শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
জানা যায়, বড় সরকার বাড়ির পুজো এবার ২৯০ বছরে পা রাখল। বড় সাদা দালান বাড়ির ভেতরে মায়ের মূর্তি তৈরির কাজ চলছে। এত বছর ধরে যে মৃৎশিল্পীর পরিবার প্রতিমা তৈরি করেছিলেন, তাঁদের উত্তরসুরিরাই এখন দায়িত্ব সামলান। সেই সঙ্গে মায়ের মূর্তির তৈরির কাজও প্রায় শেষের মুখে। এখানে মায়ের মুর্তি একচালির ডাক সাজের। তবে মৃৎশিল্পীরা কেবল রঙের কাজ করেই বাড়ি চলে যান। মায়ের চুল লাগানো থেকে শুরু করে গয়না, অস্ত্র পরানো সমস্ত কিছুই পরিবারের সদস্যরা নিজের হাতে করেন। একেবারে দালান বাড়ির উত্তরদিকে মায়ের মন্দিরটি অবস্থিত।
অন্যদিকে, দালান বাড়ির পাশেই রয়েছে ছোটবাড়ির দুর্গামণ্ডপ। এই পুজোর রীতিনীতি এক হলেও বেশ কিছু পার্থক্য শোনা যায়। এবার এই পুজো ১২৯ বছরে পা রাখল। এখানেও মাকে নিজের হাতেই শাড়ি, গয়না পরান পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু বেনারসি কিংবা ধুতি কেটে পরানো চলে না। একেবারে গোটা অবস্থাতেই তা পরাতে হয়। ষষ্ঠীর দিন সকলে মিলে একসঙ্গে মাকে সাজাতে থাকেন। ১২ কেজি সোনা, ৩২ কেজি রুপোর গয়নার সাজে দুর্গা-পরিবার সেজে উঠেন। জমিদারবাড়ির এই দুই পুজো দেখতে দূর দূরান্ত থেকে ভক্তরা ভিড় জমান। এই পুজোর ইতিহাস বলছিলেন পরিবারের উত্তরসুরি জয়দেব সরকার, সায়ন সরকাররা। তাঁরা বলেন, এই সুরুল এলাকায় ১৭৫০ সালের আশপাশে প্রচুর শিবমন্দির ছিল। ভরতচন্দ্র ঘোষের মাধ্যমেই এখানে সরকার পরিবারের সূচনা হয় একপ্রকার। প্রথমে ফরাসি ও পরে ইংরেজদের মাধ্যমে দাদন (ঋণ) তোলার কাজ করেন। পরে বর্ধমান মহারাজ তাঁকে জমিদার বলে মেনে নেন। পরে জমিদারি প্রথার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুজোরও শুরু হয়। তবে ভাইয়ে ভাইয়ে বিবাদের কারণে আজ থেকে ১২৮ বছর আগে আলাদা করে আরেকটি দুর্গাপুজো শুরু হয়। কথিত আছে, সারদাসুন্দরী পুজো দিতে গিয়ে দেখেন মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তারপর ভাইয়েরা বিবাদে না গিয়ে আলাদা করে ছোটবাড়ির দুর্গাপুজো শুরু হয়। এখনও একেবারে সময়ক্ষণ দেখে পুজো চলে। সপ্তমীর সকালে কলাবউকে নাচতে নাচতে স্নান করিয়ে আনা হয়। তিনদিন বলিদান চলে। ১০৮ পদ্ম দিয়ে মায়ের বিশেষ পুজো হয়। আরও একটি উল্লেখিত বিষয়, ছোট বাড়ির দুর্গাপ্রতিমায় ছাঁচের মূর্তি চলে না। হাতে করে মূর্তি বানাতে হয়। ষষ্ঠীর দিন বাড়ির ছেলেমেয়েরা নিজের হাতে দেবতাদের সাজিয়ে তোলেন। এখানে ঢাক বাজে না, মূলত ঢোল বাজিয়েই মায়ের পুজো হয়।
অন্যদিকে বড়বাড়ির উত্তরসুরি শিবপ্রসাদ সরকার বলেন, আমাদের প্রায় ২৫০টি পরিবার আছে। তাঁদের অনেকেই দেশে-বিদেশে নানা জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। তাঁরা সকলেই এই পুজোর দিন একসঙ্গে এসে মিলিত হন। মিষ্টান্ন, লুচি ভোগ দেওয়া হয় মাকে।