জলের সঙ্গে প্রাণের খেলায় মেতেছেন কখনও? সার্ফিং তেমনই এক ক্রীড়া। ইদানীং মেয়েরাও এই খেলায় মগ্ন হয়ে উঠছেন। নেশার পাশাপাশি একে পেশাও করে নিচ্ছেন। খবরে কমলিনী চক্রবর্তী
নতুন করে পাওয়ার আশা
সার্ফিং— ঢেউয়ের তালে, সমুদ্রের ছন্দে নিজের শরীরটাকে আন্দোলিত করা। ব্যাখ্যাটা হয়তো একটু অতিকাব্যিক হয়ে গেল। কিন্তু যাঁরা সার্ফিংয়ের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা এমনটাই মনে করেন। জলের প্রতি টান আর প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার পাশাপাশি একটা অসম্ভব উন্মাদনা চাই শরীরে ও মনে। মাত্র বছর ছয়েক আগে এমনই এক উন্মাদনার টানে নিজেকে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন সৃষ্টি সেলভাম। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বলতে কোনও এক অজানার ডাক যেন বারবার ঘুরেফিরে আসছিল মনে। সেই সমুদ্র, সেই সৈকত সবই অচেনা। তবু প্রকৃতির প্রবল টান, যা এড়ানো বড়ই দায়। যাই হোক, সৃষ্টির কথায় ফেরা যাক, মহাবলীপুরমের সমুদ্রতট। একা একটি তরুণী সমুদ্র আলাপে মগ্ন। জল আর ঢেউয়ের উন্মাদনা তাঁর চেনা। সত্যি বলতে কী, ভীষণ প্রিয়ও বটে। বারবার নতুন করে পাওয়ার জন্য মন ব্যাকুল হয় তার। সেই ব্যাকুলতা নিয়েই সৃষ্টি সেবার জলে নেমেছিলেন। সঙ্গী একটা সাফিং বোর্ড। সেই বোর্ড পায়ে বেঁধে বিশাল বিশাল ঢেউয়ের সঙ্গে ভেসে যেতে চাইছিল তাঁর মন। এদিকে সূর্যদেব মধ্যগগনে অবিরাম অগ্নিবর্ষণ করে চলেছেন। সৃষ্টির পিঠে স্ফুলিঙ্গের মতো বিঁধছে সেই অগ্নিবাণ। একইসঙ্গে মুখ ভিজে যাচ্ছে ঠান্ডা জলের পরশে। অসম্ভব এক বৈপরীত্য। তবু সেটাই যেন প্রকৃতির চার্ম। সৃষ্টি একের পর এক ঢেউ টপকে চলেছেন। হঠাৎ চোখের সামনে কেমন যেন অন্ধকার নেমে এল। তলিয়ে গেলেন তিনি পাঁচতলা সমান ঢেউয়ের তলায়। ডুবে যাবেন নাকি? রক্ষা হবে না আর এযাত্রা? কিন্তু জল যে কাউকে নেয় না, সব ফিরিয়ে দিয়ে যায়। সৃষ্টিরও তেমনটাই হয়েছিল। ঢেউ নিজের নিয়মে উঠল আবার নেমেও গেল। তীরে পড়ে রইলেন সৃষ্টি সেলভাম। গল্প শুনতে শুনতে রীতিমতো রোমাঞ্চ হচ্ছিল। সৃষ্টির চোখে তখন এক অদ্ভুত উন্মাদনা আর গলায় উল্লাসের রেশ। বললেন, ‘অ্যাকুয়ারিয়ামের মাছের মতো লাগছিল। পায়ে সার্ফিং বোর্ডের বেড়ি না থাকলে অতলে ডুব দিয়ে মাছদের সঙ্গে আলাপটা আরও ভালো করেই জমত বোধহয়। অথবা তলিয়ে যেতাম অতল জলের আহ্বানে। তবে তেমন অতিনাটকীয় কিছুই ঘটেনি। বরং ঢেউ সরে যেতে নিজেকে আবারও চরের উপর পেলাম। গোটা ঘটনাটা ঘটেছিল মাত্র পনেরো সেকেন্ডের মধ্যে। তবু সেই রোমাঞ্চের রেশ আজও অনুভব করি শরীরে ও মনে। ঘটনাটা শুনে আমার এক বন্ধু বলেছিল এই পরিস্থিতিতে সে পড়লে মাছ বা অ্যাকুয়ারিয়ামের কথা মনে হতো না, বরং চলন্ত ওয়াশিং মেশিনের ঘূর্ণির ভিতর কাপড়ের কথা মনে হতো। এটাই দৃষ্টিভঙ্গি। কে কেমনভাবে দেখছে। প্রকৃতি প্রেম, জলের প্রতি টান ইত্যাদি এই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যেই ধরা থাকে।’ এমন ঘটনার পরে হয়তো অনেকেই জলে নামতে ভয় পাবেন। সৃষ্টির তেমন কিছুই হয়নি। বললেন, ‘আবারও জলে নামতে উদ্যোগী হয়েছিলাম মাসখানেকের মধ্যেই। মনে মনে নিজেকে বুঝিয়েছিলাম, সার্ফার আমায় হতেই হবে। আমার অল্প বয়সে অবশ্য এই ক্রীড়া আমাদের দেশে স্বপ্নের মতো ছিল। কেউ সার্ফিং শব্দটার সঙ্গেই প্রায় পরিচিত ছিলেন না। সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ তো দূর অস্ত।’ সৃষ্টির স্বপ্ন কিন্তু অধরা থাকেনি। এক গ্রীষ্মাবকাশে চেন্নাই বেড়াতে এসে সার্ফিং বিষয়ে একটি বিজ্ঞাপন চোখে পড়ে তাঁর। কোভালাম বিচে ‘সার্ফ অ্যান্ড টার্ফ’ নামে একটি স্কুল রয়েছে যেখানে শেখর পিচাই সার্ফিংয়ের প্রশিক্ষণ দেন। তিনি নিজে সার্ফিং শিখেছেন মার্কিন দেশের ক্যালিফোর্নিয়ায়। বললেন, ‘নিজের দেশে এসে এই ক্রীড়া অভ্যাস করা এবং সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুভূতিই আলাদা।’ আমেরিকা থেকে ফেরার পর দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন সমুদ্রসৈকতে ঘুরে তার পটভূমি খুঁটিয়ে দেখেছেন শেখর। কোভালাম বিচে এসে প্রথম মনে হয়েছিল সেখানকার সমুদ্রে সার্ফিং সম্ভব। শেখর বললেন, সার্ফিংয়ের জন্য একটু পাহাড়ি অঞ্চল লাগোয়া সৈকত প্রয়োজন। আমাদের দেশে এমন অনেক সৈকত রয়েছে যেখানে সার্ফিং সম্ভব। ভারকালা, কোভালাম ইত্যাদি সেই ধরনের বিচেরই অন্যতম। তাছাড়াও গোয়া ও ওড়িশার সৈকতেও সার্ফিং করা যায়।
শান্তির খোঁজে জলের টানে
সমুদ্র ঘিরে শেখর পিচাই বা সৃষ্টির যতই উন্মাদনা থাকুক না কেন, ভারতের প্রথম সার্ফিং বিচটি কিন্তু আবিষ্কার করেন এক আমেরিকান, জ্যাক হেনবার। আমাদের দেশে তিনি ‘সার্ফিং স্বামী’ নামেই পরিচিত। ভারতে এসেছিলেন মনের শান্তির খোঁজে। কর্ণাটকের সমুদ্রের ধারে বেড়াতে বেড়াতেই একদিন মনে হল এমন সৈকতে সার্ফিংয়ের আয়োজন করলে কেমন হয়? শুরু হল মন্ত্র সার্ফিং ক্লাব। ২০০০ সালে যখন এই ক্লাবটি চালু হয়, তখন ভারতীয়দের মধ্যে এই ক্রীড়া বিষয়ে ধারণা একেবারেই ছিল না। ছাত্র হিসেবে তিনি কয়েকজন জেলেকে পেয়েছিলেন প্রথম দিকে। ক্রমশ কিছু পর্যটক বিদেশি এই ক্রীড়া বিষয়ে আগ্রহী হয়ে তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নিতে আসে। ভারতে সার্ফিংয়ের সেই শুরু।
