সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: সরকারি জমিতে নয়ানজুলি বুজিয়ে বেআইনি নির্মাণ চলছে মায়াপুরে। তৈরি হয়েছে হোটেল, দোকান। হেলদোল নেই প্রশাসনের। বেশ কয়েক বছর ধরেই মায়াপুরে রাস্তার দু’পাশের নয়ানজুলির গর্তের ভিতরে মাটি ফেলে চলছে বেআইনি নির্মাণ। কেউ কংক্রিটের স্তম্ভ তুলে নির্মাণ করেছেন হোটেল, কেউ বা নয়ানজুলির দু’পাশে মাটি ফেলে দোকান তৈরি করেছেন। কেউ বা মাটি ফেলে বাড়ির সীমানাটাই বাড়িয়ে নিয়েছেন। আর নয়ানজুলির উপরে অস্থায়ীভাবে মাচা পেতে যাতায়াত করছেন বহুসংখ্যক মানুষ। নয়ানজুলি ভরাট হতে হতে বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। আগে বৃষ্টির জল রাস্তা থেকে গিয়ে এই নয়ানজুলিতেই পড়ত। রাস্তার পাশের গর্ত বুজে যাওয়ায় রাস্তার জল আর সরে না। গোটা বিষয়টি নজরে আসার পর কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা শাসক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে পুলিসকে খোঁজ নিয়ে দেখে জানাতে বলব।
বামুনপুকুর বাগানেপাড়ার বাসিন্দা মোহিত শেখ বলেন, এই নয়ানজুলিতে একটা সময় মানুষ স্নান করত, মাছ ধরত। অনেকে পাটজাগ দিত, এরকম অনেক কাজেই লাগত। এখন মাটি ফেলায় সেগুলি বুজে গিয়েছে।  মায়াপুর মাঝেরপাড়ার বাসিন্দা মোতলেব শেখ বলেন, ছোট থেকে আমরা এই নয়ানজুলি দেখে আসছিলাম। কিন্তু এখন দিনের পর দিন নয়ানজুলিটা দখল হয়ে যাচ্ছে। এগুলি পঞ্চায়েতের দেখা উচিত। এটা বুজিয়ে ফেলায় হাজার হাজার মানুষের ক্ষতি হল।
সিপিএমের নবদ্বীপ পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক তথা নবদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা আয়েব নবি শেখ বলেন, সরকার তো তৃণমূলের চলছে। নয়নজুলি দখল করে মানুষ বিল্ডিং বানাচ্ছে সরকার তো সেটা দেখতে পাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে যেখানেই এরকম নয়ানজুলিতে অবৈধভাবে নির্মাণ করা হবে, মাটি ফেলে ভরাট করা হবে তারই বিরোধিতা আমরা করব। 
মায়াপুর-বামনপুকুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের দখলে রয়েছে সিপিএম। এখানের তৃণমূলের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মুন্নাফ আলি বলেন,  বর্তমানে বোর্ড তো সিপিএম পরিচালিত। এখনও তো ওখানে নির্মাণ কাজ চলছে। ওঁরা যদি বিরোধিতাই করেন, এখন ওইসব বেআইনি কাজ বন্ধ হওয়া উচিত ছিল। পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে কাজ চলছে, সেই কাজের তো  তারাই  অনুমোদন দিচ্ছে। এমনকী, যে পরিমাণ জায়গা ছেড়ে নির্মাণ কাজ করার কথা সেগুলি ছাড়ছেন না কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। সেক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের কোনও হেলদোল নেই। আমরাই বিরোধিতা করছি। পঞ্চায়েতকে জানিয়েছি আগামীতে এর কোনও সুরাহা না হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানাব। - নিজস্ব চিত্র