শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
সরকার তথা রেলমন্ত্রকের অন্দরেই প্রশ্ন উঠছে, সুরক্ষা তহবিলের ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে কী হল? বাজেটে অর্থবরাদ্দের পাশাপাশি ২০১৭ সালে রেলমন্ত্রক ঘোষণা করেছিল, একটি বিশেষ তহবিল তৈরি হচ্ছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার। পাঁচ বছরের মধ্যে সেই তহবিল ব্যবহার করে রেলসুরক্ষা আমূল বদলে ফেলা হবে। খোলনলচে পরিবর্তন করে রেলের দুর্ঘটনা প্রবণতাকে প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনার প্ল্যান ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২২ সালের মধ্যে সেই তহবিল ও কাজ পূর্ণ হওয়ার কথা। অথচ ঠিক পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুন মাসে বালেশ্বরে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ মানুষের মৃত্যু হয়। আর তারও একবছরের মধ্যে কাঞ্চনজঙ্ঘা। অর্থাৎ গাফিলতি অথবা প্রযুক্তিগত ত্রুটি—দুই কারণেই দুর্ঘটনা প্রবণতা বিন্দুমাত্র কমেনি। প্রশ্ন উঠছে ওই ১ লক্ষ কোটি টাকা দিয়ে কী করা হয়েছে? নাকি তহবিল নির্মাণের পরিকল্পনা বিশ বাঁও জলে? তহবিলের নাম ছিল রাষ্ট্রীয় রেল সংরক্ষণ কোষ। ইতিমধ্যেই এই তহবিল নিয়ে প্রশ্ন ও সন্দেহ উত্থাপন করেছিল ক্যাগ। রেলমন্ত্রক বছরে ২০ হাজার কোটি টাকা করে ব্যয় করবে সুরক্ষাখাতে। প্রধানত দু’টি প্রকল্পে—রেলওয়ে ক্রসিং এবং রেল লাইনের সংরক্ষণ। আর দ্বিতীয় অগ্রাধিকার, নতুন কামরা নির্মাণ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, ইঞ্জিনের আধুনিকীকরণ, লোকো পাইলট, সহকারী লোকো পাইলট, গার্ডের প্রশিক্ষণ। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা ছিল, নিয়ম করে পুরনো রেললাইনের সংস্কার ও সুরক্ষা। বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের এবং ৫ হাজার কোটি টাকা করে রেলের। ক্যাগ রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরপর তিন বছরই রেল নিজের প্রদেয় ৫ হাজার কোটি টাকা তহবিলে দেয়নি। উল্টে গড়ে ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা এই তহবিল থেকে নিয়ে অন্য খাতে ব্যয় করা হয়েছে।
রেলের বার্ষিক রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে, গত ৬ বছর ধরে লাগাতার রেলমন্ত্রক পুরনো রেললাইনের সংস্কার, মেরামতি, আধুনিকীকরণে বেশি জোর দেওয়ার পরিবর্তে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে নতুন রেলপথ ঘোষণায়। চমকদার প্রচারের জন্যই এই উদ্যোগ বলে একাধিকবার অভিযোগ তোলা হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য রেল ব্যয় করেছে ৮০ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা। কিন্তু পুরনো রেললাইনকে নিরাপদ রাখার কাজে? ৫৪ হাজার কোটি টাকা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় প্রথম চালু করেন স্বয়ংক্রিয় অ্যান্টি কলিশন সিস্টেম। যা স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম। ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই কবচ রেল ট্র্যাকে বসানো থাকে। এদিন দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রচুর ট্রেন বাড়ানো হয়েছে। বিভিন্ন সময় ট্রেন দুর্ঘটনার পরও কবচ চালু করার ব্যাপারে রেলমন্ত্রকের টনক নড়েনি। অথচ, বর্তমান রেলমন্ত্রীর সবথেকে জোরালো দাবি, ভারতীয় রেলকে ১০০ শতাংশ সুরক্ষিত করার জন্য আনা হয়েছে অপারেশন কবচ। অথচ এখনও এই বহুশ্রুত দাবি কার্যকর হয়নি সিংহভাগ জোনেই। গত বছর বালেশ্বরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত তিন ট্রেনেও যেমন এই রক্ষাকবচ ছিল না, একবছর পর কাঞ্চনজঙ্ঘাতেও নেই কোনও কবচ!