কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
ট্যাক্সি মালিক অনেকেই চালকের হাতে গাড়ির চাবিটি তুলে দিয়েই নিজ দায়িত্ব সেরে ফেলেন। গাড়ির হাল হকিকৎ নিয়ে তাঁরা এতটুকু মাথা ঘামান বলে মনে হয় না। তাঁরা নিজেরা রাস্তায় পরিষেবা দেন না বলে যুক্তি খাড়া করে যাত্রী হয়রানির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে চান। অথচ, ব্যবসাটা তাঁদেরই। আবার, আইন মেনে পরিষেবা দেওয়ার কথা ট্যাক্সি ইউনিয়নগুলি বললেও তাতে কাজের কাজ যে আদৌ হয় না তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। ট্যাক্সি ইউনিয়নের নেতারা চালকদের নিয়ে সংগঠন করেন, অথচ চালকদের উপর তাঁদের কোনোরকম নিয়ন্ত্রণ যে নেই তা স্পষ্ট। চালকদের একাংশের অসৎ উপায়ে আয় করার কৌশলটি বছরের পর বছর বহাল রয়েছে, অথচ তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। এর উপর মিটারে গন্ডগোল বা ভাড়ার বিল না-দেওয়ার বিষয় তো আছেই। ট্যাক্সিতে ফেলে-যাওয়া টাকা বা গহনা যাত্রীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ট্যাক্সি চালকের সততা নিয়ে খবর মাঝে মধ্যে সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। কিন্তু চালকদের একাংশ প্রায় প্রতিদিন যে অমানবিকতার নজির রাখেন তা প্রকাশিত হয় ক্বচিৎ। মুখের উপর ‘যাব না’ বলে অথবা কিছু না-বলেই অসুস্থ যাত্রী বা রোগীকে গন্তব্যে নিয়ে যেতে প্রত্যাখ্যান করার ঘটনা হামেশাই ঘটে। যেহেতু হলুদ ট্যাক্সিগুলি ব্যক্তি মালিকানায় চলে সেহেতু যাত্রী প্রত্যাখ্যান রোধে সরকারি তরফেও খুব একটা তৎপরতা লক্ষ করা যায় না। যদিও পুলিসি নজরদারিটা জরুরি। সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতারা যখন কোনও ট্যাক্সির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে পদক্ষেপ করার কথা বলেন তখন বহু সাধারণ যাত্রীর কাছে তা হাস্যকরই ঠেকে। কারণ, জরুরি প্রয়োজনেই বহু মানুষ ট্যাক্সি চড়েন। সেক্ষেত্রে সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছনোর তাগিদটা তাঁদের বেশি থাকে। যাত্রী প্রত্যাখ্যান করে চলে যাওয়া গাড়ির পিছনে ধাওয়া করে ট্যাক্সির নম্বর সংগ্রহ করাটা খুব একটা সহজসাধ্য ব্যাপার নয়। এর উপর আবার অভিযোগ জানানোর হ্যাপা সামলানোর মতো সময়টুকু সংশ্লিষ্ট যাত্রীর হাতে থাকলে তবেই না পদক্ষেপ! তাই, ট্যাক্সির জুলুমবাজি বন্ধ হওয়ার তেমন কোনও আশা দেখা যাচ্ছে না।
ট্যাক্সি চালকদের অনেকেই কথায় কথায় হাল ফ্যাশনের অ্যাপনির্ভর এসি ট্যাক্সির দোহাই নিয়ে অতিরিক্ত টাকা চেয়ে বসেন। কিন্তু, ওই ট্যাক্সিগুলিতে সওয়ার হয়ে যাত্রীরা যে স্বাচ্ছন্দ্য পান তা হলুদ ট্যাক্সিতে অমিল। অধিকাংশ হলুদ ট্যাক্সির হাল অত্যন্ত করুণ। এমনিতেই অ্যাপনির্ভর গাড়ির দাপটে হলুদ ও নীল-সাদা ট্যাক্সি অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। তবু তারা সচেতন হচ্ছে না। তাদের এই কঠিন সময়ে যদি হলুদ ট্যাক্সি চালকরা অতিরিক্ত টাকা দর হাঁকেন বা যাত্রী প্রত্যাখ্যানের বদ অভ্যাসটি না-ছাড়েন তা হলে এমন একদিন আসবে যখন যাত্রীরাই মুখ ফিরিয়ে নেবেন। যাত্রী না-পেলে ব্যবসা মার খাবে। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই গাড়ির মালিক, চালক এবং সংগঠনের নেতারা নিজ নিজ দায়িত্ব কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতন হবেন সেটাই কাম্য। সরকারি তরফেও নজরদারি বাড়াতে হবে।