গুরুজনের চিকিৎসায় বহু ব্যয়। ক্রোধ দমন করা উচিত। নানাভাবে অর্থ আগমনের সুযোগ। সহকর্মীদের সঙ্গে ঝগড়ায় ... বিশদ
রাত থেকে শুরু হয় মকর সংক্রান্তির পুণ্যস্নান। সাগরের জলে টর্চ হাতে ঘুরছিলেন এক যুবক। কী খুঁজছেন দাদা? প্রশ্ন করতেই মাথা না তুলেই সেই যুবক জানালেন, পয়সা। পুণ্যার্থীরা স্নান করার পাশাপাশি পয়সা ছুঁড়ছেন সাগরের জলে। সেই পয়সা খুঁজতেই রীতিমতো প্রতিযোগিতা চলছে। সেই প্রতিযোগীদের মধ্যে অন্যতম সাগরের বাসিন্দা সঞ্জয় মণ্ডল। জানালেন, ভোররাতে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়েছিলাম। উঠে আসতে কিছুটা দেরি হল। তাও দেড়শো টাকা জোগাড় করতে পেরেছেন। সাফল্যের হাসিসহ জানালেন সঞ্জয়।
বালতি-মগেই ‘অবগাহন’
জলে নামতে ভয়! কিন্তু মকর সংক্রান্তির স্নান না করে যেতে চান না। তাই বিহারের পূর্ণিয়ার গজধর ভাইয়া বালতি-মগ নিয়ে স্নানে এসেছেন। ভোর হওয়ার আগেই পরিবারের অন্যদের সঙ্গে জলের ধারে পৌঁছলেন। বালতিতে জল ভরে মগ দিয়ে ঢালতে শুরু করলেন। তাঁর কর্মকাণ্ড অনেকে মোবাইলে রেকর্ডও করলেন। হাসিঠাট্টাও করলেন অনেকে। সে সব পরোয়া না করে স্নানপর্ব সেরে অন্ধকার পুব আকাশের উদ্দেশে কপালে হাত ঠেকালেন গজধর ভাইয়া।
মেয়ের চিতাভস্ম
তিন বছরের নাতিকে নিয়ে এসেছিলেন রুদ্রনগরের বাসিন্দা চন্দ্রনাথ মাইতি। জলে নেমে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘মারে ভালো থাকিস।’ সদ্য মাতৃহারা নাতি একটু এগিয়ে মাটির ভাঁড় থেকে জলে চিতাভস্ম ভাসিয়ে দিল। বৃদ্ধ জানালেন, কিছুদিন আগে মারণ রোগে কেড়ে নিয়েছে তাঁর আদরের মেয়েকে। নাতিকে নিয়ে চিতাভস্ম পতিতপাবণী গঙ্গার জলে ভাসাতে এসেছেন। শ্রাদ্ধশান্তি হয়ে গিয়েছে। চিতাভস্ম মাটির ভাঁড়ে ভরে ঠাকুরঘরে রেখে দিয়েছিলেন। বললেন, ‘মকর সংক্রান্তি ভালো দিন। মা গঙ্গার কোলে মেয়েকে তুলে দিলাম। মা তো সবাইকে স্থান দেন। আমার মেয়েকেও নিশ্চয় দেবেন।’ বলতে বলতে চেয়ে রইলেন ভেসে চলা ভস্মের দিকে। ঘোলাটে জলে সেই চিতাভস্ম ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল।
ভেঁপুবাবা
সাগরের পাড়ে বসে ক্রমাগত ভেঁপু বাজাছিলেন এক সাধু। কেউ কেউ বিরক্ত হলেও অনেকে বাবার উদ্দেশে পয়সা ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন। জয়নগরের বাসিন্দা ‘ভেঁপুবাবা’ ফি বছর গঙ্গাসাগরে আসেন। তাঁর বক্তব্য, ভেঁপু মহাদেবের পছন্দ। ভগবানের পছন্দের বস্তু দিয়ে ডাকলে তাঁকে সহজে পাওয়া যায়। তাই ভেঁপু বাজিয়ে তিনি ভগবানের সাধনা করছেন।