নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বিরোধ। সে ঘটনাকে কেন্দ্র সোমবার তৃণমূলের প্রাক্তন ও বর্তমান কাউন্সিলারের দ্বন্দ্ব বেধে গেল ভাটপাড়ায়। তা গালিগালাজ থেকে হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। জগদ্দল থানা ও আঁতপুর ফাঁড়ির পুলিস গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামও এলাকায় ছুটে যান। পুলিস জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ভাটপাড়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার অভিমন্যু তিওয়ারি। এই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলার সৌরভ সিং। সৌরভবাবু বিজেপি নেতা অর্জুন সিংয়ের ভাইপো। এবার তিনি বারাকপুরের নবনির্বাচিত সাংসদ পার্থ ভৌমিকের ইলেকশন এজেন্ট ছিলেন। প্রাক্তন ও বর্তমান দুই কাউন্সিলারেরই দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে। এঁদের দু’জনের পরিচিত প্রদ্যুৎ পাল নামে আঁতপুরের এক ইমারত দ্রব্যের ব্যবসায়ী। প্রদ্যুৎবাবুর অভিযোগ, কাজের সুবাদে সৌরভ সিংয়ের কাছে তার লক্ষাধিক টাকা পাওনা রয়েছে। সেই টাকা চাওয়ার পর সৌরভের নাম করে তাঁকে ফোনে হুমকি দেওয়া হয়। আতঙ্কিত হয়ে তিনি জগদ্দল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, সোমবার সকালে সৌরভবাবু দলবল নিয়ে বাড়িতে চড়াও হন। হুমকি ও গালিগালাজ করেন। সে খবর পেয়ে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার অভিমন্যু তিওয়ারি ঘটনাস্থলে আসেন। তারপর দু’পক্ষের বচসায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কথা কাটাকাটি, গালিগালাজ চলতে থাকে। উত্তেজনা চরমে উঠলে দু’পক্ষের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। জগদ্দল থানার পুলিস পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সৌরভবাবু বলেন, ‘আমি ওই ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় ১০লক্ষ টাকা পাই। তবে এদিনের গণ্ডগোলের সঙ্গে ওই বকেয়া টাকার কোনও যোগ নেই। শুনেছি, ওই ব্যবসায়ীকে ফোন করে কেউ ধমকেছে। তিনি নাকি সম্পর্কে আবার ওই ব্যবসায়ীর ভাগ্নে হন। সম্পূর্ণটা মামা-ভাগ্নের বিষয়। তা নিয়ে এদিন গণ্ডগোল বেধেছিল। আমি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে টিটকিরি করা হয়। প্রতিবাদ করেছি।’ এর পাল্টা বর্তমান কাউন্সিলার অভিমন্যু তিওয়ারি বলেন, ‘ওই ব্যবসায়ী তাঁর বকেয়া টাকা চাওয়াতে পাল্টা চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছিল। সে জন্য এদিন সকালে ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা হয়। আমি কাউন্সিলার হিসেবে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকেও গালিগালাজ করা হয়েছে। সাংসদ ও বিধায়ককে সমস্ত কিছু জানিয়েছি।’ বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, ‘শান্ত এলাকাকে নতুন করে অশান্ত করা যাবে না। এই জিনিস বরদাস্ত করা হবে না। এলাকার উন্নয়নই এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য। সেদিকেই সাংসদ নজর দিতে বলেছেন।’