মিটার বক্সেও আগুন লাগতে পারে। স্থানীয় কলামন্দিরের একটি আবাসনের বাসিন্দা উত্তম দে, প্রণয়কান্তি বিশ্বাস, তুষারকান্তি চক্রবর্তী বলেন, ২৩ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁদের আবাসনে তিনবার মিটার বক্সে আগুন লেগেছে। এই অবস্থায় তাঁরা কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না।
উল্লেখ্য, কেষ্টপুরের এই দুই এলাকা ছাড়াও হানাপাড়া, ঘোষ স্যুইটসের গলি, পঞ্চায়েত গলি, নোনাপুকুর, কমল পার্ক, ফেডারেল ক্লাব চত্বরের গলি, রবীন্দ্রপল্লি বাজার গলি সর্বত্রই একাধিক আবাসনে এরকম ঘটনা ঘটেছে। এমনকী সম্প্রতি হেলাবটতলাতেও একটি আবাসনে একইরকম ঘটনা ঘটেছে।