জীবনবোধ
আজ যখন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে টোটা রায়চৌধুরীর অভিনয় প্রশংসিত হচ্ছে, তখনও সেই শিল্পী সুলভ শিষ্টাচারে এতটুকু অহংকারের আবরণ নেই। বিনয়ী অভিনেতা বললেন, ‘বোধ হওয়ার পর থেকেই শিল্পী মানুষদের কাছ থেকে বা দূর থেকে দেখে শিখেছি এঁদের জীবনবোধ খুব সজাগ ও সচেতন। এই পর্যবেক্ষণই আমায় ‘পিকাসো’ নামটাকে ধারণ করতে সাহস জুগিয়েছে।’
পিকাসো
না, কিংবদন্তি চিত্রকর পাবলো পিকাসোর জীবন নিয়ে কোনও কাহিনি নয়। ওয়েব সিরিজটি গড়ে উঠেছে একজন চিত্রকরকে কেন্দ্র করে, যার নাম পিকাসো। যাকে নিয়ে শিল্প ও শিল্পীমহলে নানা রকম বিতর্ক আছে। একসময় মানুষটি আঁকা ছেড়ে দেয়। হেরে যাওয়া মানুষ বলেই মনে করে নিজেকে। নতুন চরিত্র প্রসঙ্গে টোটা বললেন, ‘পিকাসো, চরিত্রের নামটাই আমার কাছে অভিনব লেগেছিল। এমন ব্যতিক্রমী ভাবনা পরিচালক রাজা চন্দর কাছেই প্রত্যাশিত। ওঁর এই ক্রিয়েটিভ মুন্সিয়ানাই মানুষকে চমকে দেয়। চিত্রনাট্য পড়ার পর একইসঙ্গে উত্তেজিত ও উৎসাহিত হয়ে পড়লাম, চরিত্রটায় অভিনয় করার জন্য।’
তুলি ও ছুরি
পিকাসো ও থ্রিলার। অভিনব বৈপরীত্য। চিত্রনাট্যের পরতে পরতে এক অদ্ভুত সাসপেন্স। গল্পের পিকাসোই হোক আর পাবলো পিকাসোই হন, নামটার সঙ্গে ক্রাইম, তুলি ও ছুরির সহাবস্থান, পর্দায় রক্ত ও রঙের এহেন আঁচড় টোটাকে টানটান উত্তেজিত করে রাখলেও, অভিনেতা মনে করেন ছুরির চেয়ে তুলির তীক্ষ্ণতা অনেক বেশি।
শিক্ষার্থী
কিছুদিন আগে শিখেছেন কত্থক নাচ। ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কাহানি’তে চন্দন চ্যাটার্জির কত্থক নাচের ঘোর এখনও কাটেনি বিনোদন বিশ্বের মানুষদের। এবার শিখলেন তুলি ধরা। বললেন, ‘শ্যুটিং-এর সময় আর্ট কলেজের এক প্রাক্তন ছাত্র আমাকে তুলি ধরা শিখিয়েছেন। কীভাবে রঙে ভেজা তুলি টানতে হয়, ক্যামেরার সামনে যখন ক্যানভাসে আঁকছি, তখন কোন স্ট্রোকে কীভাবে তুলি ধরতে হয়, কোন পোট্রেইটে কোন কোন রং কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, উনি আমাকে শিখিয়েছেন। আমি চেষ্টা করেছি টেকনিক্যালি নিখুঁত থাকার।’
বাংলা বনাম হিন্দি
টোটার ব্যস্ততা বেড়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই আসতে চলেছে স্পেশাল অপস-২। নীরজ পাণ্ডে পরিচালিত ওয়েব সিরিজটির দ্বিতীয় সিজনে টোটার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এরাজ্যের দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। চর্চা শুরু হয়েছে, টোটা আদৌ কতটা বাংলা বিনোদন জগতে সময় দিতে পারবেন তা নিয়েও। সেই জল্পনায় জল ঢেলে দিয়ে টোটা বললেন, ‘একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দিতে চাই, আমি আদপেই বাংলা ছাড়ছি না। অন্য জায়গা থেকে কাজ আসছে বলে বাংলা কাজ করব না, এটা একেবারেই নয় কিন্তু। আমার কাছে বাংলা আগেও প্রাধান্য পেয়েছে, এখন যেমন পাচ্ছে, ভবিষ্যতেও পাবে। খুব শিগগিরই সবাই জানতে পারবেন আগামী দিনে বাংলায় আমার কী কী কাজ আসতে চলেছে। সব মাধ্যমেই হিন্দি, বাংলা দুই ভাষাতেই আমি কাজ করব।’
বড়-ছোট নয়
হেভিওয়েট প্ল্যাটফর্মেই এখন বেশি আনাগোনা টোটার। তাই বলে কম জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম কিংবা কম বাজেটের ছবি থেকে কোনওভাবেই মুখ ফেরাতে রাজি নন অভিনেতা। বললেন, ‘আমার যেমন নেটফ্লিক্স, আমাজনের দর্শকদের দরকার, তেমনই ক্লিক-এর মতো ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোরও নিজস্ব দর্শক আছে, আমি তাঁদের কাছেও পৌঁছতে চাই। আমার কাছে ভালো কাজটাই সবসময় অগ্রাধিকার পাবে।’
প্রিয়ব্রত দত্ত
ছবি: দীপেশ মুখোপাধ্যায়