শেয়ার মেয়াদি সঞ্চয়সহ একাধিক ক্ষেত্র থেকে অর্থাগম যোগ। ব্যবসায় কেনাবেচা বাড়বে। ... বিশদ
কেক আর বাবা আসার আনন্দে সোমবার ভোরবেলা উঠে পড়েছিল মেয়েটি। দেড় বছরের ভাইকেও ঠেলেঠুলে তুলে দিয়েছিল। তারপর দুপুর গড়াতেই বাড়ির পরিবেশটা বদলে যেতে দেখে। থমথমে হয়ে যায় বাড়ি। বিকেলে শুরু হয় কান্নাকাটি। সব বোঝার পর মেয়েটিও শোকে পাথর হয়ে যায়।
শুভজিতের ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুদর্শনা মুখোপাধ্যায় জানান, মানুষের সমস্যায় সর্বদা এগিয়ে আসতেন এই যুবক। লকডাউনের সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। পিপিই কিট পরে অনেক আক্রান্তকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে যেতেন চিকিৎসার জন্য। পরোপকারী যুবকটির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়।
শুভজিৎ মালির বয়স ৩১ বছর। বালিগঞ্জের জামির লেনে স্ত্রী মিঠু, কন্যা ও পুত্রকে নিয়ে থাকতেন। শিয়ালদহ স্টেশনে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ঢোকার কথা ছিল সন্ধ্যা সাতটা বেজে ২০ মিনিটে। কিন্তু সকালে বজ্রপাতের মতো দুর্ঘটনার খবর আছড়ে টিভিতে। কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে শুনে খোঁজখবর শুরু করে শুভজিতের পরিবার। বিকেলে জানতে পারে, দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে শুভজিতেরও। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সূর্যশেখর পান্ডা নামে এক পরিচিত। তিনি একজনকে ফোন করে জানিয়েছিলেন, ‘নিজে আহত হয়েছেন। আর শুভজিৎ মারা গিয়েছেন।’ পরে বিভিন্ন মাধ্যমে শুভজিতের মৃত্যুর খবর সম্পর্কে নিশ্চিত হয় সবাই। বাচ্চাদু’টিকে নিয়ে হতবাক মিঠু বলে ওঠেন, ‘এবার আমার ছেলে-মেয়েটার কী হবে?’ শুভজিতের দাদা সুরজিৎ ও কয়েকজন রওনা দিয়েছেন শিলিগুড়ি। আজ, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ দেহ আসার কথা বালিগঞ্জে।
শুভজিৎ চাকরি করতেন একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাঁকে গাড়ি চালিয়ে যেতে হতো বিভিন্ন রাজ্যে। মূলত উত্তর ভারতেই যেতেন। কয়েকদিন আগে গাড়ি চালিয়ে গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গে। গাড়ি ডেলিভারি দিয়ে বাড়ি ফেরার জন্য উঠেছিলেন শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। ট্রেন শিলিগুড়ির রাঙ্গাপানিতে পৌঁছতেই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল সব। জন্মদিনের কেক কেনা হল না। বাবার সঙ্গে জীবনে আর কোনওদিন কেক কাটাও হবে না মেয়ের। শুভজিৎ মালি।