সম্পত্তি সংস্কার বিষয়ে চিন্তাভাবনা ফলপ্রসূ হতে পারে। কর্মক্ষেত্রে প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি। যাবতীয় আটকে থাকা কাজের ক্ষেত্রে ... বিশদ
খানাকুলের পোল গ্রামের এক মহিলা বলেন, বর্তমানে মেয়ের বিয়ে দিতে গেলেও অনেক পাত্রপক্ষ এখন ভোটার কার্ড দেখতে চাইছে। সেই কারণে এলাকার যে সকল মেয়ের নাম এতদিন ভোটার তালিকায় তোলা হয়নি, তাঁদের নামও তালিকায় তোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এবিষয়ে আরামবাগ মহকুমার ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট তথা ওসি ইলেকশন অনন্য জানা বলেন, মহকুমার অধীনে থাকা চারটি বিধানসভা মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন ক্যাটাগরির ফর্মে আবেদন জমা করেছেন। বর্তমানে জোরকদমে আবেদন করা ওই সমস্ত ফর্ম যাচাইয়ের কাজ চলছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি আরামবাগেও ভোটার তালিকায় নাম সংযোজনের আবেদন জমা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এক মাস ধরে চলে এই প্রক্রিয়া। তার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন পুরশুড়া বিধানসভায় জমা পড়েছে ৭ হাজার ৭০৭টি। এরমধ্যে ৩২৭৩ পুরুষ আবেদনকারী ও ৪৪৩৪ মহিলা আবেদনকারী রয়েছেন। পাশাপাশি আরামবাগ বিধানসভায় ৩২৮৮ পুরুষ ও ৪৬৭৬ মহিলা আবেদন করেছেন। গোঘাট বিধানসভায় ২৯১১পুরুষ ও ৪১৪৩ মহিলা এবং খানাকুল বিধানসভার ৪৩১২ পুরুষ ও ৫৭৩৪ মহিলা আবেদন করেছেন।
এছাড়া ভোটার তালিকা থেকে নাম বাতিলের জন্য ৭ নম্বর ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন চারটি বিধানসভার ২৮৭৫ জন। পাশাপাশি ভোটার তালিকার নাম সংশোধনের জন্য ৮ নম্বর ফর্ম পূরণ করে মহাকুমায় আবেদন করেছেন মোট ৬৬হাজার ৫০৭ জন। এছাড়া ৮(এ) ফর্মের মাধ্যমে ভোটার কার্ড স্থানান্তরের জন্য পুরশুড়া, আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল বিধানসভা মিলিয়ে ২৫৫১ জন ভোটার আবেদন জমা করেছেন। জানা গিয়েছে, এই সকল আবেদন যাচাই করে ৭ ফেব্রুয়ারি ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনের আগেও খানাকুল বিধানসভাজুড়ে মহিলাদের ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে এক প্রকার অনীহা দেখা গিয়েছিল। তাই মহকুমা নির্বাচন দপ্তরের পক্ষ থেকে মহিলাদের ভোটার তালিকা নাম তোলার আগ্রহ বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। এমনকী, ওই মহিলা আবেদনকারীদের জন্য আরামবাগ শহরে শপিংমলগুলিতেও বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। তারপরই মহিলাদের নাম তোলার ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখা যায়।
তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, বর্তমানে দেশজুড়ে এনআরসি, সিএএ ও এনপিআর নিয়ে উত্তাল পরিস্থিতি চলছে। তার মধ্যে ভোটাররা নিজেদের কার্ড ত্রুটিমুক্ত করতেই এই আবেদনের ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। যদিও প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, মানুষ সচেতন হওয়ায় বেশি পরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে। এক্ষেত্রে যেসকল ভোটার কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে বা অন্য জেলায় থাকতেন, তাঁরা এবার নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের ভোটার কার্ড সংশোধন করার জন্য আবেদন করেছেন।
প্রসঙ্গত, মাসখানেক আগে ভোটার তথ্য যাচাই করার কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময় অনলাইনের মাধ্যমে জমা পড়া আবেদনের নিরিখে মহকুমার অধীনে থাকা ছয়টি ব্লক ও চারটি বিধানসভার ১০ লক্ষ ২৭১৫ জন ভোটারের তালিকা যাচাই প্রক্রিয়া শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল নির্বাচন দপ্তর। সেই কাজ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছিল দপ্তর।