হীরক রাজার মতে, লেখাপড়া করে যে, গাড়ি চাপা পড়ে সে। তাই পাঠশালা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। কোচবিহারের মহারাজারা ছিলেন ঠিক এর উল্টো। নিজেরা পড়াশোনা তো করতেনই, সঙ্গে উৎসাহও দিতেন। কোচবিহার শহরে একাধিক স্কুল-কলেজ তৈরি করেছিলেন তাঁরা। জেনকিন্স স্কুল, সুনীতি অ্যাকাডেমি, এ বি এন শীল (ভিক্টোরিয়া) কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল তাঁদেরই প্রত্যক্ষ সহায়তায়। এ তো গেল বাইরের দিক। রাজারা রীতিমতো বিদেশ থেকে আনিয়ে বই পড়তেন। আজও কোচবিহারের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় গ্রন্থাগারে সেই দুর্মূল্য গ্রন্থগুলির দেখা যায়। গ্রন্থাগারে মিশরের ইতিহাস থেকে শুরু করে অ্যানাটমি, বোটানি, জুলজি সহ আরও নানা ধরনের বই রয়েছে। এরই মধ্যে একেবারে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ— সোনার জলের রং করা বাইবেল। ওল্ড এবং নিউ টেস্টামেন্ট একত্রে রয়েছে সেখানে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত বইটির পুরো নাম ‘দ্য কমপ্রিহেনসিভ বাইবেল, দ্য ওল্ড অ্যান্ড নিউ টেস্টামেন্টস।’ বইটি । এর তিন দিকে সোনার জলে রং করা। উপরে নানান কারুকার্য। গ্রন্থাগারে একটি আলমারির ভিতরে আলাদাভাবে বিরাট একটি কাঠের বাক্সে সযত্নে রাখা এই বইটি। শোনা যায়, কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের আমলে লন্ডন থেকে নিলামের মাধ্যমে এই বাইবেলটি আনা হয়েছিল।