বিকিকিনি

ছোট নীড়
বড় সাজ

টানাটানির যুগে নিত্যদিন ঘরে ফিরে ঘাম মুছে সামান্য উপার্জন থেকে কিছুটা কিছুটা করে সরিয়ে রাখেন মধ্যবিত্ত গৃহস্থ। শখ একটি বাড়ির বা ফ্ল্যাটের। সেই স্বপ্ন পূরণ হলে শুরু হয় তা সাজানোর তোড়জোড়। কম খরচে ঘর সাজাবেন কী করে? লিখছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়।

কেউ হয়তো সদ্য বিয়ে করেছেন। কেউ আবার নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন সাধ্যের মধ্যে। এবার তাকে সাজিয়ে তোলার পালা। সঞ্চয় বা ব্যাঙ্কঋণ, যা-ই রসদ হোক না কেন, বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার পর তাকে সাজিয়ে তোলার জন্য মধ্যবিত্ত গৃহস্থ প্রথমেই অনেকটা অর্থ ব্যয় করতে চান না। কারও পক্ষে আবার ঘর সাজানোর জন্য হাতে তেমন কিছু পড়ে থাকে না। তাই ঘর সাজানোর পরিকল্পনা ও বাজেট পুরোটাই আগে থেকে ভেবে না রাখলে সমস্যা হতে পারে। একটু মাথা খাটালে ঘরের অন্দরসাজে পকেটে উপর বিশেষ চাপ পড়বে না। 

পরিকল্পনার প্রথম ধাপ
• ঘরের অন্দরের বিভিন্ন কাজের জন্য প্রথমে কয়েকজন মিস্ত্রির সঙ্গে কথা বলুন। দরদাম নিন। ঠিক দামে ভালো কাজ করেন এমন মিস্ত্রি বাছাই করুন। এবার প্রতিদিনের হিসেবে বা চুক্তিতে কাজের জন্য বহাল করুন তাঁকে। কনট্র্যাক্টে বা চুক্তির হিসেবে মিস্ত্রি রাখলে খরচ একটু বেশি হয়, তবে চিন্তাভাবনামুক্ত থাকতে পারেন। নিত্যদিনের হিসেবে মিস্ত্রি রাখলে রোজ দেখভাল করুন কাজের। তাতে খরচ কমবে, কাজও দ্রুত শেষ হবে। ঘরের অন্দরে সিমেন্ট-বালির কাজ কিছু থাকলে কাঁচামাল নিজে কিনে দিন।
• মিস্ত্রি বাছাইয়ে মনে রাখুন আরও একটি বিষয়। মূল মিস্ত্রি বা কন্ট্রাক্টরের কাছ থেকে কাজের জন্য যা যা লাগবে তার পুরো তালিকা চেয়ে নিন। মোটামুটি কত খরচ হতে পারে, তা জানতে চান। সেই তালিকা মিলিয়ে জিনিসপত্র একেবারেই কিনে ফেলুন। এতে ক্যারিইং চার্জ অনেক কম হবে। 

কম দামে কোথায় কী কী
• অনলাইন ঘেঁটে নানা জিনিসপত্র কেনা আমাদের কাছে এখন জলভাত। তবু শহর কলকাতার কিছু ঠেক জানা থাকলে অনলাইনের চেয়েও সস্তা দরে সেখানে বাড়ির অন্দরসজ্জার জিনিসপত্র পাবেন। মানও যথেষ্ট ভালো। কলকাতা ও তার আশপাশের শহরতলিতে বাড়ি বা ফ্ল্যাট নিলে ভরসা করুন সেসব মার্কেটে। যেমন, ঘরের অন্দরসাজে ব্যবহৃত নানা ধরনের হার্ডওয়্যার সামগ্রী, ড্রয়ারের চ্যানেল, সিন্থেটিক ফ্লোরিং, আর্টিফিশিয়াল গ্রাস, সুসজ্জিত ওয়াল প্যানেল, নানা ওয়ালপেপার, ঘরে পাতার কার্পেট, পরদা ক্যাবিনেটের ট্রে সবই পাবেন চাঁদনি চক ও তার আশপাশের বাজার থেকে। দরদাম করে কিনতে হবে ঠিকই, তবে একসঙ্গে অনেক কিছু কিনলে দামের উপর কিছুটা ছাড়ও পাবেন।
• আলো ও ঘরের ফুলদানি সহ নানা নান্দনিক জিনিসপত্রের জন্য কলকাতার সেরা ঠাঁই এজরা স্ট্রিট। গলির মুখ থেকেই সেখানে শুরু হচ্ছে সারবদ্ধ দোকান। পাইকারি দামে জিনিসপত্র পাবেন এখানে।
• মেঝের মার্বেল কেনা একটু ঝক্কির। অনেকেই এত ঝক্কি পোহাতে চান না। তাই মিস্ত্রি বা কন্ট্রাক্টরের হাতেই দায়ভার ন্যস্ত করেন। তবে বাজেট ঠিক রাখতে চাইলে নিজেই এই দায়িত্ব নিন। বাইপাসের ধারে বা তপসিয়ার নানা অঞ্চলে এর দোকান পাবেন। ঘরের মাপ নিয়ে দোকানে গিয়ে মার্বেল পছন্দ করুন। তারপর তাই ভেনস মিলিয়ে নিন। পাশাপাশি মার্বেল ফেলে মোম রং দিয়ে ভেনসে নম্বর লিখে তবে তা বাড়িতে আনবেন। তাহলে মার্বেল কাটার সময় অকারণে সময় নষ্ট হবে না। নম্বর ধরে ধরে মার্বেলের নকশা মিলিয়ে ফেলতে পারবেন সহজেই। 
• প্লাইউডের কাজের জন্য পাড়ার দোকান বা কারিগরকে ভরসা করতে পারেন। তবে নিজে প্লাই চিনলে ঠকার শঙ্কা কম। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ অঞ্চলে প্লাইয়ের অনেক ভালো ভালো দোকান আছে। প্লাই কিনতে সেখানেও ঢুঁ মারতে পারেন।
• ধারণা রাখুন লেবার খরচের। বাড়ির মার্বেলের কাজ করলে তা মোট উপকরণের দামের ৩০ শতাংশ হয়। কাঠের কাজের ক্ষেত্রে লেবার খরচ হয় মূল উপকরণের ৪০-৪৫ শতাংশ। রঙের কাজে আবার উপকরণের চেয়ে লেবার খরচ বেশি লাগে।
• পুরনো কাঠ ভালো না থাকলে তা দিয়ে নতুন ফার্নিচার বানাতে যাবেন না। তাতে কারিগরি খরচ অনেক বেশি হয়। অনেকটা কাঠ বাদও যায়। ফলে পরতায় পোষায় না। 
   এই বিষয়গুলি ছাড়াও অন্দরসজ্জার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চললে ঘরের অন্দরসাজে পূর্ণতা আসে।