ঢেউয়ের তালে তালে
তবে মহিলাদের সার্ফিংয়ের কথা যদি বলেন তাহলে তার জনপ্রিয়তার সম্পূর্ণ কৃতিত্ব বর্তায় ঈশিতা মালব্যের উপর। সার্ফিংয়ের জগতে তিনিই প্রথম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলা যিনি খেলাটাকে মেয়েদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে উদ্যত হন। জার্মানিতে পাঠরত ছিলেন ঈশিতা, যখন সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে তাল দেওয়ার নেশা তাঁকে পেয়ে বসে। মালব্যর জার্মানি যাত্রা থেকে সার্ফিং শেখা সবই একটা স্বপ্নের মতো। নিজের কলেজ থেকে ‘স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম’-এ সুদূর জার্মানি পাড়ি জমালেন ঈশিতা। তাঁর আগে বিদেশ তো কোন ছাড়, নিজের দেশেও বিশেষ কোথাও যাওয়া হয়নি তাঁর। ভ্রমণের বিশেষ নেশাও ছিল না কোনওদিন। কিন্তু জার্মানি গিয়ে দেশটাকে ভালো লেগে যায় ঈশিতার। একা একাই ঘুরতে শুরু করেন তিনি। একা পর্যটক, তাও মহিলা, অনেকেই সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছিল। এমনই একটা গ্রুপের সঙ্গে আলাপ হয় যাঁরা জার্মানির এক সমুদ্রতটে সার্ফ করতে এসেছিলেন। ঢেউয়ের তালে তাল মিলিয়ে তা টপকে অন্য ঢেউয়ের প্রতীক্ষা— দূর থেকে দেখে খেলা সম্পর্কে এমন ধারণাই হয়েছিল ঈশিতার। তারপর নিজেও পায়ে সার্ফ বোর্ডের বেড়ি পড়ে নেমে পড়লেন জলে। প্রথম ঢেউয়ের মোকাবিলা করার পরেই সমুদ্রের প্রেমে পড়েন তিনি। বললেন, ‘এত রোমাঞ্চ আগে কখনও হয়নি। সারা শরীর জুড়ে এক অজানা হিল্লোল উঠেছিল। নীল জলের রাশির মাঝে সাদা ফেনিল ঢেউ দেখে মনে হয়েছিল এটাই আমার ভবিতব্য। সার্ফিংয়ের প্রতি সেই প্রথম আগ্রহ জাগল মনে। প্রশিক্ষণ নিলাম। আমার সঙ্গী হলেন তুষার পাথিয়াঁ। আমার সঙ্গে সেও গিয়েছিল জার্মানি, স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে। দেশে ফিরে এই রোমাঞ্চের ছোঁয়া অন্যের মনেও ছড়াতে ইচ্ছে হলে তুষারই আবারও আমার সঙ্গী হন। তাঁর সঙ্গেই মিলিতভাবে সাকা সার্ফ ক্লাব চালু করি আমি। ‘তখন আমরা দু’জনেই মণিপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র’, বললেন ঈশিতা। ‘যখনই ঢেউয়ের সঙ্গে মোলাকাত হতো, মুখে একটা হাসি ছড়িয়ে পড়ত। ভীষণ ভালোলাগায় ভরে উঠত মন প্রাণ। সেই ভালোলাগা নিয়ে কাজে নেমেছিলাম বলেই বোধহয়, অন্যের মধ্যেও তা ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলাম অনায়াসে।’ ছাত্রজীবনের স্বপ্ন বুনতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছিল ঈশিতাদের। প্রথম দিকে তুষার আর তাঁর আলাদা সার্ফিং বোর্ডও ছিল না। একটা দিয়েই কাজ চালাতেন দু’জনে। অনেক পরে পর্যটকদের ভাঙা সার্ফিং বোর্ড মেরামত করে দুটো বানানো হয়েছিল। সার্ফিং খেলাটা যেহেতু আমাদের দেশে আদৌ পরিচিত ক্রীড়া ছিল না, সেহেতু বাবা মা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ‘নেশার সঙ্গে পাল্লা দিতে চাইছ দাও, তাই বলে তার খরচ আমরা বহন করতে পারব না।’ অগত্যা নেশাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকেই পেশা করার কথা ভাবলেন ঈশিতা। শুরু হল ছাত্রছাত্রীর খোঁজ। ঈশিতা বললেন, ‘অবাক কাণ্ড আমার কাছে সার্ফিং শেখার জন্য মেয়েরাই বেশি আগ্রহী হয়ে উঠল। তাদের নিয়ে তাই প্রশিক্ষণের অ্যাকাডেমি খুলে বসলাম। সেই সময় বাস্তব কিছু সমস্যার মুখোমুখি হই। প্রথমত শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই পর্যটক। ফলে তাদের শুধু প্রশিক্ষণ দিলেই চলবে না, একইসঙ্গে সার্ফিং বোর্ড ও থাকার ব্যবস্থাও করতে হবে। সাকা সার্ফ ক্লাবে চারটে সার্ফিং বোর্ড আর একটা দশ বেডের ডর্মেটরি দিয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করেছিলাম। ক্রমশ ছাত্রীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করল। এখন তো ছাত্রীদের সঙ্গে ছাত্রও রয়েছে।’
প্রয়োজন এবং ভালোবাসা
ঈশিতা দেখেছেন আঞ্চলিক লোকজনের মধ্যে মূলত জেলে ঘরের মেয়েরাই এই ক্রীড়া শিখতে আগ্রহী হয়েছে। জেলেদের তো জলের সঙ্গে নিত্য যোগাযোগ। সকাল সন্ধে সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গেই তাদের ওঠাবসা। উত্তাল ঢেউ দেখেও মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে দিব্যি জলে বেরিয়ে পড়ে তারা। কিন্তু জলের সঙ্গে তাদের এই সম্পর্ক শুধুমাত্র প্রয়োজনের। জেলেবাড়ির মেয়েরাই প্রথম জলের সঙ্গে সই পাতিয়েছে ঈশিতার সাকা সার্ফিং ক্লাবের হাত ধরে। জেলেবাড়িতে এখনও অনেকেই বিশ্বাস করে মেয়েরা নাকি অপয়া। জালে তাদের হাত দেওয়া তাই মানা। অথচ মাছ ধরে আনার পর তার ঊনকোটি চৌষট্টি কাজের দায়ভার পড়ে মেয়েদেরই উপর। জলের উন্মুক্ত আহ্বানে তাদের অধিকার নেই, বরং সারাদিন কাটে পরিচর্যার কাজে। এমন জীবনের ফাঁকে সার্ফিং যেন একরাশ খোলা হাওয়ার মতো। সেই টান উপেক্ষা করতে পারেনি তারা। তাই তো জেলেকন্যাদের আগ্রহ প্রবল হয়ে ওঠে। কিন্তু তাদের প্রশিক্ষণ দিলে তো ক্রীড়া হিসেবে সার্ফিংকে জনপ্রিয় করা যাবে না। তার জন্য চাই শহুরে খেলোয়াড়, যারা খেলাটা আয়ত্তে এনে প্রতিযোগিতায় নাম লেখাবে। