দেশ

শিবসেনা ভাগে মোদি-শাহকেই দুষছে সিন্ধের কেন্দ্র

সমৃদ্ধ দত্ত, মুম্বই : আনন্দ হলের টিকিট বিক্রেতা মোবাইলে রিলস দেখছেন। সামনে কাচের কাউন্টারের অপর প্রান্তে কোনও ভিড় নেই। টিকিট কাটার লাইন নেই। এখন সাড়ে ১১টা। ১২টায় শো। কিন্তু লক্ষ্মণ ভালো নয়। আজও সম্ভবত গুটিকয় দর্শককে নিয়েই চালাতে হবে সিংহম এগেইন। সিঙ্গল স্ক্রিন। সারদিনে চারটে শো। দুটো সিংহম এগেইন। দুটো ভুলভুলাইয়া থ্রি। রেসপন্স কেমন? টিকিট বিক্রেতা আর গেটকিপার বিরসমুখে বললেন, কোথায় রেসপন্স? একসঙ্গে এত হিরো মিলেও তো লোক টানতে পারছে না! সুপারস্টার ঩নেই আর হিন্দি সিনেমায় বুঝলেন তো! যার মুখ দেখেই ভিড় ভেঙে পড়বে। আজকাল সব অ্যাভারেজ হিরো! 
স্টেশন থেকে থানে ইস্টের দিকে বেরলে মাথার উপর একটা উড়ালপুল। তার নীচে অগণিত অটো। সরু ফুটপাত। সারিবদ্ধ রেস্তরাঁর প্রতিটি সাইনবোর্ডে সবথেকে বড় করে লেখা বড়া পাও। স্টেশনারি দোকান পেরিয়ে পাড়ায় ঢুকছে রাস্তা। বড় শহরে উজ্জ্বল নগরজীবনের ছাপ নেই। যেন বিশেষ তাড়া নেই। সবই মৃদুমন্দ গতিতে চলছে। অথচ রেললাইনের বিপরীত প্রান্ত, যাকে বলা হয় থানে ওয়েস্ট, সম্পূর্ণ বিপরীত। হাজার লোকের মেলা ভিড়। শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স আর আধুনিক গাড়ি এবং বহুতলে এক জমজমাট নগর। 
ওই যে থানে ‌ইস্ট। ওটাই হল কোপরি এলাকা। এই স্টেশন থেকে বেরনো যাত্রীদের নিয়ে মুলুন্দ কিংবা কুরলার দিকে নিয়ে যায় অটোর দল। সেরকমই একটি অটো একদিন যিনি চালাতেন, তিনি আজ মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। কোপরি অঞ্চলের বিধায়ক। মুম্বই বলেই এসব কাহিনি অনায়াসে সত্যি হয়ে যায়। কল্পনা আর বাস্তব এখানে মিলেমিশে যায়। পর্দায় বুটপালিশওয়ালা কিশোর এক নম্বর ডন হয়ে যায়। আর বাস্তবের অটোচালক প্রথমে বিধায়ক এবং তারপর মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যান। 
ভূমিপুত্র মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় আপনারা নিশ্চয়ই খুশি? পুরসভার কর্মী সমীর দীঘে শিবসেনার সমর্থক। ভোটার। কিন্তু ভোট দেননি লোকসভায়। কারণ ধর্মসঙ্কট। কোন শিবসেনাকে সমর্থন করবেন? একদিকে ঘরের ছেলে একনাথ সিন্ধে। মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বালাসাহেবের নিজের তৈরি করা দল আসল শিবসেনা। মনস্থির করতে পারছিলেন না কোনদিকে থাকা উচিত। তাই ভোটই দেওয়া হল না। আসল শিবসেনা? একনাথ সিন্ধে তো বালাসাহেবের তৈরি করা সেই তিরধনুকের প্রতীক কেড়ে নিয়েছেন? তাহলে আর উদ্ধব থ্যাকারের কাছে থাকা শিবসেনা আসল আর রইল কোথায়? সমীর দীঘে বললেন, কেড়ে নিলেই তো আর বালাসাহেব থ্যাকারেকে ভুলিয়ে দেওয়া যায় না। সিন্ধে লোক ভালো। তবে ওঁকে বিভ্রান্ত করেছেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। এই দু’জনের কাজ হচ্ছে টাকার প্রলোভন দেখানো। পদের প্রলোভন দেখানো। এদের কাছে নীতি মূল্যবোধ আদর্শ বলে কিছু হয় না। শুধুই ক্ষমতা। এবার ভোটে কী হবে? সমীর দীঘে বললেন, এখান থেকে সিন্ধেই জিতবেন। কোপরিকে কেউ পাত্তাই দেয়নি এতকাল। আর সেই কোপরিতে জন্ম হওয়া, এখানে রাজনীতি করা একটি ছেলে হাই প্রোফাইল মুম্বইয়ের নেতাদের সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গেল, এটা সোজা কথা নাকি! 
কোপরি কলোনির আনন্দ রোডে থানে পুরসভার ইস্ট ডিভিশন অফিসের সামনেই শিবসেনা দপ্তর। কিন্তু শিবসেনা শব্দটির পর ব্র্যাকেটে কিছু লেখা নেই তো? মানে এটা কোন শিবসেনার দপ্তর? দরজায় দাঁড়ানো প্রফুল্ল নাইক বললেন, দুজনেরই। মানে? মানে উদ্ধব থ্যাকারের শিবসেনার পার্টি অফিসও এটা। আবার একনাথ সিন্ধের পার্টি অফিসও এটা। তা কী করে হয়? পরস্পরের প্রতিপক্ষ এবং দুই শত্রু শিবিরে থাকা দুই যুযুধান দল একটি ঘরের মধ্যেই থাকছে, কথা বলছে, স্ট্র্যাটেজি তৈরি করছে, এ আবার কীভাবে সম্ভব? সম্ভব হচ্ছে তো? এই তো এখন যেমন দুপুর দুটো বাজে। উদ্ধব গোষ্ঠীর মহিলা শাখার বৈঠক চলছে। সুনেত্রা সাওয়ান্ত বললেন, আমাদের সাড়ে চারটের মধ্যে এই ঘর ছেড়ে দিতে হবে। ওদের মিটিং আছে! 
কিন্তু আলাদা পার্টি অফিস হওয়াই তো স্বাভাবিক? সুনেত্রা সাওয়ান্ত, কুসুম খাল্লাড়, সুরভী সিন্ধেরা বললেন, কেন? পার্টি তো আবার একই হয়ে যাবে। সময়ের অপেক্ষা! বালাসাহেব ১৯৬৭ সালে এই থানে থেকেই পুরসভা ভোটে দলকে জিতিয়ে জয়যাত্রা শুরু করেছিলেন। তাঁর দল টুকরো টুকরো হয়ে যাবে এ আবার হয় নাকি? আবার আমাদের মিলন হবে! তবে এবার উদ্ধব থ্যাকারে আবার ক্ষমতায় ফিরছে বলে নিশ্চিত বিশ্বাস তাঁদের। 
তাহলে সিংহম এ঩঩গেইনের মতোই সিন্ধে এগেইনও কি ব্যর্থ হচ্ছে? -নিজস্ব চিত্র
26d ago
কলকাতা
রাজ্য
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মসূত্রে বিদেশ যাত্রার প্রচেষ্টায় সফল হবেন। আয় খারাপ হবে না। বিদ্যা ও দাম্পত্য ক্ষেত্র শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৮৮ টাকা৮৫.৬২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৩৯ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৭.২৫ টাকা৯০.৬০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা