দক্ষিণবঙ্গ

শীতে সিন্থেটিক ব্ল্যাঙ্কেটের দাপটে অবলুপ্তির পথে হাতে তৈরি কম্বল

সংবাদদাতা, কাটোয়া: শীতের মরশুম শুরু হতেই বেড়েছে ব্ল্যাঙ্কেটের বিক্রি। কাশ্মীর থেকে বিক্রেতারা এসে কম দামে ব্ল্যাঙ্কেট বিক্রি করছেন। ফলে বড় কম্বলের চাহিদা কমছে। পূর্বস্থলীর পাটুলির ভকতপাড়ায় কম্বল শিল্পীরা বড় কম্বল ছেড়ে আসন বোনার দিকেই ঝুঁকছেন। ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পূর্বস্থলীর কম্বল শিল্প। শিল্পীদের দাবি, নতুন প্রজন্ম এমন শিল্পে আসতে আগ্রহ হারাচ্ছে। 
পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পাটুলির ভকতপাড়ায় কম্বল শিল্পীদের বসবাস। ভাগীরথী তীরবর্তী এলাকায় কম্বল শিল্পীরা বহু বছর ধরে ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। শিল্প ক্রমশ বিলুপ্ত হতে বসলেও এখনও প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি পরিবার কম্বল শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সারাদিন ভেড়ার লোম থেকে দড়ি পাকিয়ে, রোদে শুকিয়ে তা থেকে কাঠের তাঁতযন্ত্রের মাধ্যমে কম্বল তৈরি করা হয়। এখানকার কম্বল ভিন রাজ্যেও পাড়ি দেয়। তবে এখন বড় কম্বল ছেড়ে ছোট আসন তৈরি করার দিকেই ঝুঁকছেন তাঁরা। 
শিল্পীরা জানান, পাটুলি কম্বল বয়ন শিল্প এখন আর নেই। রাজ্য সরকারের তৈরি কারখানা শেষ হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে ক্রমশ এই শিল্প বিলুপ্তির পথে চলে যায়। একটা বড় কম্বল ৭০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হতো। এখন সিন্থেটিক কম্বল, ব্লাঙ্কেট বাজার ছেয়ে যাওয়ায় বিক্রি তলানিতে। 
কম্বল শিল্পী শ্যামল ভকত বলেন, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে একটা বড় কম্বল তৈরি করতে যে খরচ পড়বে, তাতে বাজারে বিক্রি করেও দাম পাওয়া যাবে না। তাই বড় কম্বল ছেড়ে ছোট আসন তৈরি করা হচ্ছে। আর আসনের চাহিদা সারা বছরেই থাকে। ধর্মীয় কাজে কম্বলের আসন কেনার রীতি সারা বছরই থাকে। তাছাড়া টানা একমাস ধরে একটা বড় কম্বল তৈরি করে যা আয় হয়, একদিনে সেই একই আয় হচ্ছে শুধু আসন তৈরি করে। 
পাটুলির শিল্পীরা একসময়ে বিহারের গাড়োয়াল প্রদেশ থেকে এখানে এসেছিলেন। বেশ কয়েক পুরুষ বাংলায় থেকে এখন পুরোপুরি বাঙালিই হয়ে গিয়েছেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে ভেড়ার লোম সংগ্রহ করেন তাঁরা। তাছাড়া শীতের মরশুমে বিহার থেকে অনেকেই এ রাজ্যে ভেড়ার পাল চড়াতে আসেন। সেখান থেকেও লোম সংগ্রহ করা হয়। তারপর তা ভাগীরথীর জলে ধুয়ে ধুনে নেওয়া হয়। এরপর সেই লোম থেকে চরকায় সুতো পাকানোর মতো সুতো তৈরি করা হয়। সেখান থেকেই কম্বল তৈরি হয়। শিল্পী প্রদীপ ভকত বলেন, বড় কম্বল আর সেভাবে তৈরি করা হয় না। বিক্রি না হলে কেন তৈরি করতে যাব। তার থেকে ছোট ছোট কম্বলের আসনের চাহিদা রয়েছে। এই শিল্পের উপরেই আমাদের নির্ভর করতে হয়। ভালো বাজার পেলে শিল্প আরও এগিয়ে যেতে পারত। এখন শিল্প ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এখন আর এই কাজে আসতে চাইছে না। আগে ভিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় এই কম্বল যেত। এছাড়াও আশপাশের গ্রামের মানুষরা কিনতেন।  গ্রামবাসীদের মধ্যে কম্বলের ব্যবহার ছিল। তবে বর্তমানে বাজারে এখন অন্য ধরনের কম্বল বিক্রি হচ্ছে। বাজারে যে কম্বল তৈরি হচ্ছে তার দামও অনেক কম। তাই এখন হাতে তৈরি কম্বলের চল আর নেই। শিল্পীদের আক্ষেপ, অনেকে জানেই না পাটুলির কম্বল শিল্পের কথা।  পূর্বস্থলীর পাটুলিতে ভেড়ার লোম দিয়ে কম্বল তৈরি করছেন শিল্পী।-নিজস্ব চিত্র
12Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মরশুমি রোগের ভোগান্তিতে স্বাস্থ্যহানির যোগ প্রবল। কাজকর্মে কিছুটা আলস্য ভাব আসতে পারে। বিদ্যায় উন্নতির যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৮৮ টাকা৮৫.৬২ টাকা
পাউন্ড১০৫.৩৯ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৭.২৫ টাকা৯০.৬০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     December,   2024
দিন পঞ্জিকা