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের মুখ হয়ে উঠবে। সেই আশায় আবাসিক ছাত্রীদের সার্ফিং শেখান ঈশিতা। তাই বলে বাচ্চাদের বা জেলেঘরের মেয়েদের থেকেও তিনি মুখ ফেরাননি। তাদের মধ্যেও প্রতিভা দেখলে তা লালন করার চেষ্টা করেন। আর এই কাজটা করতে করতেই ফোর্বস আন্ডার থার্টি-র এশিয়া লিস্টে নাম তুলে ফেলেছেন তিনি। বললেন, ‘তাজ্জব ব্যাপার। আমি সাদামাঠা গ্রাম্য জীবনযাপন করি। গ্রামের বাচ্চাদের খেলা শেখাই। জলই আমার অবসরের সঙ্গী আবার সে-ই ব্যস্ততার সাহারা। এমন কাউকে খুঁজে পেতে ফোর্বসের মতো পত্রিকা যে তাদের শীর্ষ তালিকায় নাম ছাপাবে তা বিশ্বাসই হতে চায় না।’
দেশে বিদেশে
সার্ফিং ঈশিতার নেশা। সমুদ্রের সঙ্গে চ্যালেঞ্জের খেলাটাকে পেশা করবেন তা কিন্তু কখনও ভাবেননি। বরং জলের কাছে আত্মসমর্পণেই তাঁর তৃপ্তি। সমুদ্রের সঙ্গে রীতিমতো কথা বলেন তিনি। ঢেউয়ে ওঠানামার রুটিনও তাঁর মুখস্থ। এমন চরিত্র সার্ফিংয়ের জগতে নাকি বিরল, জানালেন লরেন হিল। জার্মান দেশে তিনি ছিলেন ঈশিতার সার্ফিং সঙ্গী। বললেন, ‘সারা পৃথিবীতেই সার্ফিংয়ে মহিলাদের অস্তিত্ব কম। সার্ফিং পপুলেশনের মাত্র তিরিশ শতাংশ মহিলা। এবং এই মহিলাদের মধ্যে আবার তারতম্য রয়েছে। কেউ মানসিকভাবে ক্রীড়াপ্রেমী, কেউ বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভালোবাসেন, কারও হয়তো সমুদ্রের প্রতি অসম্ভব টান, কেউ আবার ‘লাইফ থ্রিল’-কেই জীবনের অঙ্গ করে নিয়েছেন। এঁদের সকলের চেয়ে আলাদা মেজাজে এই খেলাটাকে আয়ত্তে এনেছেন ঈশিতা। সার্ফিং তাঁর প্যাশন। সমুদ্রের সঙ্গে তাঁর ভালোবাসার যোগাযোগ। একে যেন অন্যের পরিপূরক।’ ঈশিতাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দেশে বিদেশে মহিলা সার্ফার হাতে গোনা। তাই সবার সঙ্গে একটা সখ্য তৈরি হয়ে গিয়েছে। সার্ফিংয়ের নেশা একটা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তবে সেই নেশা কাকে কখন, কীভাবে এবং কেন পেয়ে বসবে তা বলা কঠিন। সেটা পুরোপুরি নির্ভর করে নারী চরিত্রটির ওপর। তবে টান যেমনই হোক না কেন, সমুদ্রের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে সার্ফিং অসম্ভব। মেয়েরা স্বতঃস্ফূর্ত হলেও প্রকৃতির সঙ্গে খেলায় মাততে তাদের অনেক বাধা। সঠিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আর মনোভাবের প্রয়োজন। পাশাপাশি দরকার অদম্য ইচ্ছা আর ভীষণ সাহস। ব্যস, সমুদ্রকে নতুন করে পাওয়ার জন্য আর কী-ই বা চাই!