কর্মরতদের সহকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা ও ব্যবহারে সংযত থাকা দরকার। ... বিশদ
বন্দনাদেবী বলেন, আমার স্বামী পরিমল চন্দ্র সাঁপুই দুর্গাপুর অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের কর্মী ছিলেন। তিনি ১৯৯৯ সালে স্বেচ্ছাবসর নিয়েছিলেন। দূরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১৪ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। আমার ৪৩বছরের ছেলে তুষার কান্তি সাঁপুই বাড়িতে একটি জেরক্সের দোকান চালাত। ২০১৮ সালে হঠাৎই সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় হাসপাতাল সহ ভিন রাজ্যে তাঁর চিকিৎসা করাই। চিকিৎসকরা জানান, তার দুটি কিডনি আক্রান্ত হয়েছে। দুর্গাপুর ফিরে এসে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করি। কিছুদিনের মধ্যে সে অন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য টাকা, সোনার গয়না সব শেষ হয়ে গিয়েছে। এখনও তুষার কোনওরকমে ডায়ালিসিসের মাধ্যমে বেঁচে রয়েছে। সরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিসের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ডায়ালিসিস করাতে হয় প্রচুর টাকা ব্যয় করে। আমি নিজেও অসুস্থ। অন্য কোনও জেলায় অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সরকারি চিকিৎসা করানো সম্ভব নয়। তাই দুর্গাপুরের ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা দিতে তিনি আমার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছেও গিয়েছিলাম। কিন্তু বয়সের জন্য স্বাস্থ্যসাথী পরিষেবা পাইনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এদিন ছেলের জন্মদিন। এদিন দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর ডায়ালিসিস চলছে। একাধিক সমস্যা ও একাধিক রোগে আক্রান্ত ছেলের শারীরিক যন্ত্রণা সহ্য করতে আর পারছি না। তাই ছেলেকে নিয়ে একসঙ্গে মহকুমা শাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছি।
ডেপুটি মেয়র বলেন, আমি সব রকম চেষ্টা করে স্বাস্থ্য সাথীর পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পুরসভার স্বাস্থ্যদপ্তরের মেয়র পরিষদ সদস্য রাখী তেওয়ারি বলেন, ডেপুটি মেয়র বিষয়টি জানিয়েছিলেন। আমি পদক্ষেপ নিয়েছি। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য গোষ্ঠীর সদস্য হতে হয়। কিন্তু বন্দনাদেবীর ৬০ বছরের বেশি বয়স হওয়ার কারণে তিনি সদস্য হতে পারছেন না। আমি বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরে জানিয়েছি। কিন্তু বন্দনাদেবী অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি জানিয়েছেন বলে আমার জানা ছিল না। আমি অতিশীঘ্রই জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে সমস্যা সমাধান করব।
স্থানীয় কাউন্সিলার তথা চেয়ারম্যান মৃগেন্দ্রনাথ পাল বলেন, স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এখন সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সবরকম পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করব। ব্যক্তিগতভাবেও আমি চিকিৎসায় যতটা সম্ভব খরচ দেব।
মহকুমা শাসক অনির্বাণ কোলে বলেন, আমি একটি বৈঠকে ছিলাম। বিষয়টি আমার জানা নেই।