নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তিলজলায় ৭ বছরের শিশু কন্যাকে ধর্ষণ ও খুনের মামলায় দোষী সাব্যস্ত যুবককে ফাঁসির আদেশ দিল আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালত। নৃশংস ও নক্কারজনক সেই ঘটনার দেড় বছরের মাথায় আজ, বৃহস্পতিবার সাজা ঘোষণা করল আদালত। গত ২০২৩ সালের মার্চ মাসে তিলজলায় এই ঘটনাটি ঘটেছিল। ওই শিশুকন্যার পরিবার জানিয়েছিল, সেইদিন সকালে সে ময়লা ফেলতে বেরিয়েছিল। তারপর থেকে হঠাৎই শিশুটি নিখোঁজ হয়ে যায়। খবর পেয়ে অকুস্থলে আসে পুলিস। আবাসনে শুরু হয় তল্লাশি। পুলিসের গোয়েন্দা আধিকারিকরা এবং তিলজলা থানার পুলিস কর্মীরা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করেন। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়। এরপর ওই আবাসনেরই অন্য একটি ফ্ল্যাট থেকে শিশুটির বস্তাবন্দী দেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে জানা যায়, ওই ফ্ল্যাটেরই এক যুবক এই ঘটনায় অভিযুক্ত। ময়লা ফেলে ফ্ল্যাটে ফেরার সময়ে অভিযুক্ত যুবকটি ওই শিশুকন্যার হাত ধরে তাকে নিজের ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে যৌন নির্যাতন চালায়। পরে তাকে খুন করে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে শিশুটির মাথায় প্রায় ২১টি আঘাতের চিহ্ন মেলে। জানা যায়, শিশুটিকে হাতুড়ি দিয়ে মারা হয়েছিল। পরে শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করা হয়। এই ঘটনায় কলকাতা তথা গোটা রাজ্যেই তোলপাড় হয়েছিল। ২৪ জুলাই ২০২৩ থেকে এই মামলাটির ট্রায়াল শুরু হয়। ৪৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছিল।
আজ দুপুরে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় অভিযুক্ত যুবককে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় আলিপুর আদালত। পাশাপাশি লিগ্যাল এইড-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ১ মাসের মধ্যে মৃতার মায়ের হাতে ১০ লক্ষ টাকা তুলে দিতে হবে। মামলার পর্যবেক্ষনে বিচারক সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন এটি শুধুমাত্র বিরল নয়। বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা। শিশুটির উপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছিল। তার নিজেকে বাঁচানোর মতো ক্ষমতাও ছিল না। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, খুন ছাড়াও অপরহণ, অস্বাভাবিক যৌন নির্যাতন, খুনের তথ্য-প্রমাণ লোপাটের মতো অভিযোগ উঠেছিল।