নয়াদিল্লি: ঘুষ হিসেবে ১০০ কোটি টাকা হাতবদলের অভিযোগ। কিন্তু, সেই টাকা গেল কোথায়? দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় আদালতে পেশ করা চার্জশিটে চাঞ্চল্যকর দাবি করল ইডি। এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির বক্তব্য, ঘুষ গ্রহণের প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত ছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। ওই ১০০ কোটি টাকার মধ্যে ৪৫ কোটি টাকা পেয়েছিল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি (আপ)। হাওলার মাধ্যমে সেই টাকা যায় গোয়ায়। সেখানে আপের নির্বাচনী প্রচারে তা ব্যবহার করা হয়েছিল। 
ইডির পেশ করা চার্জশিটটি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে দিল্লির এক আদালত। চার্জশিটে ইডির দাবি, আবগারি দুর্নীতি মামলায় ‘কিংপিন’ স্বয়ং কেজরিওয়াল। চার্জশিটে ৩৭তম অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর। ৩৮তম অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে তাঁর দল আপের। কোনও দুর্নীতি মামলায় তদন্তকারী সংস্থার পেশ করা চার্জশিটে এই প্রথম কোনও সর্বভারতীয় দলের নাম অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইডির দাবি, ‘সাউথ গ্রুপে’র সদস্যদের সঙ্গে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র করেছিলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। জড়িত ছিলেন বিজয় নায়ারের মতো অভিযুক্তরাও। নয়া আবগারি নীতির মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে অযাচিত সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বদলে ১০০ কোটি টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছিল। হাওলার মাধ্যমে ঘুষের ৪৫ কোটি টাকা গোয়ায় পৌঁছনোর পর সেই অর্থের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় চানপ্রীত সিং নামে চ্যারিয়ট প্রোডাকশনসের এক কর্মীকে। গোয়ায় পার্টির প্রচারের কাজে ফ্রিল্যান্সের ভিত্তিতে যোগ দেওয়া চানপ্রীতকে এজন্য ১ কোটি টাকা দিয়েছিল আপ। যদিও ইডিকে দেওয়া বিবৃতিতে কেজরিওয়ালের পাল্টা দাবি, গোয়ায় আপের তহবিল দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন ওই রাজ্যের পার্টি ইন-চার্জ দুর্গেশ পাঠক। চানপ্রীত সিং নন। কেজরিওয়ালের আরও দাবি, গোয়ায় তহবিল সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্বে তিনি নিজে ছিলেন না। এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত বিআরএস নেত্রী কে কবিতার কাছ থেকে তিনি কোনও রকম ঘুষ নেননি বলেও দাবি আপ সুপ্রিমোর। যদিও কেজরিওয়াল কীভাবে তদন্ত প্রক্রিয়াকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করেন, তার প্রমাণ হিসেবে তাঁর সঙ্গে আপ নেতা মণীশ সিশোদিয়ার প্রাক্তন সচিব সি অরবিন্দের কথোপকথনের উল্লেখ করেছে। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, প্রচুর প্রমাণ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। হাওলা কারবারিদের সঙ্গে সরাসরি কথাবার্তা চালিয়েছিলেন কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী বিনোদ চৌহান। হাওয়ালার মাধ্যমে গোয়ায় ২৫ কোটি টাকা পাঠিয়েছিলেন চৌহান। প্রসঙ্গত, গত মে মাসে চৌহানকে গ্রেপ্তার করেছিল ইডি।