নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: লোকসভা ভোট মিটলেও রাজ্যে এখনও ডিজিপি পদে বহাল রয়েছেন আইপিএস অফিসার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়। এসপি থেকে এসডিপিও’র মতো পুলিস প্রশাসনের পদগুলিতে নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত অফিসারদের ইতিমধ্যেই রাজ্য সরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ডিজিপি পদে কমিশন নিযুক্ত সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে এখনও বহাল রেখেছে রাজ্য সরকার। ফিরিয়ে আনা হয়নি রাজীব কুমারকে। তবে কি নিয়মের গেরোতে আটকে যাবেন রাজীব কুমার? তুমুল চর্চা রাজ্যের প্রশাসনিক মহলে! নবান্নের এক সূত্র জানাচ্ছেন, খুব সম্ভবত সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ই এই পদে থেকে যাচ্ছেন। এমনই এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে প্রশাসনে। উল্লেখ্য, মনোজ মালব্যের অবসরের পর রাজীব কুমারকে রাজ্য সরকার কার্যনির্বাহী ডিজিপি (অ্যাক্টিং) পদে নিয়োগ করেছিল। কিন্তু নির্বাচন কমিশন ভোটের আগে তাঁকে সরিয়ে দেয়। প্রথমে দিন কয়েকের জন্য বিবেক সহায় এবং পরে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে ডিজিপি পদে নিয়োগ করে কমিশন। রাজ্য প্রশাসনের একটি মহলের মতে, কমিশন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে ডিজিপি হিসেবে নিয়োগ করেছিল। কিন্তু রাজ্য রাজীব কুমার কার্যনির্বাহী ডিজিপি (অ্যাক্টিং) হিসেবে নিয়োগ করেছিল। ফলে আইনি জটিলতার কারণেই রাজ্যের পক্ষে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে এখন সরানো সম্ভব নয়। কারণ, ডিজিপি পদের মেয়াদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের সুস্পষ্ট গাইড লাইন রয়েছে, একজন রেগুলার ডিজিপির মেয়াদ কমপক্ষে দু’বছর হতে হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, এই গাইড লাইনের জন্যই আপাতত রাজ্যের ডিজিপি পদ থেকে সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়কে সরাতে ইতস্তত করছে রাজ্য সরকার। কেন না, সেক্ষেত্রে আইনি জটিলতার মুখে পড়তে হতে পারে। এ রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত এক প্রভাবশালী বাঙালি আইএএস অফিসার এবং আইএএস লবির একটা বড় অংশ চাইছেন না রাজীব কুমার ডিজিপি পদে ফিরে আসুন। পাশাপাশি এরাজ্যের ভূমিপুত্র তথা প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের হয়ে তদ্বির শুরু করেছে একটি প্রভাবশালী আমলা লবি।
এমনিতেই দক্ষ আইপিএস রাজীব কুমারের সঙ্গে আইএএস লবির সম্পর্ক তেমন মসৃণ নয় বলেই আমলাদের মধ্যে একটা জল্পনা রয়েছে। আইএএস অফিসারকে গ্রেপ্তার করা থেকে শুরু করে একাধিক ইস্যুতে আইএএস লবির একটা বড় অংশ তাঁকে পছন্দ করেন না বলে জনশ্রুতি। সবমিলিয়ে ক্রমশ জটিল হচ্ছে রাজীব কুমারের ডিজিপি পদে ফেরার সম্ভবনা। যদিও এবিষয়ে শেষ কথা বলবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।