অমৃতকথা

ঈশ্বর

ধৈর্য ধরে সাধন করতে থাক—যথাসময়ে তাঁর কৃপা তোর উপর হবেই। কোন ধনী লোকের কাছে যেতে হলে যেমন সিপাই সান্ত্রীর অনেক খোশামোদ করতে হয়, তেমন ঈশ্বরের কাছে যেতে হলে অনেক সাধনভজন ও সৎসঙ্গ করতে হয়। তাঁকে আপনার হতে আপনার জেনে তাঁর দর্শন পাবার জন্য, তাঁর কৃপা পাবার জন্য, সরল শিশুর মতো ব্যাকুল হয়ে কাঁদতে হয়। ছেলের কান্না শুনলে মা কি আর থাকতে পারেন?—তিনিও সেইরকম দৌড়ে আসেন, দেখা না দিয়ে থাকতে পারেন না। উঠে পড়ে লেগে বস্তু লাভ করে নে। মনটাকে ঠিক কম্পাসের কাঁটার মতো করতে হবে। জাহাজ যে দিকেই থাক না কেন, কম্পাসের কাঁটা উত্তর দিকেই থাকে। তাই জাহাজের দিক ভুল হয় না। মানুষের মন যদি ঈশ্বরের দিকে থাকে, তাহলে তারও আর কোন ভয় থাকে না। হাজার কুলোকের মধ্যে পড়লেও তার বিশ্বাসভক্তি কিছুতেই নষ্ট হয় না। ভগবৎকথা হলেই সে ঈশ্বরপ্রেমে উন্মত্ত হয়ে উঠে। কি রকম জানিস? যেমন চকমকি পাথর শত বৎসর জলের মধ্যে পড়ে থাকলেও তার আগুন নষ্ট হয় না—তুলে লোহায় ঘা মারা মাত্রই আগুন বেরোয়, সেই রকম তাঁকে লাভ করে যে ধন্য হয়েছে সে অন্য কিছুতেই মন দিতে পারে না, কেবল তাঁকে নিয়েই থাকে। ভগবৎকথা ও সাধুভক্তসঙ্গ ছাড়া তার কিছুই আর ভাল লাগে না। ঝড়ের এটো পাতার মতো পড়ে থাকে—নিজের কোন ইচ্ছা বা অভিমান থাকে না, বাতাস তাকে যে দিকে নিয়ে যায় সে দিকেই যায়। সে তখন সংসারেও থাকতে পারে, আবার সচ্চিদানন্দ-সাগরেও ডুবে যেতে পারে। তোদের মন এখনো বাসনাহীন, সরল, নির্মল। তোদের ঐ স্বভাবটা যাতে পাকা হয়ে যায় তার চেষ্টা কর। একবার অন্য রকম হয়ে গেলে আর উপায় নেই। বাসনাহীন মন কেমন জানিস? যেমন শুকনো দেশলাই—একবার ঘষলেই দপ করে জ্বলে ওঠে। কিন্তু ভিজে গেলে ঘষতে ঘষতে কাঠি ভেঙে গেলেও জ্বলে না। তেমনি মনে একবার অন্য রকম ছাপ পড়লে শত চেষ্টাতেও তা নষ্ট করা যায় না।
শ্রীশ্রীমহারাজ জনৈক ভক্তকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি এখন ধ্যান কিংবা prayer (প্রার্থনা) কর?”
ভক্ত—না মহারাজ, কিছুই করি না।
মহারাজ—একটু একটু করে করা ভাল। শান্তি পাবে, মন স্থির হবে। তোমাদের কুলগুরু তো আছেন? তুমি এখনো মন্ত্র নাওনি? মন্ত্র নিলে তো পার। একটু একটু জপ-ধ্যান করবে। একটা রুদ্রাক্ষের মালা কিনবে। তাতে ১০৮ বা ১০০০ বার জপ করবে। ইচ্ছা হলে আরও বেশি করতে পার।
ভক্ত—কি জপ করতে হবে?
মহারাজ—ভগবানের নাম জপ করবে—যে দেবতার উপর তোমার বেশি শ্রদ্ধা ও ভক্তি হয়। ভগবানকে ধ্যান করবে নিজের হৃদয়ে কিংবা বাহিরে।
ভক্ত—কোন একটা রূপ না হলে তো ধ্যান হবে না, তাহলে কি রূপ নিতে হবে?
মহারাজ—সদ্‌গুরু যাঁরা তাঁরা ধ্যানে শিষ্যের কার উপর শ্রদ্ধা বেশি তা জানতে পারেন ও তাই বলেন। তারপর মানসপূজা আছে। লোক যেমন বাহ্যিক পূজায় ফুলচন্দন দেয়, আরতি ইত্যাদি করে, সেইরূপ মানসপূজায় মনে মনে তাঁর রূপ চিন্তা করে ঐ সব করতে হয়।
আজ থেকেই লেগে যাও। সন্ধ্যাবেলা থেকে আরম্ভ করে দাও। এখন মানসপূজাটা থাক। জপ ও ধ্যান রোজ সকাল সন্ধ্যায় কর। এইরূপ বছর দুই কর দেখি। দেখবে কেমন আনন্দ পাবে, ভাব আসবে, আরও সব দেখতে পাবে। এর পর যা যা করতে হবে আমি বলে দেব তখন।
ভক্ত—তাহলে মানসপূজা এখন আর করব না?
মহারাজ—না, মানসপূজা এখন থাক। যখন করতে হবে আমি বলে দেব—যখন মন্ত্র-তন্ত্র নেবে। এখন আর মন্ত্র নিয়ে কাজ নেই। 
স্বামী ব্রহ্মানন্দের ‘ধর্মপ্রসঙ্গে স্বামী ব্রহ্মানন্দ’ থেকে
10Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

মরশুমি রোগের ভোগান্তিতে স্বাস্থ্যহানির যোগ প্রবল। কাজকর্মে কিছুটা আলস্য ভাব আসতে পারে। বিদ্যায় উন্নতির যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.৮৩ টাকা৮৫.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৬.১২ টাকা১০৯.৮৭ টাকা
ইউরো৮৭.৯০ টাকা৯১.২৭ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা