পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
শনিবার সকাল থেকেই মালদহের বিভিন্ন প্রান্তে এনআরসি ও সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়। বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল, অবস্থান ইত্যাদি হলেও বড় ঘটনাটি ঘটে হরিশ্চন্দ্রপুরে। সেখানে রেলের সম্পত্তি ভাঙচুর ও ট্রেন অবরোধ করে প্রতিবাদ জানায় উত্তেজিত জনতা। আন্দোলনকারীদের মধ্যে নাবালকদেরও শামিল হতে দেখা গিয়েছে। এদিন দুপুর থেকেই আন্দোলনের আঁচ এসে পড়ে হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশন চত্বরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, শতাধিক মানুষ আন্দোলনের নামে ভেঙে দেয় প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের বসার বেশ কয়েকটি আসন। ক্রমশ উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। যাত্রীদের চেয়ার ভাঙচুরের পরে স্টেশনের টিকিট বুকিং কাউন্টার ভাঙচুর করে পাথর ছোঁড়া হয় বলেও জানিয়েছেন আতঙ্কিত রেল কর্মীরা। আক্রমণের সময় ওই টিকিট বুকিং কাউন্টারে কর্মরত ছিলেন নুরজাহান বানু। তিনি বলেন, কম্পিউটার ও কিবোর্ডের সংযোগকারী তার ছিঁড়ে যায় হামলার সময়। চারপাশ লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল। আমরাও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। উত্তেজিত জনতার ছোঁড়া পাথরে অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন কর্মরত দু’একজন টিকিট বুকিং ক্লার্ক।
ওই সময়ই হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে এসে পৌঁছয় মালদহ-কাটিহার প্যাসেঞ্জার। উত্তেজিত জনতা ছুটে গিয়ে রেললাইনে নেমে পড়লে দাঁড়িয়ে যায় ট্রেনটি। ওই ট্রেনের যাত্রীদের অনেকেই এই আচমকা অশান্তিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এক যাত্রীর বক্তব্য, রেল অবরোধকারীদের অনেকের হাতেই ছিল মোটা লাঠি। জনতার মধ্যে থেকে ওই ট্রেনের একটি কামরার জানলার কাচ লক্ষ্য করে পাথরও ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ যাত্রীদের একাংশের। একটি জানলার কাচ খানিকটা ভেঙেও যায়।
আন্দোলনকারীদের হাতে কোনও নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল না। তাঁদের মধ্যে একজনের দাবি, সাধারণ এই আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। আগামীতে এই আন্দোলন তীব্রতর হয়ে উঠবে বলে দাবি করেন আন্দোলনকারীদের অনেকেই।
উত্তেজিত জনতাকে সরিয়ে দিতে রেল পুলিসের সঙ্গে হাত মেলায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিসও। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, এদিন হরিশ্চন্দ্রপুর স্টেশনে ভাঙচুর ও ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সুহানন চন্দা বলেন, হরিশ্চন্দ্রপুরে আন্দোলনের জেরে কাটিহার প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়েছিল। ট্রেনটির কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে। পূর্ব রেলের বিভিন্ন শাখায় আন্দোলনের জেরে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হওয়ায় উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়েছে।
পাশাপাশি একই ইস্যুতে এদিন দুপুরে কালিয়াচক কলেজের কয়েকশো ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে শামিল হন। তাঁরা মিছিল করে এনআরসি ও সিএএ বিরোধী স্লোগান দিতে দিতে কালিয়াচকের চৌরঙ্গী মোড়ে এসে পৌঁছলে সাধারণ মানুষও তাঁদের সঙ্গে শামিল হন। রাস্তার ওপরে গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ শুরু হয়ে যায়। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক থমকে যায় যান চলাচল। ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নামানো হয় পুলিস এবং র্যা ফ।