ঘরে থাকুক কাঠের আসবাব
ইদানীং ঘরের অন্দরসাজে আধুনিক নানা উপকরণের সোফা, খাট, ডাইনিং টেবিল চোখে পড়লেও কাঠের আসবাবের কদর সবসময় আলাদা। সেগুন বা শালকাঠের আসবাব পকেটের চাপে কিনতে না পারলেও ভরসা রাখুন অন্য কাঠে। তবে পুরনো দিনের আসবাব সংগ্রহে থাকলে তো কথাই নেই! ভালো করে পালিশ ও রং করে ঘরে রাখলে ঘরের আভিজাত্যে আলাদা মাত্রা যোগ হয়। তবে ইঞ্জিনিয়ারিং উডের আসবাব এড়িয়ে চলুন। কাঠের আসবাবের ক্ষেত্রে বাজেট ছাড়িয়ে গেলে ভরসা করুন বেতের বা বাঁশের তৈরি নানা আধুনিক নকশার আসবাবের উপর।

আলো ও পরদার মিশেল
ঘরের দেওয়ালের রং বাছাইয়ের পর আলো ও পরদার জন্য ভাবুন। দেওয়ালের রঙের সঙ্গে খাপ খাইয়ে পরদা ও আলো কিনুন। ঘরে খুব চড়া কোনও আলো লাগাবেন না। বরং আলোর উৎস লুকিয়ে রেখে আলো জ্বালান ঘরে। চোখের আরাম হবে এমন ভোল্ট বাছুন। পরদা ভারী ও হালকা রঙের হলে ঘরকে স্নিগ্ধ ও ছিমছাম লাগে। 

রঙিন আয়নায় বাহার
ঘরের নানা কোণে বিভিন্ন আকৃতির আয়নার ব্যবহার করলে ঘরের সাধারণ সাজও একেবারে অন্যরকম লাগবে। ভালো কাচের রকমারি ছোট-বড় আয়নায় ঘর সাজালে খরচও অনেক কম পড়বে।  

দেওয়াল জুড়ে ছবি
নিজেদের ব্যক্তিগত ঘরে মিশিয়ে নিন প্রকৃতিকে। ঘরের দেওয়ালে নানা টেক্সচারে রং করানো যায়। খরচ সাধ্যের মধ্যেই থাকে। দেওয়ালে ওয়ালপেপার ব্যবহার করতে চান না অনেকে। সেক্ষেত্রে নিজেদের বিভিন্ন মুহূর্ত বা ব্যক্তিগত ছবি কিংবা পছন্দের ফোটোগ্রাফে ভরসা রাখুন। তা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন দেওয়াল। এতে আপনার রুচি ও আভিজাত্যের ছোঁয়াচ পৌঁছে যাবে অতিথির মননে।
 
16Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মেয়াদি সঞ্চয় বা পৈতৃক সম্পত্তি সূত্রে ধনাগম যোগ দেখা যায়। কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও আর্থিক দিক...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.০৯ টাকা৮৪.৮৩ টাকা
পাউন্ড১০৯.৪৭ টাকা১১৩.০৪ টাকা
ইউরো৯১.০৬ টাকা৯৪.২৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা