কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
চলতি আর্থিক বছরের গোড়ার হিসেব বলছে, এরাজ্যে তন্তুজের শোরুমের সংখ্যা ৬৭টি। দেশজুড়ে যে ক’টি শোরুম আছে, তার মোট সংখ্যা ৮২। তবে শোরুমের গণ্ডির বাইরে অনলাইন ব্যবসায় ২০১৪ সালে নামে তন্তুজ। নিজেদের ওয়েবসাইট মারফত সেই বিক্রি শুরু হলেও, পরবর্তীকালে একাধিক সংস্থার সঙ্গে জোট বাঁধে তারা। তার জেরেই বিদেশের মাটিতে পৌঁছচ্ছে তন্তুজের শাড়ি। শুধু জামদানি বা তাঁত নয়, সিল্কও সমানভাবে বিকোচ্ছে সেখানে, দাবি করেছেন এখানকার কর্তারা। কত টাকার ব্যবসা হচ্ছে অনলাইনে? সংস্থার হিসেব, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে তন্তুজ’র অনলাইন ব্যবসা ছিল ৮৫ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার। এক বছর পর, অর্থাৎ গত আর্থিক বছরে সেই অঙ্ক কোটি টাকা ছাড়ায়। তা হয় ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকার। রপ্তানিও একই সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে, দাবি করেছেন কর্তারা। তাঁরা বলেন, গত বছরে সংস্থার মোট রপ্তানি হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকার। সেক্ষেত্রে চীন এবং রাশিয়াই মূল ক্রেতা, জানিয়েছেন তাঁরা। সংস্থার সামগ্রিক ব্যবসা গত কয়েক বছরে দ্রুত হারে বাড়ছে, দাবি তাঁদের। গত আর্থিক বছরে তাদের মোট বিক্রি ছিল প্রায় ২৫৩ কোটি টাকার। কার্যকর মুনাফা বা অপারেটিং প্রফিট ছিল ১৪ কোটি ৩২ লক্ষ টাকার। কর্তাদের দাবি, শীঘ্রই তাঁরা নিট মুনাফার দিকে এগবেন।
একটা সময় ছিল, যখন তন্তুজকে সাধারণত এড়িয়েই যেতেন ক্রেতারা। গুণগত মানই হোক, বা পোশাকের ডিজাইনের একঘেয়েমি— বাজার চলতি ফ্যাশনের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারত না এই সরকারি বস্ত্র সংস্থা। তারপর এই উত্তরণ কীভাবে? তন্তুজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রবীন্দ্রনাথ রায় বলেন, আমরা পুরনো ধ্যানধারণা সরিয়ে রাখতে সব দিক থেকে চেষ্টা করছি। গুণমাণ বাড়াতে নিজেরাই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ক্যাম্প করে সরাসরি তাঁতি বা শিল্পীদের থেকে শাড়ি কিনছি। আমরা দক্ষ ডিজাইনার রেখে শাড়ি ও অন্যান্য পোশাকে আধুনিকতা ও বৈচিত্র আনছি। বিশ্বে কোন রংয়ের চাহিদা বেশি, তার বিচার করে পোশাকের রং বাছাই করছি। ডিজিটাল প্রিন্টের দিকে ঝুঁকছি। এমনকী ভালো জাতের সিল্ক ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে আমরা দক্ষিণ ভারত থেকে রেশম কিনছি এবং এখানকার কারিগরদের দিয়ে শাড়ি ও পোশাক তৈরি করছি। এরি বা তসরের মতো সিল্ককে আরও কীভাবে কাজে লাগানো যায়, তার জন্য নতুন ভাবনা আসছে তন্তুজে। গুণমানের পাশাপাশি শোরুমগুলির রূপটানেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি রবীন্দ্রনাথবাবুর। তিনি বলেন, এখন শোরুমগুলিতে পা রাখলে ক্রেতারা অন্যরকম বাতাবরণ উপভোগ করেন।
তন্তুজের কর্তাদের দাবি, এখানকার শাড়ির ব্যবসায় আগ্রহ দেখাচ্ছে দক্ষিণ ভারতও। তামিলনাড়ু সরকারের নিজস্ব হ্যান্ডলুম সংস্থা চলতি আর্থিক বছরেই ১২ লক্ষ টাকার বেশি পোশাক কিনেছে তন্তুজ থেকে। সেসব পোশাক বিক্রি হচ্ছে সরকারি শোরুমে। চলতি বছরে মোটা টাকার পোশাক কেনার জন্য এগিয়ে আসছে কেরল সরকারও। দেশের মাটিতেই ভিন রাজ্যের প্রশাসন যেভাবে তন্তুজ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে, তাতে আরও বেশি উৎসাহ পাচ্ছে রাজ্য সরকার, দাবি করেছেন এখানকার কর্তারা।