শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
এনজেপি থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে রাঙাপানি স্টেশনের কাছে নির্মলজোত। সেটাই ঘটনাস্থল। সরকারি বিবৃতিতে ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও বেসরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১৫। আহত অন্তত ৪৪ জন। জখম ব্যক্তিদের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। রেলবোর্ডের চেয়ারপার্সন অবশ্য বলেছেন, ‘মালগাড়ির চালক, অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলট, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গার্ড সহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে।’ ২১ বগির ট্রেনটির তিনটি কামরা পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই ১৮টি কামরায় যাত্রীদের নিয়ে বেলা দেড়টা নাগাদ ট্রেনটি ফের কলকাতার দিকে রওনা হয়। ভিড় সামাল দিতে মালদহ স্টেশনে পৌঁছে রাতে আরও দু’টি বগি জুড়ে দেওয়া হয়।
রবিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে আগরতলা থেকে ছাড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। সোমবার সকালে পৌঁছয় এনজেপি। সেখান থেকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা দেয় সকাল ৮টা ৩ মিনিটে। ঝিরঝিরে বৃষ্টির মাঝে ট্রেনটি রাঙাপানি স্টেশন পার হয়ে নিজবাড়ি স্টেশনের দিকে খুব ধীরগতিতে এগচ্ছিল। সিগন্যালিংয়ের সমস্যার জেরে নির্মলজোত এলাকায় সেটি থেমে যায়। তখন ট্রেনটির পিছনে প্রচণ্ড গতিতে এসে ধাক্কা মারে মালদহগামী মালগাড়িটি। সঙ্গে সঙ্গে লাইন থেকে ছিটকে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার তিনটি কামরা। তার মধ্যে ছিল একটি করে জেনারেল এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের বগিও। মালগাড়ির ইঞ্জিনের উপরে উঠে যায় কাঞ্চনজঙ্ঘার একটি পার্সেল ভ্যান। রেললাইন থেকে সেটিরই উচ্চতা ছিল প্রায় ৩০ ফুট। পাশে পড়েছিল আর একটি পার্সেল ভ্যান ও জেনারেল কামরা। দুর্ঘটনার অভিঘাতে রেললাইনের একাংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। লাইনচ্যুত হয় মালগাড়ির প্রায় ১২টি বগি। মালগাড়ির ইঞ্জিনের একাংশ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়রা জানালা ভেঙে ট্রেনের ভিতর থেকে যাত্রী ও রেলকর্মীদের উদ্ধার করেন।
খবর পেয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অফিসার ও কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান। রাজ্য পুলিসের পাশাপাশি আরপিএফ, এনডিআরএফ, বিএসএফ জওয়ানদের নামানো হয়। দার্জিলিং ও উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনও ময়দানে নামে। ভিড় সামাল দেয় রাজ্য পুলিস। দড়ি দিয়ে গোটা এলাকা ঘিরে গ্যাস কাটারের সাহায্যে বগি কেটে যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। তখন কামরার ভিতরে শিশুদের খেলার পুতুল, ব্যাগ, জামাকাপড়, জুতো সহ বিভিন্ন সামগ্রী ছড়িয়ে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বিকেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি রেলের পরিকাঠামো এবং যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজও নেন মুখ্যমন্ত্রী। তড়িঘড়ি চলে আসেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। তিনি বলেন, রেলের সেফটি ও সিকিউরিটি বিভাগ তদন্ত শুরু করেছে। মৃতদের পরিবার পিছু দু’লক্ষ এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রেলও মৃতদের ১০ লক্ষ টাকা করে দেবে। ত্রিপুরা সরকারও মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করেছে।