সপরিবারে নিকট ভ্রমণের পরিকল্পনা। সহকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে শত্রুতা করতে পারে। নতুন কোনও কর্মপ্রাপ্তি বা কর্মক্ষেত্রে বদলির ... বিশদ
রবিন, মোহন, পুষ্পা রানি, রৌনকরা ১০ জন মিলে এসেছেন রাসমাঠে বসা সার্কাসে। এঁরা সবাই মণিপুরে থাকেন। বয়সে যুবক-যুবতী। সার্কাসে তাঁরা আকর্ষণীয় সব খেলা দেখান। সার্কাসে অত্যন্ত মনোনিবেশ করে খেলা দেখানোর নিয়ম। কিন্তু এখন মনোসংযোগ বারবার ব্যাহত হচ্ছে তাঁদের। মন চলে যাচ্ছে থৌবালে। সেখানে কেমন আছে বাড়ির সব লোক? ভালো আছে তো? মোবাইল খুলে নজর রাখছেন সাম্প্রতিক পরিস্থিতির উপর। খোঁজ নিচ্ছেন ফোন করে। রবিন বলেন, ‘ভাগ্য ভালো। এখন পর্যন্ত থৌবালে কিছু হয়নি। স্বাভাবিকই আছে এলাকা। কিন্তু কতদিন তা থাকবে জানি না।’
বারুইপুরের রাসমাঠে সার্কাসের তাঁবু পড়েছে। প্রতিদিন তিনটি করে শো। এই রোলেক্স সার্কাসের মূল আকর্ষণই হলেন মণিপুরের খেলোয়াররা। রবিন বলেন, ‘খেলা দেখাচ্ছি। কিন্তু মন তো পড়ে আছে আমাদের বাড়িতে। বাবা-মা সেখানে আছেন। তাঁদের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কথা বলতে পারছি। কিন্তু কতদিন পারব জানি না। খুবই চিন্তার মধ্যে রয়েছি।’ রবিনের স্ত্রী পুষ্পা। এখানে স্বামীর সঙ্গে আছেন। একটি শো শেষ করেই তাঁবুতে ছুটছেন ফোন করে পরিবারের খোঁজ নিতে। পুষ্পা বলেন, ‘এ রকম মণিপুর কোনওদিন দেখতে হবে, দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। ইম্ফলে অনেক আত্মীয়স্বজন আছেন। তাঁদের কোনও খবরই নিতে পারছি না। ইন্টারনেটে পাচ্ছি না। এখানে দর্শকদের মনোরঞ্জন করছি আর মন পড়ে আছে মণিপুরে।’ রৌশন বলেন, ‘থৌবালে আমার স্ত্রী আছেন। ওর জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে। খেলাতে ঠিকমতো মন দিতে পারছি না।’
উদ্বিগ্ন মানুষগুলির চোখেমুখে ফুটে উঠেছে উৎকণ্ঠা। মণিপুরের বাসিন্দারা হাশিখুশি থাকেন বলে দেশজুড়ে সুনাম আছে তাঁদের। এখন সে হাসি মুখে কালো ছাপ। দৃষ্টি অন্যমনস্ক। মণিপুর জ্বলছে, অশান্ত। সে রাজ্যের বহু বহু দূরের বাংলায় বসে থাকা মানুষগুলির মনে একফোঁটা শান্তি নেই।