অমৃতকথা

‘সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম......’

‘সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম’। সত্য কী?—না, ঘটনাটা যা তার স্বীকৃত রূপটাকে বলে সত্য(Recognised status of veracity)। ইংরেজী veracity শব্দের আসল অর্থ হ’ল, বাস্তব ঘটনা। এখন জ্ঞানটা কী? দার্শনিক পরিভাষায় ‘জ্ঞান’ মানে পরাজ্ঞান, আত্মজ্ঞান। সাধারণ অর্থে জ্ঞান বলতে বোঝায় কর্মভাবের কর্ত্তৃভাবে রূপান্তরণ(Subjectivisation of external objectivity)। বাহ্যিক কর্মতত্ত্বকে যখন কর্ত্তৃকারকে রূপান্তরিত করা হয় তখন সেই রূপান্তরণকে বলা হয় জ্ঞানক্রিয়া। আত্মজ্ঞানের বেলায় বাহ্যিক বস্তু তো নেই। তাই সেক্ষেত্রে বাহ্যিক কর্মতত্ত্বের কর্ত্তৃকারকে রূপান্তরণের অবকাশ কোথায়?
আত্মার বাইরে তো কোনো বস্তু নেই। এখন যে বিষয়ী ভাবটা, যা বাহ্যিক কর্মতত্ত্বকে অভ্যন্তরীণ বিষয়ীভাবে রূপান্তরিত করার কাজে ব্যাপৃত রয়েছে—সেই কর্ত্তৃভাবটা যখন পরম বিষয়ীভাবে রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছে, তখনই আত্মজ্ঞান বা পরাজ্ঞান লাভ ঘটে। যখন তুমি কিছু দেখছো, তখন সেটা দেখছে কে?—না, তোমার অহংভাবটা, তোমার ‘আমি করছি’—ভাবটা অর্থাৎ তোমার বিশুদ্ধ ‘আমি’টা। তোমার দেখার বেলায় এই ‘আমি’-টাই হ’ল বিষয়ী। যেমন, তুমি একটা হাতী দেখছো। এখন, হাতীটা দেখছে কে? তোমার কর্তৃ ‘আমি’টা, তোমার শুদ্ধ ‘আমি’। যখন তুমি জানো যে তোমার কর্তৃ ‘আমি’টা একটা হাতী দেখছে, তখন তুমি জানো যে “হ্যাঁ, আমি হাতী দেখছি”। এখন তোমার মধ্যেকার এই যে দ্রষ্টা ‘তুমিটা’—যার জন্যে তুমি জানছো যে তুমি হাতী দেখছো—এই দ্রষ্টৃ তুমিকে যখন তুমি জেনে ফেলছো, তখনই বলবো—তোমার আত্মজ্ঞান হয়েছে। এটাই হ’ল জ্ঞান। ‘সত্যং জ্ঞানমনন্তং ব্রহ্ম’। সত্য সম্বন্ধে আগেই কিছু বলেছি। এখন আধ্যাত্মিক পরিভাষায় সত্যের সংজ্ঞা হ’ল ‘পরহিতার্থং বাঙ্‌মনসো যথার্থত্বং সত্যম্‌।’ যখন তুমি অপরের হিতের জন্যে কিছু কর, সেই সময়কার তোমার যে কর্মৈষণা বা কর্মৈষণাপ্রেষিত মানস প্রক্ষেপ(Motive or Motivated psychic projection) সেটাকে বলা হয় সত্য। কিন্তু এটা তো দর্শনের ভাষা। বৈবহারিক জীবনে পঞ্চভূতের জগতে সত্য হ’ল বাস্তব তথ্য বা ঘটনার স্বীকৃত রূপ। জ্ঞানমার্গীর কাছে সত্য বলতে এটাই বোঝায়।
‘অন্ত’ মানে প্রান্ত, শেষ বিন্দু(The extremity, the culminating point)। ‘অনন্ত’ মানে যার কোন প্রান্তবিন্দু নেই, যার কোনো শেষ সীমানা নেই। এখন, পরমপুরুষের ক্ষেত্রে ‘অনন্ত’ শব্দের ব্যবহার হ’ল কেন? যদি বলি, ‘এক’, সেটা হ’ল একটা বিশেষ মানস-প্রক্ষের; যদি বলি ‘দুই’, সেটাও একটা মানস-প্রক্ষেপ। আর এই জাতীয় সমস্ত মানস-প্রক্ষেপগুলো হ’ল বাহ্য-অভ্যন্তরীণ(Extro-internal), শুধু বাহ্যিকও নয়, শুধু অভ্যন্তরীণও নয়। অর্থাৎ যার উৎসটা রইলো বাহ্যিক জগতে আর শেষ বিন্দুটা রইল অন্তর্জগতে। ‘অন্তম’ একটা বিশেষ মানস প্রক্ষেপ, অনন্তম্‌-ও তাই। তাহলে পরমপুরুষের বেলায় অনন্ত বলবো কেন? একবার বলছি, তিনি এক, অর্থাৎ একক সত্তা, আবার বলছি তিনি অনন্ত অর্থাৎ Infinite বা অসীম সত্তা।
শ্রীশ্রী আনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্‌’(১৪, ১৫, ১৬ খণ্ড) থেকে
11Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা