সিনেমা

নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে
সত্যের খোঁজ
মহাত্মা বনাম গান্ধী

 

১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি। তিনটি বুলেটের শব্দে নির্বাপিত হয় সত্যানুসন্ধানী আলোকবর্তিকা। আকাশে ‘হে রাম’ ধ্বনি মিলিয়ে যাওয়ার ছয় মাস পর বম্বের এক যক্ষ্মা হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৮ নম্বর ব্যাচধারী এক অর্ধোন্মাদ ভিক্ষুকের। পরবর্তীকালে জানা যায় সহায়, সম্বল, পরিচয়হীন ওই ব্যক্তি ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর জ্যেষ্ঠপুত্র হরিলাল গান্ধী।
গান্ধীজির চার সন্তান— হরিলাল, মণিলাল, রামদাস ও দেবদাস। এদের মধ্যে হরিলালই বেশি চর্চিত। কারণ তার জীবনদর্শন এবং পিতার বিরুদ্ধে ঘোষিত দ্রোহ। সম্প্রতি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় স্মরণে রবীন্দ্রসদনে অনুষ্ঠিত হল মুখোমুখি নাট্যগোষ্ঠীর নাট্যোৎসব। সেই উৎসবেই পরিবেশিত হল চেতনা নাট্যগোষ্ঠী প্রযোজিত ‘মহাত্মা বনাম গান্ধী’ শীর্ষক নাট্য আখ্যান। চেতনার নির্দেশক সুজন মুখোপাধ্যায় তাঁর এই সাম্প্রতিক কাজটিতে, মহাত্মা গান্ধী এবং তাঁর বিতর্কিত জ্যেষ্ঠপুত্র হরিলালের আদর্শগত সংঘাতকে দিয়েছেন নাট্যরূপ। তবে সুজন তাঁর কাজের মাধ্যমে শুধু পিতা ও পুত্রের চিরকালীন আদর্শের দ্বন্দ্বকে উপস্থাপন করেই ক্ষান্ত হয়েছেন বললে ভুল হবে, বরং তাঁর নাট্যসজ্জা আওয়াজ তোলে পুরুষাকারের বিরুদ্ধে। অমোঘ কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করে দর্শক মনে। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী আজীবন অন্বেষণ করেছেন সত্যের। তাঁর যাত্রাই যে তাঁকে মহাত্মায় উপনীত করেছে সে সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। মঞ্চের উপর বিরাট এক চরকার নীচে তিনটি বাঁদরের ছবির অনুষঙ্গ মহাত্মার সেই আদর্শকে প্রতিফলিত করে। অথচ বিশালাকার ওই ইনস্টলেশনই দর্শকের বুকের উপর তৈরি করে বিপুল চাপ। ওই ইনস্টলেশনই হয়ে দাঁড়ায় মহাত্মার দুর্লঙ্ঘ ব্যক্তিত্ব। সেই ব্যক্তিত্বের ভারেই দমিত হয় পরিবারের বাকি সদস্যের কথা বলা, কানে শোনা, এমনকী মহাত্মার নির্দেশের বাইরে কোনও কিছু দেখার স্বাধীনতাও। এখানেই সুজন মিলিয়ে দেন ইতিহাস এবং সমকাল। সমাজে এখনও সেই একই চিত্র বর্তমান। ‘সত্য’ কখনওই একমাত্রিক নয়। ফলে ইতিহাসকে, মহাত্মাকে নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে অবলোকন করতে শেখায় চেতনার এই নতুন নাটক।
তবে জটিল বিশ্লেষণের বাইরে এই নাটকের মানবিক দিকটি অনেক বেশি দৃঢ়। অভিনয় গুণে কস্তুরবার সঙ্গে হরিলাল এবং গোলাবের স্নেহভরা দৃশ্যগুলি প্রতিবার জীবন্ত হয়ে ওঠে। মনে রেশ থেকে যায় প্রথমার্ধের শেষে বাপুর বাণী, ছবিসহ বিরাট চাদরকে পাথুরে ইনস্টলেশনের রূপ প্রদানের মতো দৃশ্যকল্প।
তবে দুটো কথা বলতেই হয়। নাটকের প্রথমার্ধের গতি যথেষ্ট কম। এছাড়া দাঙ্গার দীর্ঘ দৃশ্য নিশ্চিতরূপে অত্যন্ত যন্ত্রণার উদ্রেক ঘটায়। অভিনয়ের প্রসঙ্গে আসা যাক। মহাত্মার চরিত্রে অনির্বাণ চক্রবর্তীর চেহারা বেমানান লাগলেও চরিত্রের মূল ভাবটুকু ফুটিয়ে তোলার ক্ষেত্রে তিনি বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখেননি। হরিলালের চরিত্রে সুজনকে দ্বিতীয়ার্ধে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য ঠেকেছে। গোলাবের চরিত্রে মেরি আচার্য যথাযথ। তবে মঞ্চের সব আলোটুকু কেড়ে নিয়েছে কস্তুরবার ভূমিকায় নিবেদিতা মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়। তাঁর অভিনয় কিছু ক্ষেত্রে উচ্চকিত মনে হলেও মঞ্চ অভিনয়ে সেটুকুর দরকার পড়ে। মহাত্মা ও হরিহরের কথোপকথনের সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে করাতের শব্দ ব্যবহার করে প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দেন ‘মেঘে ঢাকা তারা’ ছবিতে প্রেমিকের কাছ থেকে প্রতারিত হওয়ার পর নীতার সিঁড়ি বেয়ে নামার সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ডে চাবুকের শব্দের কথা। মঞ্চ নির্মাণে বিলু দত্তের কাজ স্মরণে রাখার মতো। মোট কথা আগামীদিনে এই নাটক বারংবার মঞ্চস্থ হতে চলেছে।
সুপ্রিয় নায়েক
17Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মৃৎশিল্পী, ব্যবসায়ী প্রমুখদের বিশেষ কর্মোন্নতি যোগ প্রবল। পেশাদারি কর্মে শুভ ফল প্রাপ্তি। মানসিক চাঞ্চল্য।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৫০ টাকা১১২.০৬ টাকা
ইউরো৯১.০৪ টাকা৯৪.২২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা