সামাজিক কল্যাণকর্মে সামাজিক স্বীকৃতি আর সন্মান। গৃহ পরিবেশে চাপ। আর্থক প্রগতি বজায় থাকবে। ... বিশদ
রানাঘাটের ফুলচাষিরা সাধারণত জমিকে তিন ভাগে ভাগ করে গাঁদা চাষ করেন। জমির একটা অংশের গাছে যখন ফুল ধরে, তখন অন্য অংশে বীজ বা কলম থেকে চারা তৈরির প্রস্তুতি চলে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ থেকে অনেক চাষি এখানে কলম চারা নিয়ে আসেন। কিন্তু সেই গাছ বপন করার পর বৃষ্টি শুরু হয়ে যাওয়ায় প্রভাব ফেলেছে চাষে। এই সমস্যাগুলি ছাড়াও লকডাউনের জাঁতাকলে পরে ফুলের চাহিদা কমার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কমেছে দামও।
রানাঘাট ২ ব্লকের নোকারি, ধানতলা এবং পূর্ণনগরে বিশাল ফুলের বাজার রয়েছে। সেখানে আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার ফুলচাষি ফুল এনে নিত্যদিন বিক্রি করেন। গাঁদা ফুলের পাশাপাশি রজনীগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, এস্টার, বেবি, জারবেরা, গ্লাডিওলাস সহ আরও বিভিন্ন রকমের ফুল নিয়ে বাজারে হাজির হন ফুলচাষিরা। এখান থেকে পাইকাররা ফুল কিনে মূলত হাওড়া, কলকাতা এবং অশোকনগরের বাজারে নিয়ে যান। এছাড়াও এখানকার ফুল উত্তরবঙ্গ এবং বিহার হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে নেপাল, ভুটান, অসম, দিল্লি, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, এমনকী বাংলাদেশেও। কিন্তু লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ফুলের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। চাষিদের দাবি, মাস তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের ফুল বাজারগুলি খুলে গেলেও তাতে ফুলের চাহিদা বাড়েনি। তাঁরা জানাচ্ছেন করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ এখন জরুরি দ্রব্য এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ছাড়া অন্য কিছু কেনায় আগ্রহ হারিয়েছেন। তার উপর বিয়ে এবং সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় চাহিদা নেই গাঁদা সহ অন্যান্য ফুলের। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাইরে সেভাবে ফুল যাচ্ছে না, লোকাল মার্কেটে অনেকে ঘুরে ঘুরে ফুল বিক্রি করছেন। আর এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে চরমভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন রানাঘাটের ফুল চাষি থেকে ব্যবসায়ী সকলেই। বেশিরভাগ ফুল বিক্রি না হওয়াতে ফেলে দিতে হচ্ছে। এর সঙ্গে নতুন করে সমস্যা তৈরি করেছে বৃষ্টি। পুরাতন চাপড়ার ফুলচাষি রাজীব বিশ্বাস বলেন, কিছুদিন ধরে টানা বৃষ্টিতে গাঁদা ফুলে দাগ হয়ে যাওয়ায় জমির বেশিরভাগ ফুল ফেলে দিতে হচ্ছে। তার ওপর লকডাউনে ফুলের বাজার একপ্রকার বন্ধ। ফলে আমাদের চরম সমস্যার মধ্যে দিন কাটছে।
সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে ঘর সাজানো সবকিছুতেই ফুলের কদর থাকলেও করোনার কোপে তা এখন অতীত। করোনা থেকে মুক্তি ঘটে দিনবদলের আশায় এখন দিন গুনছেন রানাঘাটের বিপুল সংখ্যক ফুলচাষি।